শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০
The Daily Ittefaq

পদ্মা সেতু: শেখ হাসিনা স্বাধীনভাবে কাজ করতে দিয়েছেন

আপডেট : ০৮ জুন ২০২২, ১২:৫৪

মিথ্যা বলার এক আন্তর্জাতিক প্রতিযোগিতার ফাইন্যালে দু’জন মুখোমুখি। অপেক্ষাকৃত তরুণ প্রতিযোগী তার প্রতিপক্ষকে বললেন, আপনি মুরুব্বী, আগে বলেন। মুরুব্বী প্রতিযোগী তার বক্তব্য শুরু করলেন এভাবে, ‘আমাদের পরিবারে একজন সৎ মানুষ ছিলেন...।’ এ বাক্য শেষ না হতেই তরুণ প্রতিযোগী দু’হাত তুলে বলে ওঠেন, ‘মুরুব্বী, আর প্রতিযোগিতার দরকার নেই। আপনিই জয়ী। আপনি যে বাক্য দিয়ে শুরু করলেন তার চেয়ে বড় মিথ্যা কথা কেউ কোনো দিন বলেনি, বলতেও পারবে না।’

এভাবে মিথ্যা বলার ওই আন্তর্জাতিক প্রতিযোগিতার যবনিকাপাত ঘটলেও বাংলাদেশে বিএনপি নেতৃত্বের মিথ্যাচার কিন্তু সমানে চলছে। ৫ জুন (২০২২) ঠাকুরগাঁও প্রেসক্লাবে সংবাদকর্মীদের আলোচনাকালে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফকরুল ইসলাম বলেন, ‘বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়া পদ্মা সেতুর ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেছিলেন। যমুনা সেতুর কাজও করেছে বিএনপি সরকার।’

যে দলের শীর্ষস্থানীয় পর্যায় থেকে বাংলাদেশের মহান স্বাধীনতার ঘোষণা নিয়ে মিথ্যাচার চলছে বছরের পর বছর, তারা নানা বিষয়ে এমনটি করবে তাতে বিস্ময় কী! বাংলাদেশের জনগণ বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে ১৯৭০ সালের নির্বাচনে রায়ের মাধ্যমে স্বাধীনতা ঘোষণার ম্যান্ডেট দিয়েছিল, তিনি তার মর্যাদা রেখেছেন। উপযুক্ত মুহূর্তের অপেক্ষা করে তিনি ১৯৭১ সালের ২৬ মার্চের প্রথম প্রহরে স্বাধীনতা ঘোষণা করেন এবং জনগণ তার আহ্বানে সাড়া দিয়ে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর বিরুদ্ধে অস্ত্র তুলে নিয়ে যুদ্ধে বিজয়ী হয়। বিএনপি কেন এমন মিথ্যাচার করছে? প্রকৃতপক্ষে তারা বাংলাদেশের 
মহান স্বাধীনতা সংগ্রাম এবং এ সংগ্রামের মহান নেতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে হেয় করতে চায়, জনমনে বিভান্তি সৃষ্টি করতে চায়। একইভাবে তারা এখন চাইছে আমাদের শ্রেষ্ঠ অর্জনগুলোর একটি, নিজস্ব অর্থে পদ্মা নির্মাণ নিয়ে বিভ্রান্তি সৃষ্টি করতে। বিশ্বব্যাংক যখন সেতু নিয়ে বাংলাদেশের সঙ্গে অন্যায় আচরণ করেছে, তখন বিএনপি এবং তার মিত্ররা সেটা সমর্থন করেছে। সেতু উদ্বোধনের প্রাক্কালে কখনও খালেদা জিয়াকে ‘ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপনকারী’ ঘোষণা করছে, কখনও ব্যয় নিয়ে প্রশ্ন তুলছে। সবই করা হচ্ছে বিশেষ মতলব থেকে।

