এক সময় চলচ্চিত্র পর্দা দাপিয়ে বেড়িয়েছেন জনপ্রিয় অভিনেত্রী রোজিনা। অভিনয়ের সাফল্য ধরে রেখেছেন নির্মাণেও। নাটকের পর সম্প্রতি নির্মাণ করলেন ‘ফিরে দেখা’শিরোনামের একটি সিনেমা। পাশাপাশি চলচ্চিত্র সেন্সর বোর্ডে সদস্য হিসেবে যুক্ত হলেন তিনি। নিজের অভিনয়, নির্মাণ ভাবনা, সেন্সর বোর্ডসহ ইন্ডাস্ট্রির নানা বিষয় নিয়ে তিনি কথা বললেন ইত্তেফাকের সঙ্গে। সাক্ষাৎকার নিয়েছেন এ এম রুবেল
অভিনন্দন, চলচ্চিত্র সেন্সর বোর্ডে সদস্য হিসেবে যুক্ত হলেন। নতুন দায়িত্ব নিয়ে বিশেষ কোনো পরিকল্পনা আছে কি-না?
অবশ্যই অনেক বড় একটি দায়িত্ব কাঁধে নিচ্ছি। একটি সিনেমাতে আমাদের দেশের কথা, সামাজের কথা, মানুষের জীবনের কথা আছে কি-না। বিনোদন আছে কি-না। পাশাপাশি রাষ্ট্র বিরোধী কোনো কিছু আছে কি-না!—এমন বিষয়গুলো সিনেমাটি দেখার পর বিচার করা নিঃসন্দেহে বড় দায়িত্ব। তবে নিজের ওপর অর্পিত দায়িত্ব যথাযথভাবে পালনের চেষ্টা অবশ্যই থাকবে।
এর বাইরের ঈদের কাজের ব্যস্ততা নিয়ে জানতে চাই
— আসছে ঈদে চ্যানেল আই, যমুনা টিভি, সময় টিভি, মাছরাঙা টিভিসহ বেশ কয়েকটি টিভি চ্যানেলের প্রোগ্রামে অংশ নিচ্ছি।
আপনার নির্মিত ‘ফিরে দেখা’ চলচ্চিত্রটির বর্তমান অবস্থা কী? কবে নাগাদ পর্দায় আসবে?
সিনেমাটির কাজ শেষ করে এরইমধ্যে মন্ত্রণালয়ে জমা দিয়েছি। তারা দেখার পর সেন্সরে জমা দেবো। সিনেমাটির মুক্তিযুদ্ধের একটি গল্পে যেহেতু নির্মাণ করেছি সেহেতু ঈদের মতো উত্সবে মুক্তি না দিয়ে ২১ ফেব্রুয়ারি, ২৬ মার্চ বা ১৬ ডিসেম্বরের মতো বিশেষ দিনে মুক্তির চিন্তা করছি।
সরকারি অনুদানের চলচ্চিত্রগুলোর বেশিরভাগই দায়সারাভাবে নির্মাণের চর্চা রয়েছে। সেই জায়গায় ‘ফিরে দেখা’ নিয়ে কী বলবেন?
দেখুন, হয়তো কয়েক বছর আগে এ ধরনের কিছু কাজ হতো। তবে এখন সবাই ভালোভাবে অনুদানের সিনেমাগুলো নির্মাণ করছেন। বিশেষ করে এফডিসির মানুষরা ঠিকঠাকভাবেই নির্মাণ করছেন। সরকার কিছু সহযোগিতা করছেন, বাকি টাকা নিজেরা দিয়ে সুন্দরভাবে গল্পটি তুলে ধরছেন। আমিও অনুদানের বাইরে নিজের টাকায় গল্পের প্রয়োজনে যতটা করা দরকার ততটা করার চেষ্টা করেছি।
নাটকের পর সিনেমা পরিচালনায় এলেন। এখন থেকে নিয়মিত নির্মাতা রোজিনার দেখা মিলবে কি-না?
