শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০
The Daily Ittefaq

মাগুরার শ্রীপুরে গণপিটুনিতে নিহত ১, আহত ২

আপডেট : ১৬ জুন ২০২২, ০২:১৫

মাগুরার শ্রীপুর উপজেলার ছোনগাছা গ্রামে প্রেমঘটিত ঘটনায় গণপিটুনিতে একই উপজেলার বরিশাট গ্রামের আব্দুল জলিল শেখের পুত্র রাসেল শেখ (২৮) নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছে একই গ্রামের আজ্জাত আলী জোয়াদ্দারের পুত্র মঞ্জুরুল জোয়াদ্দার (২৫) এবং রাজা মৃধার পুত্র রাজু মৃধা (২২) ।

এলাকাবাসী সূত্রে জানা গেছে, মঙ্গলবার সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে বরিশাট গ্রামের আজ্জাত আলীর পুত্র মঞ্জুরুল জোয়াদ্দারের নেতৃত্বে ৩টা মোটরসাইকেলে ছয় জন যুবক দেশীয় অস্ত্র-শস্ত্র নিয়ে ছোনগাছা গ্রামের দিদার মণ্ডলের বাড়িতে অনাধিকার প্রবেশ করে তার স্কুল পড়~য়া কন্যাকে পরিবারের লোকজনদের সামনে জোরপূর্বক ধরে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করে। এমতাবস্থায় মেয়েটিসহ পরিবারের লোকজন চিৎকার দিলে এলাকার লোকজন ঘটনাস্থলে দ্রুত ছুটে এসে তিন জনকে দুটি মোটরসাইকেলসহ আটক করে। আটকের পর এলাকার বিক্ষুব্ধ লোকজন আটককৃত বরিশাট গ্রামের আব্দুল জলিলের পুত্র রাসেল (২৮), আজ্জাত আলীর পুত্র মঞ্জুরুল (২৫) ও একই গ্রামের রাজা মৃধার পুত্র রাজুকে (২২) গণধোলাই দিয়ে গুরুতর আহত করে। বিষয়টি উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও বরিশাট গ্রামের সমাজসেবক কাজী তারিকুল ইসলাম জানতে পেরে ঘটনাস্থলে পৌঁছে তাদের আহত অবস্থায় উদ্ধার করে মাগুরা সদর হাসপাতালে ভর্তি করেন। ভর্তির পর রাসেলের অবস্থার অবনতি ঘটলে উন্নত চিকিৎসার জন্য তাকে ঢাকা মেডিক্যালে প্রেরণ করেন। সেখানে রাসেল চিকিত্সাধীন অবস্থায় (১৫ জুন) বুধবার সকালে মারা যায়।

এ বিষয়ে নিহতের পিতা আব্দুল জলিল শেখ বলেন, আমার ছেলে রাসেল ইজি বাইক চালায়। মঙ্গলবার সন্ধ্যায় মঞ্জুরুল আমার ছেলেকে কিছু না বলে ছোনগাছা গ্রামে ডেকে নিয়ে যায়। সেখানে যাওয়ার পর ঐ গ্রামের লোকজন আমার ছেলেকে মারধর করে মারাত্মক আহত করে। আহতবস্থায় রাসেল ঢাকা মেডিক্যালে চিকিত্সারত অবস্থায় মৃত্যুবরণ করে। যারা আমার ছেলে নৃশংসভাবে পিটিয়ে হত্যা করেছে তাদের আমি দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি করি।

ছোনগাছা গ্রামের স্কুল ছাত্রীর মা আয়েশা খাতুন বলেন, আমার মেয়ে খামারপাড়া পাইলট মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে ৯ম শ্রেণিতে পড়ে। সে স্কুলে আসা-যাওয়ার পথে বরিশাট গ্রামের মঞ্জুরুলসহ কয়েক জন বখাটে যুবক প্রায়ই তাকে বিরক্ত করত। বিষয়টি আমরা পরিবার থেকে জানতে পেরে প্রায় পাঁচ মাস তার স্কুলে যাওয়া বন্ধ করে রাখি এবং তার দ্রুত বিয়ের বিষয়ে চেষ্টা করি। ১৫ জুন বুধবার মেয়েটির বিয়ের দিন ধার্য করা হয়। মঞ্জুরুলসহ তার বন্ধুরা বিয়ের বিষয়টি জানতে পেরে (১৪ জুন) মঙ্গলবার সন্ধ্যার দিকে আমার বাড়িতে ঢুকে আমার কন্যাকে জোরপূর্বক মোটরসাইকেলে তুলে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করে। পরে আমার মেয়েকে রক্ষা করতে চিৎকার দিলে প্রতিবেশীসহ গ্রামবাসী ছুটে এসে বখাটেদের হাত থেকে আমার মেয়েকে রক্ষা করে।

ইত্তেফাক/ ইআ