বিমানবন্দরের কর্মী সংকট দূর করতে দ্রুতগতিতে বিদেশি কর্মী নিয়োগ দিতে চায় জার্মান সরকার। সে লক্ষ্যে কয়েক হাজার কর্মীর কাজের অনুমতিপত্র ও ভিসা নিয়ে কাজ চলছে।
এইসব কর্মীদের বেশিরভাগই আসবেন তুরস্ক থেকে। জার্মান মন্ত্রীদের আশা, এর ফলে গ্রীষ্মে শুরু হওয়া ভ্রমণ জটিলতা এবং ভ্রমণকারীদের ভোগান্তি কমানো সম্ভব হবে।
করোনার লকডাউন ও বিধিনিষেধে প্রায় দুই বছর পর্যটন খাত বন্ধ থাকার পর এবছর গ্রীষ্মে বিমানের টিকেটের চাহিদা আকাশচুম্বী। এত বেশি পরিমাণ চাহিদা মেটাতে হিমশিম খাচ্ছে বিমানবন্দরগুলো। ফলে দীর্ঘ সময় যাত্রীদের লম্বা লাইনে দাঁড়িয়ে থাকতে হচ্ছে। অনেক ক্ষেত্রে ফ্লাইট বাতিল করতে হচ্ছে এয়ারলাইন্সগুলোকে।
শ্রমমন্ত্রী হুবের্টাস হাইল এক সংবাদ সম্মেলনে জানিয়েছেন, ‘‘দীর্ঘ মহামারির পর অনেকেই তাদের ছুটিতে ভ্রমণের পরিকল্পনা করেছেন। ফলে এটা খুবই দুঃখজনক যে তাদের বিমানবন্দরে ভোগান্তির শিকার হতে হচ্ছে।’’
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ন্যান্সি ফ্যাসার সংবাদ সম্মেলনে জানিয়েছেন, জার্মানির বিমান পরিবহন খাতে বিমানবন্দরে কাজ করার অভিজ্ঞতা রয়েছে, এমন বিদেশি কর্মীদের নিয়োগ দেয়ার পরিকল্পনা করা হচ্ছে। এরা আসবেন মূলত তুরস্ক থেকেই। ব্যাগেজ হ্যান্ডলিংসহ অন্যান্য কাজে বিমানবন্দরের গ্রাউন্ড ক্রুদের সঙ্গে কাজ করবেন তারা।
তিনি জানিয়েছেন, জার্মানির অভ্যন্তরীণ কর্মীদের মতোই কাজের আগে একই ধরনের নিরাপত্তা যাচাইয়ের প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে যেতে হবে।
শ্রমমন্ত্রী জানিয়েছেন, কিছু কিছু এয়ারলাইন্সও এজেন্সির মাধ্যমে কর্মী নিয়োগ করতে চায়। তবে এয়ারলাইন্সকে এসব কর্মী সরাসরি নিয়োগ দিতে হবে এবং জার্মান আইন অনুসারে বেতন দিতে হবে।
হাইল এই কর্মী সংকটের জন্য এয়ারলাইন্স এবং বিমানবন্দর অপারেটরদের দায়ী করেছেন। তিনি বলেন, মহামারির সময় অনেক বেশি সংখ্যক কর্মীকে ছাঁটাই করা হয়েছে, যারা পার্সেল ডেলিভারিসহ নানা খাতে এখন কাজ করছে।
তিনি বলেন, ‘‘সংকট নিরসনে এইসব কোম্পানিগুলোরই ব্যবস্থা নেয়া উচিত ছিল। এখন আমরা দেখতে পাচ্ছি তাদের নেয়া ব্যবস্থা পর্যাপ্ত ছিল না।''
জার্মান ফ্ল্যাগশিপ ক্যারিয়ার লুফটহানসার প্রধান নির্বাহী কার্সটেন শ্পোর কর্মী এবং যাত্রীদের কাছে এই ভোগান্তির জন্য ক্ষমা চেয়েছেন। তিনি বলেন, মহামারির সময় অর্থ সাশ্রয় করে প্রতিষ্ঠানকে বাঁচাতে গিয়ে অনেক ভুল উদ্যোগ নিয়েছে প্রতিষ্ঠানটি।
ছুটি কাটাতে যাওয়া যাত্রীদের ভোগান্তি কমাতে সমায়িক ব্যবস্থা হিসাবে কর্মী নিয়োগে সরকার হস্তক্ষেপ করেছে বলে জানিয়েছেন শ্রমমন্ত্রী। তিনি বলেন, ‘‘এটা দীর্ঘকালীন কোনো ব্যবস্থা নয়। ভালো কর্ম পরিবেশ এবং বেতনের মাধ্যমে চাকরি দানকারী প্রতিষ্ঠানকেই কর্মীদের চাকরিতে থাকার ব্যাপারটি নিশ্চিত করতে হবে।’’