রোববার, ০৪ জুন ২০২৩, ২০ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩০
দৈনিক ইত্তেফাক

৬ বছরেও উদ্ধার হয়নি শিলাইদহ কুঠিবাড়ির চুরি যাওয়া দুই তরবারি

আপডেট : ০৮ মে ২০২২, ১৪:৪৫

কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের স্মৃতিধন্য শিলাইদহের কুঠিবাড়ি থেকে চুরি যাওয়া তরবারি দুইটি ছয় বছরেও হয়নি উদ্ধার। এছাড়া বিগত কয়েক বছরে তরবারি চুরি মামলাটির কোনো কূলকিনারা হয়নি। পুলিশ ক্লু উদ্ধার কিংবা ঘটনায় জড়িত কাউকে এখনো শনাক্ত করতে পারেনি। এদিকে আদালতে পুলিশের দায়সারা অভিযোগপত্রে আপত্তিতে মামলাটি ঝুলে আছে দীর্ঘকাল। এতে রবীন্দ্র ভক্ত-অনুরাগীরা ক্ষোভ প্রকাশ করেন।

জানা যায়, ২০১৬ সালের ৩০ মার্চ শিলাইদহ কুঠিবাড়ির দ্বিতীয় তলার ২০১ নম্বর কক্ষের আলমারিতে রক্ষিত পাঁচটি তরবারির মধ্যে দুইটি রহস্যজনকভাবে চুরি হয়। প্রাচীরবেষ্টিত সুরক্ষিত কুঠিবাড়ির আলমারীর তালা ভেঙে তরবারি চুরির ঘটনার পর পুলিশ ও প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তরের কর্মকর্তাদের তাত্ক্ষণিক দৌড়ঝাঁপ করলেও পরবর্তী সময়ে ঝিমিয়ে পড়ে। ফলে চুরি ঘটনার ছয় বছর অতিবাহিত হলেও তরবারি দুইটি উদ্ধার ও ঘটনার ক্লু পুলিশ উদ্ঘাটন করতে পারেনি। তরবারি চুরির সময় সিসি ক্যামেরা বন্ধ থাকার ঘটনাটি পুলিশের চোখে ছিল রহস্যজনক; কিন্তু পরবর্তী সময়ে এ ঘটনায় মামলা দায়ের করা হলেও তদন্ত আর বেশি দূর এগোয়নি। এছাড়া চুরি ঘটনায় কুঠিবাড়ির ঐতিহ্য ও মর্যদা ক্ষুণ্ণ হয়েছে চরমভাবে। তরবারি দুইটি উদ্ধার না হওয়ায় ক্ষোভ প্রকাশ করেন রবীন্দ্র ভক্ত-অনুরাগীরা। এদিকে কুঠিবাড়ির আলমারির তালা ভেঙে তরবারি দুইটি চুরির ব্যাপারে প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তরের দায়িত্বরত কর্মকর্তা-কর্মচারীদের কাছে নেই কোনো সদুত্তর। চুরির পর প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তরের পাঁচ সদস্যের তদন্ত টিম সরেজমিন ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে। এছাড়া তদন্ত টিমের সদস্যরা কুঠিবাড়ির দায়িত্বে নিয়োজিত কর্মকর্তা-কর্মচারীদের জিজ্ঞাসাবাদ ও তরবারি চুরি ঘটনায় তাদের বক্তব্য লিপিবদ্ধ করেন। তরবারি চুরির সঙ্গে যে বা যারাই জড়িত থাকুক না কেন তাদের চিহ্নিত করে আইনের আওতায় কঠোর শাস্তি দেওয়া হবে বলে তদন্ত কমিটির সদস্যরা দৃঢ়সংকল্প ব্যক্ত করলেও তা মুখ থুবড়ে পড়েছে। চুরির সঙ্গে জড়িতরা এখনো ধরাছোঁয়ার বাইরে।

মামলাটি প্রথমে কুমারখালী থানার পুলিশ তদন্ত করে। পরবর্তী সময়ে ডিবি পুলিশকে তদন্তভার দেওয়া হয়। ডিবি পুলিশের তদন্তকারী কর্মকর্তা আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেন। দীর্ঘ তদন্ত শেষেও পুলিশ চুরি যাওয়া তরবারি দুইটি উদ্ধার কিংবা আসামিদের চিহ্নিত না করে কুষ্টিয়ার আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করে। দাখিলকৃত ঐ অভিযোগপত্র বিষয়ে কুঠিবাড়ির কাস্টোডিয়ান মখলেচুর রহমান আপত্তি দেন। ফলে মামলাটি এখন অনিষ্পন্ন অবস্থায় ঝুলে আছে আদালতে। 

ইত্তেফাক/ ইআ