সিলেট-সুনামগঞ্জের ভয়াবহ বন্যায় শোবিজ জগতেও প্রভাব পড়েছে স্বাভাবিকভাবেই। এর ভেতরে দুটি ছবি রিলিজ পেয়েছে। মানবিক কথা বিবেচনা করেই ছবি দুটির পুরো টিম বন্যার্তদের পাশে দাঁড়িয়েছেন। যদিও অধিকাংশ তারকার ফেসবুকে সহমর্মিতার বার্তা অনেক পরে পাওয়া গিয়েছে। তবে কমবেশি সবাই সহমর্মিতার পোস্ট দিয়েছেন।
দেশের শীর্ষ নায়ক শাকিব খান যুক্তরাষ্ট্রে অবস্থান করলেও সংবাদ মাধ্যমে দেশের এই সংকটের খবর পাওয়া মাত্রই বানভাসীদের পাশে দাঁড়ানোর বার্তা দিয়েছেন। একইসঙ্গে ব্যক্তিগতভাবে নিজেও সহমর্মী হয়ে পাশে দাঁড়ানোর কথা বলেছেন। অনন্য মামুন পরিচালিত ‘অমানুষ’ চলচ্চিত্র টিম এক সপ্তাহে বিক্রিত অর্থ সিলেট বন্যার্তদের সহযোগিতায় দান করবেন বলে জানিয়েছেন।
এ প্রসঙ্গে অমানুষ চলচ্চিত্রের অভিনেতা নিরব বলেন, ‘বন্যার খবর পাওয়ামাত্রই আমার প্রযোজক-পরিচালক সিদ্ধান্ত নিয়েছেন যেভাবেই হোক বন্যার্তদের পাশে দাঁড়াবো আমরা এবং সেই সিদ্ধান্ত অনুযায়ীই আমরা অফিসিয়ালি ঘোষণাও দিয়েছি যে, প্রথম সপ্তাহের পুরো টাকা আমরা দান করবো। তবে এত টাকা লগ্নি করে একটি চলচ্চিত্রকেও তো আমরা বন্ধ করে দিতে পারি না। তাই সবার অংশগ্রহণটা সবচেয়ে জরুরি।’
এদিকে, সৈকত নাসির পরিচালিত ‘তালাশ’ মুক্তি পেয়েছে। তবে এই সংকট সময়ে হেলিকপ্টারে চেপে তালাশ ছবির টিমের প্রচারণার বিষয়টি নিয়ে নেটিজেনরা নানা মন্তব্য করছেন। এ বিষয়ে তালাশ নির্মাতা সৈকত নাসির বলেন, ‘বন্যার জন্য তো সরকার আছে। সেখানে আমাদের কী করার আছে? একটি সিনেমা বানাতে ১ থেকে দেড় কোটি টাকা বিনিয়োগ করতে হয়। তা-ছাড়া প্রতিবছর যে আমাদের প্রযোজকদের কোটি কোটি টাকা বন্যার জলের মতো ভেসে যাচ্ছে, সেই টাকা কী সরকার বা যারা সমালোচনা করছে তারা ভতুর্কি দিচ্ছেন? সেই জায়গা থেকে একটা ইসু্য তুলে লাভ নেই। কিছু মানুষ একটা ইসু্য দাঁড় করাবে, কিছু আয় করবে, কিন্তু আমাদের ক্যাশ করার দরকার নেই। তবে হ্যাঁ, মানবিক দিক থেকে যতটুকু সম্ভব বন্যাদুর্গতদের পাশে দাঁড়াবো। আমরা মানবিক বিষয়গুলোর সঙ্গে সিনেমাকে গুলিয়ে ফেলতে বা সাংঘর্ষিক করতে চাই না।’
তিনি আরও বলেন, ‘দেখুন, ২ কোটি ব্যয় করে তো প্রযোজক ১ কোটি আয় করার চিন্তা করবেনই। কারণ লগ্নি না তুলতে পারলে তো তারা পরের প্রজেক্ট শুরু করতে পারবেন না। সেই জায়গায় ব্যবসায়িক চিন্তা সবার থাকবেই। তাই আমি আবারও বলবো, মানবিক দিক আর সিনেমাকে এক করে কারও সমালোচনা না করাই ভালো।’
বন্যা-দুর্যোগ থেকে শুরু করে দেশের যেকোনো প্রাকৃতিক দুর্যোগে সবসময় পাশে দাঁড়িয়েছে ব্যান্ডদলগুলো। ব্যান্ড সংগঠন বামবার সভাপতি রকলিজেন্ড হামিন আহমেদ বলেন, ‘আমরা শুরু থেকে অবজার্ভ করছি। এবং প্রস্ত্ততিও নিচ্ছি। দেশের যেকোনো সংকটে আমাদের উদ্যোগের জন্য কাউকে বলে দিতে হয় না। এদেশে রকস্টাররাই সবচেয়ে প্রথম এগিয়ে আসে, এসেছে সবসময়। এবারও সাংগঠনিকভাবে মানুষের পাশে দাঁড়িয়েছি।’
হামিন আহমেদ আরও বলেন, ‘প্রয়োজনে ফ্লাড এইড কনসার্টের আয়োজনও করবো। আমাদের কারও না কারও বন্ধু, আত্মীয় দুর্গত এলাকায় রয়েছে। তাই সবাই সেই প্রাথমিক সংকটটা মোকাবিলার চেষ্টা করছি আগে। রাষ্ট্রীয় উদ্যোগে বিভাগীয় শহরে সংগীত উৎসবের শিডিউল প্রোগ্রাম ছিল সিলেটে। সেটি সঙ্গত কারণেই স্থগিত করা হয়েছে।’