শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০
The Daily Ittefaq

নারীকে মূলধারায় এগিয়ে নিতে বাজেটে নেই বিশেষ উদ্যোগ

আপডেট : ২২ জুন ২০২২, ০৩:৩০

নারীকে মূলধারায় এগিয়ে নিতে বিশেষ উদ্যোগ বাজেটে নেই। নারীর শিক্ষা, স্বাস্থ্য, কর্মসংস্থান এবং নারীর প্রতি সহিংসতা প্রতিরোধে সুনির্দিষ্ট বাজেট বরাদ্দ করার দাবি জানিয়েছে বাংলাদেশ মহিলা পরিষদ। সংগঠনের নেতৃবৃন্দ বলেছেন, জেন্ডার বাজেটে নারীকে মূলধারায় এগিয়ে আনতে বিশেষ উদ্যোগ বাজেটে নেই। সম্প্রতি কোভিড পরিস্থিতি স্তিমিত হলেও কোভিডের অভিঘাত নারীর শিক্ষা, স্বাস্থ্য, কর্মসংস্থানসহ সকল ক্ষেত্রের অর্জনে বিরূপ প্রতিক্রিয়া তৈরি করেছে।

গতকাল মঙ্গলবার রাজধানীর সেগুনবাগিচায় মহিলা পরিষদের ‘আনোয়ারা বেগম-মুনিরা খান’ মিলনায়তনে ‘বাজেট ২০২২-২০২৩ :জেন্ডার সংবেদনশীলতা পর্যালোচনা’—বিষয়ক আলোচনাসভায় বক্তারা এসব কথা বলেন। বাংলাদেশ মহিলা পরিষদ এই আলোচনাসভার আয়োজন করে।

প্রধান অতিথির বক্তব্যে অর্থ মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত স্থায়ী কমিটির চেয়ারম্যান আবুল হাসান মাহমুদ আলী এমপি বলেন, নারীর অধিকার অর্জনে আন্দোলন চালিয়ে যেতে হবে। উন্নয়ন কার হচ্ছে এবং উন্নয়নে কোনো লিকেজ আছে কি না, তা দেখতে হবে। তিনি আরো বলেন, বাজেট বাস্তবায়নে নানা চ্যালেঞ্জ রয়েছে। এই চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় সবাইকে সমন্বিতভাবে কাজ করার আহ্বান জানান। বিশেষ অতিথির বক্তব্যে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের চেয়ারম্যান ড. এম এম আকাশ বলেন, প্রতিটি মন্ত্রণালয়ের প্রকল্প আছে। নারীদের জন্য বরাদ্দ কতটা তা বের করার কিছু উপায় আছে। উদাহরণস্বরূপ নারীর জন্য তৈরি করা অবকাঠামো যেমন হাসপাতাল, স্কুল থেকে তারা কতজন সার্ভিস পাচ্ছে তা মনিটরিং করা এবং তার জন্য বরাদ্দ কত? তা দেখা যেতে পারে। দ্বিতীয়ত জেন্ডার গ্যাপে বাংলাদেশের অবস্থান ভালো। রাজনীতিতে নারীরা এগিয়েছে বলা হচ্ছে। কিন্তু কতটা এগিয়েছে তা দেখতে হবে।

কেয়ার বাংলাদেশের অ্যাক্টিং ডিরেক্টর (উইমেন অ্যান্ড গার্লস এমপাওয়ারমেন্ট প্রোগ্রাম) রওনক জাহান বলেন, নারী ও পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠীর জন্য বাজেটে বিশেষ উদ্যোগ নেই। সামাজিক নিরাপত্তা খাতে বরাদ্দ কমেছে এবং নারীবান্ধব আইনের প্রকৃত বাস্তবায়নের জন্য যে সম্পদ বরাদ্দ দরকার তা বাজেটে নেই বলে উল্লেখ করেন তিনি। নারী ও কন্যাশিশুর প্রায়রিটি কি তা বিবেচনায় নিতে হবে, আইনের প্রভিশন ও বাস্তবায়নের জন্য পর্যাপ্ত বরাদ্দ থাকতে হবে।

সভাপতির বক্তব্যে মহিলা পরিষদের সভাপতি ডা. ফওজিয়া মোসলেম বলেন, অর্থনীতিতে নারীর অংশগ্রহণ বৃদ্ধি পেলেও রাজনীতিতে নারীর সরাসরি অংশগ্রহণ এখনো সক্রিয় নয়। স্থানীয় সরকার পর্যায়ে নারীর কাজের ক্ষেত্রে বাধা আছে। জেন্ডার বাজেটে নারীকে মূলধারায় এগিয়ে আনতে বিশেষ উদ্যোগ বাজেটে নেই। সম্প্রতি কোভিড পরিস্থিতি স্তিমিত হলেও কোভিডের অভিঘাত নারীর শিক্ষা, স্বাস্থ্য, কর্মসংস্থানসহ সব ক্ষেত্রের অর্জনে বিরূপ প্রতিক্রিয়া তৈরি করেছে। তিনি শিক্ষা, স্বাস্থ্য, কর্মসংস্থান, নারীর প্রতি সহিংসতা প্রতিরোধে সুনির্দিষ্ট বাজেট বরাদ্দ রাখার দাবি জানান।

মূল প্রবন্ধে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের অধ্যাপক শরমিন্দ নিলোর্মী বলেন, মুদ্রাস্ফীতি একটি বড় চ্যালেঞ্জ। শিক্ষায় ঝরে পড়া কমাতে এবারের জেন্ডার বাজেটে পর্যাপ্ত বরাদ্দ নেই, পরিকল্পনা নেই। পরিস্থিতি পরিবর্তনে আমদানি ও রপ্তানির মধ্যে যে গ্যাপ আছে তা কমাতে হবে। সামাজিক নিরাপত্তা, জননিরাপত্তার ক্ষেত্রসহ কয়েকটি ক্ষেত্রে বরাদ্দ কমেছে। তিনি আরো বলেন, আমাদের নিজের টাকায় ঋণ পরিশোধ করতে হয়। কাজেই মানবসম্পদের পূর্ণ ব্যবহার নিশ্চিত করতে হবে এবং দাতা সংস্থার প্রতি নির্ভরতা কমাতে হবে, গার্মেন্টসের রপ্তানি আয় বৃদ্ধি করতে হবে।

ইত্তেফাক/ইআ