বৃহস্পতিবার, ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০
The Daily Ittefaq

১২ যাত্রী নিয়ে ঢাকায় পৌঁছালো ‘মিতালী এক্সপ্রেস’

আপডেট : ০১ জুন ২০২২, ২৩:৩৪

দীর্ঘ ৫৭ বছর প্রতীক্ষার পর অবশেষে ভারতের নিউ জলপাইগুড়ি স্টেশন থেকে ১২ যাত্রী নিয়ে ঢাকায় পৌঁছেছে মিতালী এক্সপ্রেস। বুধবার (১ জুন) দুপুর ১১টা ৪৫ মিনিটে ভারতের নিউ জলপাইগুড়ি স্টেশন থেকে ছেড়ে আসা ট্রেনটি রাত ১০টা ৫৫ মিনিটে ঢাকা ক্যান্টনমেন্ট রেলওয়ে স্টেশনে এসে পৌঁছায়। ১২ জনের মধ্যে ৪ জন বাংলাদেশি এবং ৮ জন ভারতীয় নাগরিক।

বিষয়টি নিশ্চিত করে ঢাকা ক্যান্টনমেন্ট রেলওয়ে স্টেশনের ইমিগ্রেশন পুলিশের সাব ইন্সপেক্টর মো. আনিছুর রহমান জানান, ট্রেনটি পৌঁছানোর নির্দিষ্ট সময় ছিল রাত সাড়ে ১০টা। ট্রেনটি ২৫ মিনিট বিলম্বে স্টেশনে পৌঁছায়।

এর আগে, রেলমন্ত্রী নূরুল ইসলাম সুজন ও ভারতের রেলমন্ত্রী অশ্বিনী বৈষ্ণব বুধবার নয়াদিল্লি থেকে স্থানীয় সময় সকাল ৯টা ২৫ মিনিটে ট্রেনটির ভার্চুয়ালি ‘ফ্ল্যাগ অফ’ করেন। এর মধ্য দিয়ে ঢাকা ও নিউ জলপাইগুড়ির মধ্যে নতুন একটি আন্তঃদেশীয় ট্রেন মিতালী এক্সপ্রেসের বাণিজ্যিক কার্যক্রম শুরু হয়।

ওই সময় বৈঠকে রেলমন্ত্রী নূরুল ইসলাম সুজন বলেন, আজকের দিনটি উভয় দেশের জন্য একটি ঐতিহাসিক দিন। বৈঠকে তিনি ভারতীয় রেলমন্ত্রীকে লাইন অফ ক্রেডিটের (এল‌ওসি) বিল প্রদান সহজীকরণ, বাংলাদেশ রেলওয়েতে পণ্য ও যাত্রীবাহী ট্রেনের সুবিধার জন্য ২০টি লোকোমোটিভ সরবরাহের অনুরোধ জানান। এছাড়াও মিতালী এক্সপ্রেস সপ্তাহে দুই দিনের পরিবর্তে পাঁচদিন চালানোর অনুরোধ করেন। দেশের কোচ, ইঞ্জিন চালানোর ক্ষেত্রে কম্পিউটার ভিত্তিক ভারতীয় সেন্টার অব রেলওয়ে ইনফরমেশন সিস্টেমের ( সিআরআইএস) সহায়তাও চান তিনি। তখন ভারতের রেলমন্ত্রী এসব বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবেন বলে আশ্বস্ত করেন।

নিউ জলপাইগুড়ি থেকে ঢাকা ক্যান্টনমেন্ট স্টেশনের মধ্যে ৫১৩ কিলোমিটার যেতে ট্রেনটির সময় লাগবে ৯ ঘণ্টা। এটি একটি ডিজেল ইঞ্জিন দ্বারা পরিচালিত হবে এবং এতে চারটি শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত কেবিন কোচ ও চারটি শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত চেয়ার কার থাকবে।

এর আগে, ভারতের উত্তর রেলওয়ের প্রধান জনসংযোগ কর্মকর্তা (সিপিআরও) গণমাধ্যমকে জানান, ‘মিতালি এক্সপ্রেস’ উত্তর পশ্চিমবঙ্গের নিউ জলপাইগুড়ি স্টেশন থেকে বেলা ১১টা ৪৫ মিনিটে ছেড়ে যায় এবং বাংলাদেশ সময় রাত সাড়ে ১০টায় ঢাকা ক্যান্টনমেন্ট স্টেশন পৌঁছাবে। এটি ভারতের দিকের শেষ স্টেশন হলদিবাড়িতে এবং বাংলাদেশের দিকে প্রথম স্টেশন চিলাহাটিতে চালক পরিবর্তনের জন্য ১০ মিনিটের বিরতি দেবে। এছাড়া এটির আর কোনো বিরতি নেই।

এই ট্রেনের টিকিট পাওয়া যাবে বাংলাদেশ অংশে ঢাকার কমলাপুর ও চট্টগ্রাম স্টেশনে। ভারতের অংশে টিকিট মিলবে কলকাতার ফেয়ারলি প্যালেস ও নিউ জলপাইগুড়ি স্টেশনে। ঢাকা থেকে নিউ জলপাইগুড়ি পর্যন্ত মিতালী এক্সপ্রেসের রেলপথ দূরত্ব ৫৯৫ কিলোমিটার। এর মধ্যে ভারতের অংশে ৬৯ কিলোমিটার।

ট্রেনটি দিনের বেলা ৪৫৬ আসন নিয়ে এবং রাতে ৪০৮ আসন নিয়ে চলাচল করবে। নিউ জলপাইগুড়ি থেকে হলদিবাড়ী হয়ে নীলফামারীর চিলাহাটি সীমান্ত পার হবে মিতালী। এরপর বাংলাদেশের চিলাহাটি, নীলফামারী, পার্বতীপুর, হিলি, সান্তাহার, নাটোর, ঈশ্বরদী বাইপাস ও বঙ্গবন্ধু সেতু পার হয়ে ট্রেনটি ঢাকায় পৌঁছাবে। একইভাবে ট্রেনটি নিউজলপাইগুড়ি পৌঁছাবে।  

তিনি আরও বলেন, এ পথে মিতালী এক্সপ্রেস ট্রেনের আয়ের বাংলাদেশের রেলওয়ে বিভাগ ৮০ শতাংশ আর ২০ শতাংশ পাবে ভারতীয় রেলওয়ে বিভাগ পাবে।

এদিকে দীর্ঘ আন্দোলনের পর চিলাহাটি-হলদিবাড়ি রেলপথে ট্রেন চলাচল শুরু হলেও চিলাহাটি স্টেশনে যাত্রী উঠা-নামার ব্যবস্থা না থাকায় আশপাশের এলাকার মানুষের খুব বেশি একটা সুবিধা হবে না । তাই চিলাহাটিসহ গোটা জেলার মানুষের উৎসাহ ও উদ্দীপনার চেয়ে হতাশা বেশি প্রকাশ পাচ্ছে। এলাকাবাসী চিলাহাটি স্টেশনে ইমিগ্রেশনসহ যাত্রী উঠা-নামার দাবী করছেন। 

ইত্তেফাক/ ইআ