কুষ্টিয়ায় ট্রিপল হত্যা মামলায় তিন আসামিকে আমৃত্যু কারাদণ্ড ও ৮ জনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। যাবজ্জীবনপ্রাপ্তদের প্রত্যেককে ২৫ হাজার টাকা অর্থদণ্ড অনাদায়ে আরও এক বছর সশ্রম কারাদণ্ডাদেশ দেওয়া হয়।
মঙ্গলবার (১০ মে) দুপুরে কুষ্টিয়ার অতিরিক্ত দায়রা জজ-১ম আদালতের বিচারক মো. তাজুল ইসলাম এই রায় ঘোষণা করেন।
আমৃত্যু দণ্ডপ্রাপ্তরা হলেন, কুষ্টিয়া ইবি থানাধীন পুলতাডাঙ্গা গ্রামের আসকর সর্দারের ছেলে ফারুক সর্দার, একই থানাধীন পশ্চিম আব্দালপুর গ্রামের ইছাহক আলীর ছেলে কালু ও আড়য়াপাড়া মসজিদ বাড়ি লেনস্থ মজনুর ছেলে রোহান। মামলার অপর ৮ আসামিকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেওয়া হয়। এছাড়া অভিযোগ প্রমাণিত না হওয়ায় ১১ আসামিকে খালাস দেয় আদালত। জনাকীর্ণ আদালতে রায় ঘোষণার সময় আমৃত্যু ও যাবজ্জীবন দণ্ডপ্রাপ্তসহ সকল আসামি ছিল অনুপস্থিত।
পুলিশ ও মামলার এজাহার সূত্রে জানা যায়, আতঙ্ক ও ত্রাস সৃষ্টি করে কুষ্টিয়া এলজিডি বিভাগের ১৮ কোটি টাকার ঠিকাদারি কাজ ভাগাভাগি করে নিতে ২০০৯ সালের ১১ আগস্ট চরমপন্থি কানেকটেড সন্ত্রাসীরা পূর্ব পরিকল্পিতভাবে প্রতিপক্ষ ঠিকাদার কাইয়ুম , আইয়ুব ও সামসুজ্জামান জোহার দেহ থেকে মস্তক বিচ্ছিন্ন করে হত্যার পর কর্তনকৃত মাথা তিনটি পলিথিনে মুড়িয়ে কুষ্টিয়া সড়ক ও জনপথ বিভাগের মেইন গেটের সঙ্গে ফেলে রাখে। পরবর্তীতে পুলিশ ইবি থানাধীন সোনাইডাঙ্গা গ্রামের মাঠ থেকে ওই তিনজনের মস্তকবিহীন লাশ উদ্ধার করে। পৈশাচিক এ হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় কাইয়ুমের ভাই আব্দুল হাই বাদি হয়ে ইবি থানায় মামলা দায়ের করেন। মামলা নং ০৮। জিআর ৭৮/২০০৯। তদন্তকারী পুলিশ কর্মকর্তা ২০১০ সালের ২৮ অক্টোবর দণ্ডবিধি ৩০২/২০১/৩৪ ধারা মোতাবেক ২২ আসামির বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেন। পরে আদালতে সাক্ষ্য গ্রহণ ও উভয় পক্ষের আইনজীবীদের যুক্তি-তর্ক উপস্থাপন শেষে মামলাটি সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণিত হওয়ায় বিচারক আসামিদের এ রায় দেন।
সরকার পক্ষে মামলাটি পরিচালনা করেন সরকারি কৌশুলী (পিপি) অনুপ কুমার নন্দী ও আসামির পক্ষে ছিলেন এ্যাডভোকেট তোফাজ্জল হোসেন, এসকে শামসুল হক শ্যাম, আকবর আলী ও মনোয়ার হোসেন মুকুল।