শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০
The Daily Ittefaq

তিন মাসে খেলাপি ঋণ বাড়লো ১০ হাজার কোটি টাকা

আপডেট : ০৬ জুন ২০২২, ১০:০৩

২০২২ সালের ডিসেম্বর শেষে ব্যাংক খাতে খেলাপির পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ১ লাখ ১৩ হাজার ৪৪১ কোটি টাকা। সে হিসাবে খেলাপি ঋণ আগের তিন মাসের চেয়ে ১০ হাজার ১৬৭ কোটি টাকা বেড়েছে। করোনার কারণে ব্যবসায়ীদের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে ঋণ পরিশোধ না করে বা সামান্য পরিশোধ করে খেলাপিমুক্ত থাকার সুযোগ ছিল। করোনার পুরো সময় জুড়ে কয়েক দফায় দেওয়া বিভিন্ন সুবিধার বেশির ভাগই শেষ হয়েছে গত ডিসেম্বরে। এর পরপরই খেলাপি ঋণ বেড়েছে ব্যাপকভাবে। চলতি বছরের ডিসেম্বর পর্যন্ত খেলাপি না করার সুবিধা চেয়েছে ব্যবসায়ীদের শীর্ষ সংগঠন এফবিসিসিআই।

করোনা ভাইরাসের প্রকোপ কিছুটা কমেছে। তবে এর প্রভাব এখনো চলছে। অর্থনীতি এখনো ঘুরে দাঁড়াতে পারেনি। মন্দা কাটিয়ে উঠতে আরো সময় লাগবে বলেই উদ্যোক্তা ও শিল্পপতিদের অভিমত। সেই অভিমতের সঙ্গে একমত পোষণ করে সরকার এখনো উদ্যোক্তাদের নানামুখী সুবিধা দিচ্ছে। যদিও সেই সব সুবিধা পেয়েছে হাতে গোনা কয়েক জন বা কয়েকটি শিল্পগোষ্ঠী। সরকারের দেওয়া সুবিধার পরও খেলাপি ঋণের পরিমাণ বেড়েছে।

বাংলাদেশ ব্যাংকের হালনাগাদ প্রতিবেদনে দেখা গেছে, মার্চ শেষে খেলাপি ঋণের পরিমাণ ১ লাখ ১৩ হাজার ৪৪১ কোটি টাকা; তিন মাস আগে গত ডিসেম্বর শেষে যা ১০ লাখ ৩ হাজার ২৩৪ কোটি টাকা ছিল। মার্চে এসে মোট ঋণের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ১৩ লাখ ২৯ হাজার ৭৩৬ কোটি টাকা; গত ডিসেম্বরে যা ছিল ১৩ লাখ ১ হাজার ৭৯৭ কোটি টাকা। তিন মাসে ঋণস্থিতি বেড়েছে ২৭ হাজার ৯৩৮ কোটি টাকা।

২০২০ সালের মার্চ থেকে দেশে শুরু হয় মহামারি করোনা ভাইরাসের প্রকোপ। এই সংকটকালে ঋণখেলাপিদের আরো সুবিধা দেয় সরকার। ফলে কিস্তি না দিলেও খেলাপি হিসেবে চিহ্নিত হতে হয়নি কাউকে। এতে ঋণের শ্রেণিমানও পরিবর্তন করা হয়নি। কেউ কেউ স্বপ্রণোদিত হয়ে কোনো ঋণের কিস্তি বা খেলাপি ঋণ পরিশোধ করেছে। এর মানে হচ্ছে, এই এক বছর কেউ কোনো ঋণের কিস্তি পরিশোধ করেনি; যে ঋণ যে অবস্থায় ছিল সেই অবস্থাতেই রাখা হয়েছিল। এই সময়ে যে খেলাপি ঋণ আদায় হয়েছে, সেটা কিছু উদ্যোক্তা নিজ উদ্যোগেই দিয়েছেন। পরে ২০২১ সালে কিছুটা পরিবর্তন আনা হয়। ঐ বছরের মার্চ থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত ঋণের সামান্য অংশ পরিশোধ করলেই আর খেলাপি করা হয়নি। এই ছাড়ের কারণে একজন গ্রাহকের যে পরিমাণ ঋণ পরিশোধ করার কথা, তা তিনি করেননি। ফলে ধারাবাহিকভাবে খেলাপি ঋণ বেড়েছে।

ইত্তেফাক/কেকে