টানা পাঁচ দিন ধরে ঠাকুরগাঁওয়ে প্রচণ্ড গরমে অস্থির হয়ে পড়েছে জনজীবন। ক্ষেত খামারে কাজ করা ব্যক্তিরা একটু ছায়ার জন্য হাঁসফাঁস করছেন। পশুরাও গরমে অস্থির হয়ে পড়েছে। বৃহস্পতিবার (১২ মে) সকালে থেকে দুপুর পর্যন্ত জেলার বিভিন্ন উপজেলা ঘুরে দেখা যায় এমন দৃশ্য।
বালিয়াডাঙ্গী উপজেলার বড় পলাশবাড়ি ইউনিয়নের বেলশাড়া গ্রামে দেখা যায়, ভুট্টা তুলার সময় প্রচণ্ড রোদে হাপিয়ে গিয়ে ও ক্লান্ত হয়ে গাছের ছায়ায় কয়েকজন শ্রমিক ও কৃষক বিশ্রাম করছেন ও একটু পর পর পিপাসায় পানি পান করছেন।
এ সময় কথা হয় কৃষক মনজুর আলমের সাথে। তিনি বলেন, প্রচণ্ড রোদে ক্ষেতে ঠিকভাবে কাজ করা যাচ্ছে না। তাই কিছুক্ষণ পরপর গাছের ছায়ায় এসে বিশ্রাম নেই ও তৃষ্ণায় পানি পান করছি।
মিরাজুল ইসলাম নামে এক কৃষক জানান, 'বয়স বেশি হওয়ায় আগের মত আর কাজ করতে পারছিনা। তারপরে আবার তিনদিন ধরে প্রচণ্ড রোদ ও গরম শুরু হয়েছে। ভুট্টা ক্ষেতে কাজ করতে করতে প্রচণ্ড রোদে ক্লান্ত হয়ে গাছের ছায়ায় এসে বসেছিলাম। কিন্তু এই অবস্থায় কখন যে ঘুমিয়ে গেছি তা বলতেই পারি না।,
বালিয়াডাঙ্গীর লাহিড়ী এলাকার সাবলু বলেন, 'গরমের জন্য গরুগুলোও হাঁসফাঁস করছে ও মাঠে ঘাস খাওয়ার জন্য বেঁধে রাখলে রোদে অস্থিরভাবে ছোটাছুটি করে। তাই গরুগুলোকে মোটরের পানি দিয়ে গোসল করাচ্ছি।,
ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার যুবক কৃষক শাহী ইসলাম বলেন, 'এই রোদে আমরা যুবকরাই মাঠে ঠিকভাবে কাজ করতে পারছিনা খুবই হাঁপিয়ে যাচ্ছি। যারা বয়স্ক তারা এই রোদে কাজ করে অনেকে অসুস্থও হয়ে পড়ছেন।,
হরিপুর উপজেলার কৃষক শেরেকুল বলেন, রোদে কেউ মাঠে কাজ করতে চায়না। তাই শ্রমিকও খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। এ নিয়ে খুব অস্বস্তিকর অবস্থায় আছি।,
সদর উপজেলার ব্যবসায়ী আলমমীর হোসেন বলেন, 'রাতে তাপমাত্রা একটু কম থাকলেও সকাল ১০ টা থেকে শুরু হয় প্রচন্ড রোদ ও গরম। বেলা যত বাড়তে থাকে গরমও তত বৃদ্ধি হতে থাকে।'
সাধারণত তাপমাত্রা ৩৬ থেকে ৩৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস হলে মৃদু তাপপ্রবাহ, ৩৮ থেকে ৪০ ডিগ্রি সেলসিয়াস হলে মাঝারি এবং ৪০ ডিগ্রি সেলসিয়াসের ওপরে হলে তীব্র তাপপ্রবাহ বলা হয়।
ঠাকুরগাঁও জেলায় আবহাওয়া অধিদপ্তর না থাকায় পঞ্চগড়ের তেঁতুলিয়া আবহাওয়া অধিদপ্তরের তথ্য মতে, গত ৮ মে তেঁতুলিয়া সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ২২.৪ ও সর্বোচ্চ ৩১, ৯ মে সর্বনিম্ন ২২.৯ ও সর্বোচ্চ ৩৪.৬, এবং ১২ মে সর্বনিম্ন ২৩.৬ ও সর্বোচ্চ ৩৪.২ ডিগ্রী সেলসিয়াস তাপমাত্রা নির্ণয় করা হয়।