শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০
The Daily Ittefaq

‘আমরা নদীভাঙন থেকে বাঁচতে চাই’ 

আপডেট : ২১ জুন ২০২২, ১২:০৯

পানি বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে জামালপুরের বকশীগঞ্জে দশানী নদীর ভাঙন বেড়েছে। বিলীন হচ্ছে বসতবাড়ি ও ফসলি জমি। তারপরেও নদীভাঙন প্রতিরোধে কোনো ব্যবস্থা নেই বকশীগঞ্জ উপজেলায়। স্থানীয়রা চেষ্টা করেও ভাঙন ঠেকাতে পারছেন না। এতে পাল্টে যাচ্ছে বকশীগঞ্জ উপজেলার মেরুরচর, সাধুরপাড়া ও নিলাক্ষিয়া ইউনিয়নের মানচিত্র।

বকশীগঞ্জ উপজেলার মানচিত্রবেষ্টিত দশানী, ব্রক্ষ্মপুত্র ও জিঞ্জিরাম নদী। বকশীগঞ্জ উপজেলার মেরুরচর ইউনিয়ন, সাধুরপাড়া ইউনিয়ন, বগারচর ইউনিয়ন ও নীলাক্ষিয়া ইউনিয়নের অবস্থান নদীরপাড়ে। দশানী, ব্রক্ষ্মপুত্র ও জিঞ্জিরাম নদীর মানচিত্রের সঙ্গে মিশে গেছে মেরুরচর ইউনিয়ন, সাধুরপাড়া ইউনিয়ন, বগারচর ইউনিয়ন ও নীলাক্ষিয়া ইউনিয়নের ভূ-খণ্ড। 

পানি বৃদ্ধির সঙ্গে নদ-নদীগুলোতে ভাঙনও বাড়ছে পাল্লা দিয়ে। প্রতিবছর বর্ষাকালে ভাঙন বাড়লেও প্রতিরোধে বকশীগঞ্জ উপজেলায় সরকারিভাবে কোনো উদ্যোগ নেওয়া হয়নি। ফলে ভাঙনের কবলে পড়ে শত শত পরিবার গৃহহীন হয়ে পড়ছে। নদীগর্ভে হারিয়ে যাচ্ছে আবাদি জমি। বাড়ছে ভূমিহীনের সংখ্যা। 

বিগত এক সপ্তাহে মেরুরচর ইউনিয়নের মেরুরচর ইউনিয়নের আউল পাড়া, কলকিহারা, ফকিরপাড়া, মাদারেরচর, মাইছানিরচর, নিলাক্ষিয়া ইউনিয়নের  সাজিমারা ও কুশলনগরসহ মেরুরচর, সাধুরপাড়া ও বগারচর ইউনিয়নের শতাধিক পরিবারের বসতবাড়ি ও ভিটেমাটি নদীগর্ভে বিলীন হয়েছে। বিপুল পরিমাণ আবাদি জমি নদী গ্রাস করেছে। একইসঙ্গে বালি পড়ে আবাদের অযোগ্য হয়ে পড়ছে শত শত একর জমি। 

নদী ভাঙনের কবলে গৃহহীন বকশীগঞ্জ উপজেলার নিলাক্ষিয়া সাজিমারা গ্রামের নহিন্দর শেখ বলেন, ‘চোখের সামনেই আমার বসতঘর ও ভিটেমাটি নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। বর্তমানে আমি গৃহহীন।’

কুশলনগর দক্ষিণ পাড়া গ্রামের জামাল উদ্দিন বলেন, ‘বন্যার শুরুতেই নদীভাঙনে ঘরবাড়ি হারিয়েছি। আমরা নদীভাঙন থেকে বাঁচতে চাই।’
     
মেরুরচর ইউপি চেয়ারম্যান সিদ্দিকুর রহমান বলেন, ‘দশানী ও ব্রক্ষ্মপুত্র নদের ভাঙনে মেরুরচর ইউনিয়ন লণ্ডভণ্ড হয়ে গেছে। স্থায়ী সমাধানে দীর্ঘ মেয়াদী প্রকল্প না নিলে নদীভাঙন প্রতিরোধ করা সম্ভব না। জনগণের জান-মাল ও সম্পদ রক্ষায় নদীভাঙন প্রতিরোধ ব্যবস্থা খুবই জরুরি।’ 

এ ব্যাপারে বকশীগঞ্জ উপজেলার নিলাক্ষিয়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান নজরুল ইসলাম সাত্তার জানান, নিলাক্ষিয়া ইউনিয়নে প্রতিবছর বন্যা ও নদী ভাঙনে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়। পানি বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে ভাঙন শুরু হয়েছে। ইতোমধ্যে সাজিমারা ও কুশলনগর গ্রামে ৯/১০টি বসতবাড়ি ভেঙে গেছে। ১০/১২টি বাড়ি অধিক ঝুঁকিতে রয়েছে। ভাঙন প্রতিরোধে সরকারিভাবে উদ্যোগ না নিলে স্থায়ী সমাধান হবে না। স্থায়ী সমাধানে সরকারি উদ্যোগ জরুরি। 

এ ব্যাপারে বকশীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী অফিসার মুন মুন জাহান লিজা বলেন, ‘ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারে সরকারি সহায়তা অব্যাহত আছে। সরকার জনগণের পাশে থাকবে। স্থায়ী সমাধানের বিভিন্ন পরিকল্পনা চলমান।’

ইত্তেফাক/মাহি