বৃহস্পতিবার, ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০
The Daily Ittefaq

আওয়ামী লীগ নেতার ছেলে ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় সভাপতি

আপডেট : ১৮ এপ্রিল ২০২২, ১১:৩৩

গতকাল রবিবার (১৭ এপ্রিল) বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী স্বাক্ষরিত সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে ঘোষণা করা হয়েছে কেন্দ্রীয় ছাত্রদলের আংশিক কমিটি। সেখানে সভাপতি হয়েছেন কাজী রওনাকুল ইসলাম শ্রাবণ। খোঁজ নিয়ে জানা যায়, তিনি যশোরের কেশবপুর উপজেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি এবং উপজেলা চেয়ারম্যান কাজী রফিকুল ইসলামের ছেলে। এছাড়া শ্রাবণের আপন ৩ ভাইও আওয়ামী রাজনীতির সঙ্গে জড়িত। এতে কমিটি ঘোষণার পর সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে নানাভাবে আলোচিত হচ্ছে শ্রাবণের সভাপতি হওয়ার বিষয়টি।

এর আগে ২০১৯ সালের ১৪ সেপ্টেম্বরে ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় কমিটির সম্মেলনে সভাপতি প্রার্থী ছিলেন কাজী রওনাকুল ইসলাম শ্রাবণ। সেই সময় আওয়ামী লীগ নেতার ছেলে ছাত্রদলের সভাপতি প্রার্থী হওয়া নিয়ে ব্যাপক আলোচনা হয়। ঐ সম্মেলনে ভোটে হেরে তিনি সিনিয়র সহসভাপতি মনোনীত হন।

স্থানীয় সূত্র জানায়, রফিকুল ইসলামের বড় ছেলে কাজী মুস্তাফিজুর রহমান উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক।  মেজ ছেলে কাজী মুজাহিদুল ইসলাম পান্না উপজেলা যুবলীগের সাবেক আহ্বায়ক। সেজো ছেলে কাজী আজাহারুল ইসলাম মানিক উপজেলা ছাত্রলীগের আহ্বায়ক। আর রফিকুল ইসলামের ছোট ছেলে রওনাকুল ইসলাম শ্রাবণ। কেশবপুরে কাজী পরিবারের প্রায় সবাই আওয়ামী লীগের সঙ্গে যুক্ত থাকলেও কাজী রওনাকুল ইসলাম শ্রাবণ ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় সভাপতি হওয়ায় সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে আলোচনা চলছে।

কাজী রওনাকুল ইসলাম শ্রাবণের বড় ভাই মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, ‘শ্রাবণ ছাত্রদলের নেতা হওয়ায় আমার বাবা কাজী রফিকুল ইসলাম সর্বশেষ উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পাননি। স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে বিজয়ী হয়েছেন।’ তিনি বলেন, ‘আমরা পাঁচ ভাই ও এক বোন। সবার ছোট শ্রাবণ। মেধাবী ছাত্র। ছাত্রজীবন থেকে ছাত্রদলের রাজনীতিতে জড়িত। রাজনীতির কারণে ১৫ বছর ধরে পরিবারের সঙ্গে তার কোনো সম্পর্ক নেই। উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে এলাকায় এসেছিল ধানের শীষের প্রার্থীর পক্ষে ভোট করতে। কিন্তু বাড়িতেও আসেনি।’

এ বিষয়ে কেশবপুর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক গাজী গোলাম মোস্তফা বলেন, মুখোশের আড়ালে নিজেকে বেশিক্ষণ লুকানো যায় না। কাজী রফিকুল ইসলাম দলের নেত্রী ও প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশ অমান্য করে আনারস মার্কা নিয়ে নির্বাচন করেছেন। তার সঙ্গে শ্রাবণও ছিল। জামায়াত ও বিএনপি সরাসরি শ্রাবণের নেতৃত্বে তার বাবার ভোট করেছেন।

কেশবপুর উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মাস্টার রুহুল আমিন বলেন, ‘রাজনীতি করার অধিকার সবার আছে। পরিবারের সবাই আওয়ামী লীগের রাজনীতি করলেও শ্রাবণ ছাত্রকাল থেকেই বিএনপির রাজনীতির সঙ্গে সম্পৃক্ত। এতে দোষের কিছু নেই। শ্রাবণ ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি নির্বাচিত হয়েছে, এটাকে ইতিবাচক হিসেবেই দেখছি। এ বিষয়টি নিয়ে আমাদের দলে কোনো প্রতিক্রিয়া আছে বলে মনে হয় না।’ 

ইত্তেফাক/ইআ