বাংলাদেশের স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উপলক্ষে স্থানীয় সময় শুক্রবার (৬ মে) সন্ধ্যায় যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্কের ঐতিহ্যবাহী ম্যাডিসন স্কয়ার গার্ডেনে অনুষ্ঠিত হলো ‘গোল্ডেন জুবিলি বাংলাদেশ কনসার্ট।’ বিশ্বখ্যাত জার্মানির জনপ্রিয় ব্যান্ড দল ‘স্কোরপিয়নস’ এবং বাংলাদেশের ব্যান্ড ‘চিরকুট’ সঙ্গীত পরিবেশন করে। প্রবাসী বাংলাদেশি এবং আমেরিকার বিভিন্ন জাতিগোষ্ঠীর বিপুল উপস্থিতিতে কানায় কানায় পূর্ণ ছিল ম্যাডিসন স্কয়ার গার্ডেন।
মুক্তিযুদ্ধের সমর্থনে ১৯৭১ সালের ১ আগস্ট ম্যাডিসন স্কয়ার গার্ডেনে অনুষ্ঠিত ‘কনসার্ট ফর বাংলাদেশ’-এর স্মরণে এই কনসার্টের আয়োজন করে বাংলাদেশ সরকারের আইসিটি বিভাগের অধীনে হাইটেক পার্ক। কনসার্টের শুরুতে বাংলাদেশের জাতীয় সঙ্গীত পরিবেশন করা হয়। এসময় প্রায় ১৫ হাজার দর্শক দাঁড়িয়ে জাতীয় সঙ্গীতের প্রতি শ্রদ্ধা জানান। তবে বিপুল বাংলাদেশি আমেরিকানদের উপস্থিতি থাকলেও যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় সঙ্গীত পরিবেশন না করায় সমালোচনার সৃষ্টি হয়েছে। অনেক প্রবাসী এ নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেন। তারা বলেছেন, আমেরিকার জাতীয় সঙ্গীত পরিবেশন করা হলে কনসার্টটির আরও গ্রহণযোগ্যতা বাড়তো এবং বিষয়টি শোভন হতো।
বাংলাদেশের জাতীয় সঙ্গীত পরিবেশনের সময় মঞ্চে উপস্থিত ছিলেন মুক্তযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক, আইসিটি বিভাগের প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক, সংসদ সদস্য এ কে এম শামীম ওসমান, সংসদ সদস্য অপরাজিতা হক প্রমুখ।
আইসিটি বিভাগের প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক স্বাগত বক্তব্যে বাংলাদেশের উন্নয়ন-অগ্রগতি সংক্ষেপে তুলে ধরেন। এসময় তিনি বলেন, ‘জাতির জনক’ বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের পথ ধরেই ডিজিটাল বাংলাদেশের রূপকার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও তার আইটি বিষয়ক উপদেষ্টা সজিব ওয়াজেদ জয়ের নেতৃত্বে বাংলাদেশ এগিয়ে যাচ্ছে। এসময় ম্যাডিসন স্কয়ার গার্ডেনের বিশাল মিলনায়তন ‘জয় বাংলা’ শ্লোগানে মুখর হয়ে ওঠে।
অনুষ্ঠানের শুরুতে বাংলাদেশের ব্যান্ড ‘চিরকুট’ সঙ্গীত পরিবেশন করে। চিরকুটের প্রধান শিল্পী শারমীন সুলতানা সুমী বিশ্বখ্যাত মঞ্চে গাইবার সুযোগ পেয়েও তা কাজে লাগাতে পারেননি। তাদের পরিবেশনা ও প্রধান শিল্পী সুমীর অতিকথনে দর্শকদের বিরক্ত প্রকাশ করতে দেখা গেছে।
চিরকুটের পর মঞ্চ কাঁপাতে আসে বিশ্বখ্যাত ব্যান্ড জার্মানির স্কোরপিয়নস। তারা সকল দর্শক-শ্রোতার মন জয় করে নেন। তাদের পরিবেশনা সবাইকে মাতিয়ে রাখে। ৫০ বছর আগে একই মঞ্চে কনসার্ট ফর বাংলাদেশের কথা উল্লেখ করে সে সময়ের প্রখ্যাত ব্যান্ড তারকা জর্জ হ্যারিসনকে স্মরণ করে স্কোপিয়নস। তারা এই কনসার্টকে ‘বাংলাদেশ নাইট’ অভিহিত করে একাধিকবার বাংলাদেশের নাম উচ্চারণ এবং বুকে হাত রেখে তাদের ভালোবাসা প্রকাশ করেন।
যুক্তরাষ্ট্র সফররত মন্ত্রী ও সংসদ সদস্য ছাড়াও ওয়াশিংটনে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত এম. শহীদুল ইসলাম, জাতিসংঘে বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি রাবাব ফাতিমা, নিউইয়র্কে বাংলাদেশের কনসাল জেনারেল ড. মনিরুল ইমলাম, হাইটেক পার্ক কর্তৃপক্ষের এমডি বিকর্ণ কুমার ঘোষ, ওয়াশিংটনে বাংলাদেশ দূতাবাসের মিনিস্টার (প্রেস) সাজ্জাদ হোসেন সবুজ কনসার্টে উপস্থিত ছিলেন।
এরপর বাংলাদেশের আইসিটি মন্ত্রনালয়ের প্রতিমন্ত্রী জুনায়েদ আহমেদ পলক এমপি দেশের উন্নয়ন-অগ্রগতি সংক্ষেপে তুলে ধরেন। তিনি বলেন, ‘জাতির জনক’ বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের পথ ধরেই ডিজিটাল বাংলাদেশের রূপকার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও তার আইটি বিষয়ক উপদেষ্টা সজিব ওয়াজেদ জয়ের নেতৃত্বে বাংলাদেশ এগিয়ে যাচ্ছে।
উল্লেখ্য, ‘গোল্ডেন জুবিলি বাংলাদেশ কনসার্ট’ থেকে অর্জিত আয় স্বল্পোন্নত ও দরিদ্র দেশের শিশুদের সাইবার নিরাপত্তা সহায়তায় অনুদান হিসাবে প্রদান করা হবে। এই কনসার্টের জন্যে বাংলাদেশ সরকার বরাদ্দ দিয়েছে ১০ কোটি টাকা। এর বাইরে স্পন্সর হিসেবে রয়েছে ওয়ালটন, সিটি গ্রুপ, আবুল খায়ের স্টিল (একেএস), ইউনাইটেড গ্রুপ, বিকাশ, দারাজ এবং এডিএন।