বিএনপির ঘনিষ্ঠ মিত্র নাগরিক ঐক্যের মাহমুদুর রহমান মান্না, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদের দুই বারের নির্বাচিত ভিপি (চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্র সংসদেও নির্বাচিত জিএস ছিলেন তিনি)। তিনি বলেছিলেন, ‘বাংলাদেশের পাশে ভারতের আসাম ও অরুণাচল রাজ্য। সেখানে একটি ব্রিজ নির্মাণ করা হয়েছে। সেতুটির নাম দেওয়া হয়েছে ভুপেন হাজারিকা সেতু। লম্বা ৯ দশমিক ১৫ কিলোমিটার। পদ্মা সেতু লিম্বা ৬.১৫ কিলোমিটার। ভারত ওই সেতু নির্মাণ করেছে ১ হাজার ১২৮ কোটি টাকায়। পদ্মা সেতু নির্মাণে ব্যয় শুরু ধরা হয়েছিল ১০ হাজার কোটি টাকার মতো। পদ্মা সেতু নির্মাণে সর্বশেষ বলা হয়েছে ৩০ হাজার কোটি টাকা ব্যয় হবে। তার সাথে আরও ১০-২০ হাজার কোটি টাকা যুক্ত হয়েছে। কমপ্লিট করতে আরও ২০ হাজার কোটি টাকা লাগবে। তার মানে ৬০-৭০ কোটি টাকা লাগবে পদ্মা সেতু নির্মাণে।’ [কালেরকণ্ঠ, ১১ ডিসেম্বর, ২০২০]

আন্তর্জাতিক মিথ্যা বলার প্রতিযোগিতায় এ ধরনের প্রতিযোগী থাকলে কেউ বিএনপি নেতৃবৃন্দ ও তাদের দুষ্কর্মের সহযোগীদের সঙ্গে পারবে না, সেটা নিশ্চিত করেই বলা যায়।

২০০১ সালের ৪ জুলাই প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা মাওয়া ও জাজিরা, দুই প্রান্তে পদ্মা সেতুর ভিত্তি প্রস্তর স্থাপন করেছিলেন। কিন্তু দুর্ভাগ্য, ওই বছর ১ অক্টোবরের নির্বাচনে বিএনপি ও জামায়াতে ইসলামী ক্ষমতায় আসার পর সেতুর কাজ পরিত্যক্ত হয়। এরপর জাইকা ২০০৩ থেকে ২০০৫ সালের মধ্যে আবারও সমীক্ষা চালিয়ে মাওয়া-জাজিরা পয়েন্টকে সেতুর জন্য উপযুক্ত স্থান মনে করে। ২০০৭ সালের ২০ আগস্ট (তখন ড. ফকরুদ্দীন আহমদের নেতৃত্বাধীন তত্ত্বাবধায়ক সরকার ক্ষমতায়) জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদ সভায় ১০ হাজার ১৬১ কোটি টাকা ব্যয়ে পদ্মা সেতু নির্মাণ প্রকল্প অনুমোদন করে। পরবর্তীতে নির্মাণ ব্যয় ধরা হয় ২০ হাজার ৫০৭ কোটি টাকা। সর্বশেষ ব্যয় প্রাক্কলন করা হয় ৩০ হাজার ১৯৩ কোটি টাকা। 

