মঙ্গলবার, ২৬ সেপ্টেম্বর ২০২৩, ১১ আশ্বিন ১৪৩০
দৈনিক ইত্তেফাক

বোরকা পরে ঘরে ঢুকে স্ত্রী-শ্বশুর-শাশুড়িকে ‘কুপিয়ে হত্যা’

আপডেট : ২৪ জুন ২০২২, ১৩:৫৬

শেরপুরের শ্রীবরদীতে পারিবারিক কলহের জেরে শ্বশুর, শাশুড়ি ও জ্যাঠাশ্বশুর ও স্ত্রীসহ  ৪ জনকে কুপিয়ে হত্যার অভিযোগ উঠেছে জামাই মিন্টু মিয়ার (৪৩) বিরুদ্ধে। বৃহস্পতিবার (২৩ জুন) রাত সাড়ে ৮টার দিকে উপজেলার কাকিলাকুড়া ইউনিয়নের পুটল গ্রামে ওই ঘটনা ঘটে। প্রত্যক্ষদর্শীদের বরাত দিয়ে পুলিশ জানায়, বোরকা পরে ঘরে ঢুকে এলোপাথাড়ি কুপিয়ে পালিয়ে যায় অভিযুক্ত মিন্টু মিয়া। 

নিহতরা হলেন মিন্টু মিয়ার স্ত্রী মনিরা বেগম (৪০), শাশুড়ি শেফালী বেগম (৬০) ও জ্যাঠাশ্বশুর নুর মোহাম্মদ ওরফে মাহমুদ হাজী (৬৫)। শ্বশুর মনু মিয়া (৪৬)। ওই ঘটনায় আহত হয়েছেন আরও ৩ জন। আহতদের গুরুতর অবস্থায় ময়মনসিংহ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।

এদিকে রাতেই ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন শেরপুরের পুলিশ সুপার হাসান নাহিদ চৌধুরী, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) মোহাম্মদ হান্নান মিয়া, সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার (নালিতাবাড়ী সার্কেল) আফরোজা নাজনীনসহ পিবিআই, সিআইডি ও র‌্যাবের উর্ধ্বতন কর্মকর্তারা।

পুলিশ ও নিহতদের স্বজনদের সূত্রে জানা যায়, প্রায় ১৭ বছর আগে শ্রীবরদীর পুটল গ্রামের মনু মিয়ার মেয়ে মনিরা বেগমের বিয়ে হয় পার্শ্ববর্তী গেরামারা গ্রামের আব্দুল হাইয়ের ছেলে মিন্টু মিয়ার সঙ্গে। তাদের সংসারে ২ সন্তান রয়েছে। বেশ কিছুদিন আগে মিন্টু মিয়া কোন কাজকর্ম না করায় সংসারে শুরু হয় পারিবারিক কলহ।

এ ঘটনার জেরে গত রমজান মাসের বাপের বাড়ি চলে আসেন মনিরা বেগম। এরপর মিন্টু কয়েকদিন স্ত্রী মনিরা বেগমকে নিতে শ্বশুরবাড়ি এলেও মনিরা বেগম স্বামীর বাড়ি যাননি।

স্বজনরা আরো জানায়, বৃহস্পতিবার (২৩ জুন) রাত সাড়ে ৮টার দিকে মিন্টু মিয়া বোরকা পরে তার শ্বশুরবাড়িতে এসে। এসময় এলোপাথাড়িভাবে কুপিয়ে তার স্ত্রী মনিরা বেগম, শ্বাশুরি শেফালী বেগম ও জ্যাঠাশ্বশুর নুর মোহাম্মদ ওরফে মাহমুদ হাজী, শ্বশুর মনু মিয়া (৭৫), বাচ্চুনী বেগম (৫২) ও শাহাদাৎ হোসেন (৪০)সহ ৬ জনকে আহত করে। এতে ঘটনাস্থলেই মারা যান মনিরা বেগম। 

পরে স্থানীয়রা বাকি ৫ জনকে উদ্ধার করে পার্শ্ববর্তী বকশীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মাহমুদ হাজী ও শেফালী বেগমকে মৃত ঘোষণা করেন। অপর ৩ জনকে গুরুতর অবস্থায় ময়মনসিংহ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়। শুক্রবার সকালে ময়মনসিংহ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মনু মিয়ার মৃত্যু হয়। 

নিহতদের মধ্যে ২ জনের লাশ বকশিগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে রয়েছে। এক জনের লাশ ময়মনসিংহে। একজনের লাশ উদ্ধার করেছে শ্রীবরদী থানায় পুলিশ। মিন্টু মিয়ার ব্যবহৃত বোরকাটি পাশের একটি ক্ষেত থেকে জব্দ করা হয়েছে।

এ ব্যাপারে শ্রীবরদী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা বিপ্লব কুমার বিশ্বাস জানান, প্রাথমিকভাবে জানা গেছে পারিবারিক কলহের জের ধরে মিন্টু মিয়া তাদের কুপিয়ে হত্যা করেছে। মিন্টুকে গ্রেফতার করতে অভিযান চলছে। ওই ঘটনায় পরবর্তী আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণের প্রক্রিয়া চলছে।

ইত্তেফাক/এসজেড