তথ্যপ্রযুক্তিতে নারীর অংশগ্রহণ বাড়াতে এবং ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ার লক্ষ্যে লাইটশোর ফাউন্ডেশন ও বিআইটিএমই-এর যৌথ আয়োজনে ‘গার্লস ইন আইসিটি ডে: অ্যাকসেস অ্যান্ড সেইফটি’ শীর্ষক এক সেমিনার অনুষ্ঠিত হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (২৮ এপ্রিল) অনলাইনে জুম প্ল্যাটফর্মের মাধ্যমে এই সেমিনারটি অনুষ্ঠিত হয়।
সেমিনারে আলোচনা করেন পেওনিয়ারের ব্র্যান্ড অ্যাম্বাসেডর এমরাজিনা ইসলাম, এটুআই আইসিটি ডিভিশনের ন্যাশনাল কনসালটেন্ট মো. শাহরিয়ার হোসেন জিসান, ডিজাইন এন্ড এপিআই-এর হেড অব ডিজাইন নাজিয়া হাসান, দ্য ডেইলি স্টারের হেড অব বিজনেস শুভাশিস রায়, দৈনিক প্রথম আলোর হেড অব বিজনেজ এবিএম জাবেদ সুলতান পিয়াস এবং বিআইটিএমের ডিরেক্টর ও সিইও তালুকদার মোহাম্মদ সাব্বির।
এমরাজিনা ইসলাম বলেন, নারীদের পরিবার অনেক রক্ষণশীল আচরণ করে। পরিবার থেকে সমর্থন পেলে নারীদের প্রযুক্তিখাতে এগিয়ে যাওয়ার সুযোগ আছে।
দৈনিক প্রথম আলোর হেড অব বিজনেস এবিএম জাবেদ সুলতান পিয়াস বলেন, বাংলাদেশের গণমাধ্যমসহ সব প্রতিষ্ঠানে নারী নীতি বাস্তবায়ন করা জরুরী।
এটুআই আইসিটি ডিভিশনের ন্যাশনাল কনসালটেন্ট মো. শাহরিয়ার হোসেন জিসান বলেন, অনলাইনে বুলি, অসচেতন ভাবে কমেন্ট, ব্যক্তিগত কন্টেন্টের অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বর্তমান সময়ের এটি অন্যতম গুরুতর বিষয়। ইন্টারনেট সেফটির দিকে আমাদের নজর দিতে হবে।
দ্য ডেইলি স্টারের হেড অব বিজনেস শুভাশিস রায় বলেন, আইসিটিনির্ভর ক্যারিয়ারের বাংলাদেশ এ নারী -পুরুষ উভয়ের জন্য সমান সুযোগ রাখতে হবে। আইসিটিতে নারীদের বেশি দরকার, সমতা আনতে হবে সুযোগের।
নাজিয়া হাসান বলেন, যেকোনো ক্যারিয়ারে নারীদের সুযোগ তৈরি করতে হবে। আমাদের শিক্ষা ক্ষেত্রে একটি বড় পরিবর্তন দরকার, সেটা একদম প্রাথমিক থেকেই শুরু করা উচিত।
বিআইটিএমের ডিরেক্টর ও সিইও তালুকদার মোহাম্মদ সাব্বির বলেন, বিআইটিএমের কোর্সে প্রথম দিকে নারীদের অংশগ্রহণ প্রায় নগন্য ছিলো। এখনো যে খুব বেশি তা নয়। ১৫-২০ শতাংশ নারী প্রযুক্তিখাতে আসছেন।
সেমিনারের আয়োজক প্রতিষ্ঠান লাইটশোরের কো-ফাউন্ডার সুলতানা রাজিয়া বলেন, ‘আইসিটি খাতে নারীদের অংশ গ্রহণ আরও বেশি বাড়ানো না গেলে নারীরা ক্ষমতায়নের দিক থেকে পিছিয়ে পড়বে। নারীদের আইসিটি অংশগ্রহণ বাড়ানোর লক্ষ্যে লাইটশোর এই বিষয়ক প্রশিক্ষণ, স্টেম নিয়ে কর্মশালা, আরিসিটি বিষয়ক হ্যাকাথন এবং সচেতনতা বৃদ্ধির জন্য কর্মশালা আরও বেশি পরিচালনা করবে।’
আয়োজকরা বলেন, তথ্যপ্রযুক্তি এখন বাস্তবতা। বাংলাদেশ সরকার ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ার প্রত্যয়ে এ খাতে বিশেষ গুরুত্ব দিচ্ছে। বর্তমানে দেশে বিদ্যালয় পর্যায় থেকে তথ্যপ্রযুক্তি শিক্ষাকে বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। দেশের মোট জনসংখ্যার অর্ধেকই নারী। অন্যান্য খাতের মতো তথ্যপ্রযুক্তিতেও নারীদেরকে সম্পৃক্ততা দিন দিন বাড়ছে। নারীর ক্ষমতায়নে তথ্যপ্রযুক্তির গুরুত্ব অপরিসীম।বিশ্বায়নের এই যুগে কোনো দেশকে এগিয়ে যেতে হলে, কোনো জাতিকে উন্নত করতে হলে নারীর ক্ষমতায়নের বিকল্প নেই। কর্মক্ষেত্রে তথ্যপ্রযুক্তিতে মাত্র ১২ শতাংশ নারী কাজ বাংলাদেশ ওপেন সোর্স নেটওয়ার্ক এর আরেকটি জরিপে দেখা গেছে, তথ্যপ্রযুক্তিতে পড়াশুনা করছে এমন শিক্ষার্থীদের মধ্যে মাত্র ১ শতাংশ নারী শিক্ষার্থী ভবিষ্যতে প্রোগ্রামিংকে পেশা হিসেবে নিতে আগ্রহী।
আয়োজনে মিডিয়া পার্টনার ছিল দৈনিক ইত্তেফাক ও রেডিও ক্যাপিটাল। যুব সহযোগী হিসেবে ছিলো ডিইসি ইঞ্জিনিয়ার ক্লাব, লাল সবুজ সোসাইটি ও ইউনিস্যাব- বরিশাল ডিভিশনাল উইং। অনুষ্ঠানটি পরিচালনা করেন লাইটশোর ফাউন্ডেশনের মেম্বার তানজিলা মুনিয়া।