যমুনায় বঙ্গবন্ধু সেতু ও পদ্মা সেতু প্রকল্পের পরিকল্পনা প্রণয়ন ও বাস্তবায়নে বিশেষজ্ঞ হিসেবে সক্রিয়ভাবে যুক্ত অধ্যাপক জামিলুর রেজা চৌধুরীকে জিজ্ঞেস করেছিলাম, কেন সেতুর ব্যয় বেড়েছে? তিনি উত্তর দিয়েছিলেন এভাবে ‘জাপানিরা প্রস্তাব করেছিল মাঝের লেনে রেল গাড়ি চলবে, আর দুই পাশে চলবে চার লেনে মোটর গাড়ি। শেখ হাসিনা ২০০৯ সালের জানুয়ারি মাসে দ্বিতীয়বার প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব গ্রহণের পর পদ্মা সেতু নির্মাণে ফের মনোযোগী হন। এ সময়ে কয়েকটি ডিজাইন নিয়ে আলোচনা হয়। সব মত বিবেচনায় নিয়ে সিদ্ধান্ত হয়, দোতালা সেতুই হবে সর্বোত্তম। প্রথমে কংক্রিটের সেতুর কথা ভাবা হয়। রেল গাড়ি ও সড়ক পথ একই লেবেলে থাকার কথা ছিল। নতুন ডিজাইনে নিচে চলবে রেল, ওপরে মোটর গাড়ি। দোতালা সেতু ভবিষ্যতের সুবিধার কথা ভেবে করা হয়েছে। একতলা সেতু হলে বর্তমান ডিজাইনের চেয়ে সেতুর উচ্চতা ৪০ ফুট বেশি রাখতে হতো। দোতালা সেতু হওয়ায় কার্ভ কম হবে। আরও একটি বিষয় বিবেচনায় নিতে হয়েছে। এখন পদ্মা নদীর যে তলদেশ, আগামী ১০০ বছর পর তেমনটি কি থাকবে? হঠাৎ যদি তলদেশের মাটি উধাও হয়ে যায়? সমীক্ষায় দেখা গেছে, আগামী ১০০ বছরে নদীর তলদেশের মাটি ৬২ মিটার পর্যন্ত সরে যেতে পারে। এই ৬২ মিটার বিবেচনায় নিয়ে ডিজাইন করতে হয়েছে। যমুনায় ৬৫ মিটার নিচে একটি পাথরের লেয়ার বা স্তর পাওয়া গেছে। কিন্তু পদ্মা যে আরও অতল। এখানে ৬২ মিটার ঝুঁকিপূর্ণ। তাই পাইল ১২০ মিটার পর্যন্ত হবে। বিশ্বে যে কোনো সেতুর জন্য এটাই এ পর্যন্ত গভীরতম পাইল।’ [সমকাল, ১০ ডিসেম্বর, ২০১৫]

পদ্মা সেতুর এক্সপার্ট প্যানেলের সদস্য অধ্যাপক আইনুন নিশাত বলেছেন, পদ্মা নদীর মূল স্রোতধারা যেখানে, পাইলের ডিজাইনে পরিবর্তন আনতে হয়েছে। এতে ব্যয় বেড়েছে, সময় বেশি লেগেছে। আগে কেন এটা বোঝা যায়নি, এ প্রশ্নে তিনি বলেন, সেতুর পিলার বসেছে ৫০ মিটার পর পর। এ কারণে টেস্ট পর্যায়ে নদীর তলদেশের সম্ভব্য সব ঝুঁকি বোঝা যায়নি। যে কোনো বড় ধরনের নির্মাণ কাজে এমনটি হয়ে থাকে, কাজ যত আগাতে থাকে, ডিজাইনে সমন্বয়সাধন করা হয়।

অধ্যাপক জামিলুর রেজা চৌধুরী পদ্মা সেতুর উদ্বোধন দেখে যেতে পারেননি। ২০২০ সালের ২৮ এপ্রিল তার মৃত্যু হয়। সেতুর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে তাঁকে বিশেষভাবে স্মরণ করা হবে এবং তাঁর পরিবারের সদস্যরা আমন্ত্রিত হবেন, এ প্রত্যাশা থাকবে। একইভাবে প্রত্যাশা থাকবে, অধ্যাপক আইনুন নিশাতসহ টেকনিক্যাল টিমের সদস্যদের যেন যথাযথ সম্মানিত করা হয়। 

