শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০
The Daily Ittefaq

কক্সবাজারে ভারী বৃষ্টিতে পাহাড়ধসের আশঙ্কা 

আপডেট : ২৪ জুন ২০২২, ০৯:০৬

কক্সবাজারে সপ্তাহখানেক ধরে থেমে থেমে ভারী বৃষ্টি হচ্ছে। টানা বর্ষণে জেলা জুড়ে পাহাড়ধস আতঙ্ক বিরাজ করছে। গত রবিবার মহেশখালীতে ধসে পড়া পাহাড়ের মাটির নিচ থেকে এক শিশুর লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। কক্সবাজার জেলা প্রশাসন ও স্থানীয় পৌরসভাগুলো মাইকিং করলেও ঝুঁকিপূর্ণ এলাকায় বসবাসকারী মানুষকে তাদের আবাসস্থল ছেড়ে সরে যেতে দেখা যায়নি। কক্সবাজারের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) মো. জাহিদ ইকবাল বলেন, সপ্তাহখানেক ধরে মাঝারি ও ভারী বর্ষণ চলছে। এতে ভূমিধসে প্রাণহানির আশঙ্কা রয়েছে। তাই মানুষকে পাহাড় ছাড়তে অনুরোধ জানিয়ে এলাকায় মাইকিং করা হচ্ছে। স্বেচ্ছায় তারা সরে না এলে বিকল্প ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

কক্সবাজার পৌরসভার মেয়র (ভারপ্রাপ্ত) হেলাল উদ্দিন কবির বলেন, ঝুঁকিপূর্ণ এলাকায় বসবাসকারীদের সরিয়ে নিতে পৌরসভার পক্ষ থেকে মাইকিং করা হচ্ছে। কিন্তু পাহাড়ে বসবাসরত লোক জনের কাছ থেকে সাড়া পাওয়া যাচ্ছে না। বৃষ্টি অব্যাহত থাকলে যে কোনো মুহূর্তে পাহাড় ধসে প্রাণহানির আশঙ্কা রয়েছে। তিনি আরো বলেন, পাহাড় কাটার মাটি বৃষ্টির পানির সঙ্গে নেমে শহরের নালা-কালভার্ট ভরাট হচ্ছে। এতে পানির প্রবাহ বাধাগ্রস্ত হয়ে সয়লাব হয় শহরের অলিগলি। দুর্ভোগ বাড়ছে মানুষের। প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী, কক্সবাজার পৌরসভার অন্তত ১২টি পাহাড়ে বাস করছে আড়াই লাখের বেশি মানুষ। এর মধ্যে পাহাড়ধসের ঝুঁকিতে রয়েছে অন্তত ৪০ হাজার মানুষ। ভারী বর্ষণ অব্যাহত থাকলে প্রাণহানির আশঙ্কা রয়েছে। কক্সবাজার শহরতলির ফাতেরঘোনা, বৈদ্যঘোনা, মোহাজেরপাড়া, লাইটহাউস, ঘোনারপাড়া, কলাতলীর উত্তর আদর্শগ্রাম, দক্ষিণ আদর্শগ্রাম, চন্দ্রিমার ঘোনা, বখতিয়ার ঘোনা, লারপাড়া, বাসটার্মিনাল এলাকা, বাদশাঘোনা, পাহাড়তলী ও খাজামঞ্জিল পাহাড়ে ও পাহাড়ের খাদে রয়েছে অসংখ্য ঝুঁকিপূর্ণ বসতি। সেভ দ্য নেচার অব বাংলাদেশের চেয়ারম্যান মোয়াজ্জেম রিয়াদ বলেন, বৃষ্টি শুরু হলেই কেবল মাইকিং করা হয়। ঝুঁকিপূর্ণ এলাকায় বসবাসকারীদের সরে নিরাপদ স্থানে সরে যেতে বলা হয়। এভাবে পরিস্থিতি সামাল দেওয়া সম্ভব নয়। কক্সবাজারের স্বার্থে পাহাড়ে অবৈধ বাসকারীদের সরিয়ে নিতে হবে। উচ্ছেদ করতে হবে অবৈধ স্থাপনা।

পরিবেশবাদী সংগঠনগুলোর সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, গত এক দশকে কক্সবাজারে একাধিক পাহাড়ধসের ঘটনায় ছয় সেনাসদস্যসহ অন্তত ৯৮ জনের মৃতু্য হয়েছে। সর্বশেষ রবিবার পাহাড় ধসে মহেশখালীতে এক শিশু মারা যায়। ভারী বর্ষণে পাহাড়ের বিভিন্ন অংশে ফাটল ধরে ভূমিধসের ঘটনা ঘটে। পাহাড় কাটার কারণে পাহাড় ধসের ঝুঁকি বাড়ছে। পাহাড় কাটা রোধ করলেই ধসের ঘটনা কমে যাবে। পাহাড়ে অভিযানের পর ফলোআপ করে না পরিবেশ অধিদপ্তর বা জেলা প্রশাসন। বর্ষা এলেই মাইকিং করে দায়িত্ব শেষ করে। শুষ্ক মৌসুমেই পরিকল্পনা নিয়ে ঝুঁকিপূর্ণ বসবাসকারীদের সরাতে হবে।

ইত্তেফাক/কেকে