আমি নিজে যে গল্প তৈরি করছি সেখানে বা অন্যদের সিনেমাতেও কেন্দ্রীয় চরিত্র পেলে অভিনয় করব। তবে আমার খুবই ইচ্ছে ক্যামেরার পেছনে কাজ করার। আমি চলচ্চিত্রের মানুষ, অন্য কিছু তো বুঝি না। এরইমধ্যে আরও একটি সিনেমার গল্প লেখা শুরু হয়েছে। সবকিছু ঠিক থাকলে চলতি বছরের শেষদিকে শুটিং করব। যতদিন বেঁচে আছি চলচ্চিত্রের সঙ্গেই থাকতে চাই।
সিনিয়ররা বরাবরই অভিযোগ করেন তাদের অবমূল্যায়ন করা হয়। বিষয়টি নিয়ে কী মন্তব্য করবেন?
এখন যে পরিস্থিতি বিরাজ করছে সেই জায়গায় বিষয়টি নিয়ে কিছু বলতে চাই না। তবে আমি ব্যক্তিগতভাবে বলতে পারি, আমাকে কে মূল্যায়ন করলো বা করলো না, এ নিয়ে আমার কিছু আসে যায় না। আমি কী করছি, কী করব সেটাই বড় কথা।
চলচ্চিত্রের সোনালি যুগ থেকে কাজ করছেন। সেই সময়ের আলোকে বর্তমান ইন্ডাস্ট্রির অবস্থা কীভাবে মূল্যায়ন করবেন?
এখন যারা কাজ করছেন তাদের অনেকের সঙ্গেই আমার কাজ করা হয়ে ওঠেনি। তবে দেখা হলে সবাই সম্মান করেন। তাছাড়া এখন তো খুব বেশি সিনেমা নির্মিত হচ্ছে না। যেহেতু এই চলচ্চিত্র দিয়েই রোজিনার জন্ম হয়েছে সেহেতু চলচ্চিত্রের মানুষ হিসেবে চাই, সবাই মিলিতভাবে চলচ্চিত্রকে এগিয়ে নিয়ে যাক। আগের মতো না হোক, ধীরে ধীরে যেন ভালো অবস্হানে যায় চলচ্চিত্র।
চলচ্চিত্র সংকটের এই সময়ে হলের সঙ্গে ওটিটিতে চলচ্চিত্র মুক্তির বিষয়টি কীভাবে দেখছেন?
পৃথিবীর অন্যান্য দেশে এই চর্চা অনেক আগেই শুরু হয়েছে। আমাদেরও যুগের সঙ্গে তাল মেলাতে হবে। যারা হলে দেখে অভ্যস্ত তারা হলে যাবে। যারা হলে যেতে পারবে না তারা ওটিটিতে দেখবে। সেখানেই তারা দেখুন আমরা টাকা তো পাচ্ছি। সিনেমাটিও বেশি দর্শকের কাছে পৌঁছাচ্ছে। এটা ইতিবাচক একটি দিক। তবে সিনেমার মান ঠিক রাখতে হবে। যদিও ইদানিং অনেক ভালো ভালো সিনেমা নির্মিত হচ্ছে।
চলচ্চিত্রে পাশাপাশি সামাজিক-ধর্মীয় কাজেও নিজেকে জড়িত রাখছেন। সম্প্রতি একটি মসজিদ নির্মাণ করলেন...
অনেকদিনের ইচ্ছে ছিল আল্লাহ যদি তৌফিক দান করেন তবে একটি মসজিদ নির্মাণ করব। আমি উদ্যোগ নেওয়ার পর আমার পরিবার, কাছের বন্ধু-বান্ধব, সহকর্মী অনেকেই এই কাজটিতে শরীক হয়েছেন। আল্লাহর কাছে শুকরিয়া আল্লাহর ঘর বানাতে পারলাম।