ড. জামিলুর রেজা চৌধুরী বিশ্বব্যাংক প্রসঙ্গে বলেন, এ সংস্থা  কেবল সেতু নির্মাণে ঋণ দিতে চায়নি, লিড এজেন্সিও হতে চেয়েছে। আমরা মান ও ব্যয় নিয়ে নিশ্চিত হতে চেয়েছি। কোনো কোনো প্রতিষ্ঠান মানসম্পন্ন কাজ করে, কিন্তু টাকা বেশি দাবি করে। বাংলাদেশ এ দুটি বিষয়ের মধ্যে সমন্বয়সাধনের চেষ্টা করেছে। এক পর্যায়ে বিশ্বব্যাংক ঘুষ লেনদেনের অভিযোগ তোলে এবং ১২০ কোটি ডলার ঋণ প্রদানের অঙ্গীকার থেকে সরে যায়। তবে এ পর্যন্ত তাদের অভিযোগের প্রমাণ মেলেনি। বিশ্বব্যাংকের অভিযোগের কারণে বাংলাদেশের কয়েকজন জেল খেটেছেন, একজন মন্ত্রী পদ হারিয়েছেন। আমি মূল্যায়ন কমিটির প্রধান হিসেবে নিশ্চিত করে বলতে পারি, কোন প্রতিষ্ঠানকে সুবিধা প্রদানের জন্য শেখ হাসিনার সরকারের কেউ কিংবা অন্য কেউ আমাকে বলেনি কিংবা চাপ সৃষ্টি করেনি। তবে ঋণ প্রত্যাহারের পর বাংলাদেশ যখন নিজস্ব অর্থে সেতু নির্মাণের পথে চলে তখন বিশ্বব্যাংক বলছে, এত বড় উন্নয়ন প্রকল্প থেকে তাদের সরে যাওয়া ঠিক হয়নি। সেতুটিকে আমরা বলতে পারি বাংলাদেশের স্টিল লাইফলাইন। [সমকাল, ১০ ডিসেম্বর ২০১৫]

নিজস্ব অর্থে সেতু তৈরি করতে গিয়ে ব্যয় বাড়ল কেন, এ প্রশ্ন করেছিলাম অধ্যাপক জামিলুর রেজা চৌধুরীকে। তিনি বলেন, বিশ্বব্যাংক-এশীয় উন্নয়ন ব্যাংক-জাইকা যখন যুক্ত ছিল তখন ঠিক হয়েছিল কাস্টমস শুল্ক ও ভ্যাট পরিশোধ করবে সরকার। এ হিসাব অবশ্য কাগজে-কলমে। এ কারণে ব্যয় কিছুটা কম দেখা গিয়েছিল। এখন এ অর্থ দেবে ঠিকাদার। তবে তারাও এ অর্থ দেবে সরকারের কাছ থেকে নিয়ে। প্রকৃতপক্ষে আগে প্রাক্কলন করা ব্যয়ের সঙ্গে বর্তমান ব্যয়ের তেমন পার্থক্য নেই। মূল্যস্ফীতির কারণেও ব্যয় বেশি  মনে হচ্ছে। নতুন কিছু বিষয়ও যুক্ত হয়েছে প্রকল্পে, যতে ব্যয় বেড়েছে।
ড. আইননুন নিশাত বলেন, নদীর তলদেশের মাটির জটিলতার কারণে মাঝনদীতে ১৪ টি খুঁটি বা পিলারের নিচে একটি করে পাইল বেশি বসানো হয়েছে। যুক্তরাজ্যের একটি পরামর্শক প্রতিষ্ঠান নিয়োগ করে খুঁটি সমস্যার সমাধান এবং সে অনুযায়ী নকশা সংশোধন করা হয়েছে। 

সেতু ও নদী শাসনের ব্যয়ের বড় অংশ যায় ইস্পাতসহ অনেক ধরনের সরঞ্জাম কেনাকাটায়। এ সব কিনতে হয় চীন, জার্মানি ও অন্যান্য দেশ থেকে। বিদেশি কনসালট্যান্টদের বেতন-ভাতা দিতে হয় ডলার-ইয়েন-ইউরোতে। ২০০৭ সালে যখন ১০ হাজার ১৬১ কোটি টাকা ব্যয় হিসাব করা হয়েছিল, তখন প্রতি ডলারের বিনিময় মূল্য ছিল ৬৮.৬৫ টাকা। ২০১৮ সালে যখন ব্যয় হিসাব করা হয়, তখন প্রতি ডলার পেতে ব্যয় করতে হয় ৮৪.৮০ টাকা, ২৪ শতাংশ বৃদ্ধি।

