ভাঙা আয়না
শিহাব শাহরিয়ার
কে এখন কী রকম?
তা জানি না, জানতে চাইও না
তবে আমি এখন এক ভাঙা আয়না
আমার মুখের কিছু অংশ দেখা যায়
কিছু অংশ দেখা যায় না
অনেকগুলো অচেনা পথ
না-দেখা মানুষ আমি
মাঝে মাঝে পথ আর আয়নাকে
তাই একই মনে হয়
তুমি একদিন
চলে যেতে চেয়েছিলে
যাবার আগে বার বার আয়নায়
রেখেছিলে মুখ
কিন্তু পথে নেমে যাওয়া হয়নি তোমার
অথবা পারনি যেতে
তুমি কি এখনো পথে যেতে যেতে
হাত-আয়নায় দেখ মুখ?
আমার হাতের আঙুলেরা
রাতদুপুরে জেগে ওঠে
সঙ্গমের নেশায় নয় উ
শখুশ করে কিবোর্ডে আঙুল চালাতে
দরোজায় টোকা দিয়ে
তুমি ঢুকতে যেভাবে আমার শূন্য ঘরে
ঘর তো আর এখন ঘর নেই
ভাঙা আয়নার মতোই যেন পড়ে আছে
আত্মভ্রমণ
এমরান হাসান
ইদানীং খুব বেশি ক্লান্ত পরিশ্রান্ত মনে হয় শস্যের সুঘ্রাণ।
নিজেকে বহুদিন প্রকৃতির সবুজের ভেতর সঁপে দিতে দিতে আবিষ্কার করিনি দীর্ঘকায় সত্যের পরিণামে। একসময় ঘুম এবং রোদের ভেতর ডুবতে ডুবতে পৌঁছে গিয়েছিলাম পুরনো রংচটা ধুলোর আঙিনায়। সেখানে আমার মাতামহের অস্হি আর পিতার শেষ দীর্ঘশ্বাস ঝুলে আছে, যেরকম ঝুলে থাকে বহু পুরাতন দিনপঞ্জি কিংবা আলোকোজ্জ্বল এক দৃশ্যের পরমায়ু। নিজের আকাশকেই এই চুনখসা পুরনো সাদাটে ছাদের মতোই স্যাঁতসেঁতে মনে হয়, যেন সব গল্পই ছড়িয়েছে তার অনন্ত অগন্তব্যে। একজন্ম আলোর বিপরীতে জেগেই থাকে সমুদ্র-অন্ধকার...
নিজের ছায়া মাড়িয়ে নিজেই কেমন আটকে গেছি দাসত্বের দাবা-ঘরে! শৈশব-মার্বেলের মতোই কে যেন টুপ করে তলিয়ে যায় ইসা’র পুকুরে। বৈষম্যের সুবর্ণরেখায় ছিঁড়ে যাওয়া বিশ্বাসের পালকে লেগেছে যে ক্ষয়িষ্ণু আয়ুর সংকেত। অনেক খুঁজেও শেষাব্দি তার ছায়াটুকুই কুড়িয়েছি জলের স্রোতে। সে বর্গফলেও নিঃশর্ত মুক্তি মেলে না আমার।