২৫ জুন সেতু উদ্বোধন। ড. আইনুন নিশাত সেতু নির্মাণের পরিকল্পনা প্রণয়ন ও বাস্তবায়নে শুরু থেকেই যুক্ত ছিলেন। তাকে জিজ্ঞেস করি, ‘মধুরতম’ অভিজ্ঞতা কী? উত্তরে একটুও সময় নিলেন না। ‘গত কয়েক বছরে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কিংবা সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের অথবা প্রকল্প সংশ্লিষ্ট অন্য কোনো কর্মকর্তার দিক থেকে টেকনিক্যাল বিষয়ে কোনো সুপারিশ বা চাপ আসেনি। কোনো তদবিরের মুখোমুখি হইনি। বড় ধরনের কাজ সফলভাবে সম্পন্ন করার জন্য এটাই কাক্সিক্ষত। আমরা স্বাধীনভাবে কাজ করতে পেরেছি। স্বপ্ন সফল হয়েছে, পদ্মা সেতু চালু হয়েছে।’ 

প্রসঙ্গত বলি, যমুনায় বঙ্গবন্ধু সেতু নির্মাণের কাজ শেষ হয়েছে ৪৪ মাসে। এর মধ্যে অর্ধেকের বেশি, ২৪ মাস ক্ষমতায় ছিল আওয়ামী লীগ। বাকি ২০ মাস বিএনপি ক্ষমতায় ছিল, যোগাযোগ মন্ত্রী ছিলেন কর্নেল (অব.) অলি আহমদ। সেতু নির্মাণ প্রক্রিয়ায় যুক্ত কয়েকজন পদস্থ ব্যক্তির কাছে শুনেছি, মন্ত্রণালয় থেকে যখন তখন হুকুম আসত। তদবির-সুপারিশের শেষ ছিল না। ঢাকাস্থ মার্কিন দূতাবাস থেকেও তাদের পছন্দের প্রতিষ্ঠানকে কাজ দেওয়ার অনুরোধ এসেছিল। এ নিয়ে বিশ্বব্যাংকের সদর দফতরেও তদবির হয়। কিন্তু ১৯৯৬ সালের ২৩ জুন আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার পর  রাতারাতি দৃশ্যপট বদলে যায়। বঙ্গবন্ধুকন্যা সেতু নির্মাণে স্বাধীনভাবে কাজ করতে দেন। তিনি কেবল একটি বিষয়ে অনড় অবস্থান নিয়েছিলেন, সেতুতে রেল সংযোগ থাকতেই হবে। পদ্মা সেতুতেও তিনি কোনো ধরনের হস্তক্ষেপ করেননি। তিনি বাংলাদেশে গর্ব হয়ে থাকা সেতুটি দেখতে চেয়েছেন এবং তার প্রত্যাশা পূরণ হয়েছে।

ড. আইনুন নিশাতকে জিজ্ঞেস করি, বিশ্বব্যাংক বাংলাদেশের সঙ্গে অন্যায় আচরণ করেছে। এখন তারা কী বলে? উত্তরে তিনি বলেন, সংস্থার ঢাকা অফিস থেকে ২০১২ সালেও চেষ্টা হয়েছিল, যেন বিশ্বব্যাংকের হেড অফিস তাদের ভুল বুঝতে পারে। যে দিন ওয়াশিংটন থেকে চুক্তি বাতিলের ঘোষণা আসে, তারা দারুণ হতাশ হয়েছিলেন। এখনও একান্তে বিশ্বব্যাংকের অনেক বলেন, কী যে ভুল হয়ে গেল! 

ইত্তেফাক/জেডএইচডি

এ সম্পর্কিত আরও পড়ুন