বৃহস্পতিবার, ২৮ সেপ্টেম্বর ২০২৩, ১৩ আশ্বিন ১৪৩০
দৈনিক ইত্তেফাক

সয়াবিনের দাম কমানোর প্রভাব পড়েনি বাজারে

আপডেট : ২৩ জুলাই ২০২২, ০৮:০০

সয়াবিন তেলের দাম কমানোর সরকারি ঘোষণার প্রভাব নেই বাজারে। গত সপ্তাহে বাণিজ্য মন্ত্রণালয় প্রতি লিটার বোতলজাত সয়াবিন তেলে ১৪ টাকা কমালেও খুচরা বাজারে এর প্রভাব নেই। বেশির ভাগ দোকানেই বাড়তি দরে তেল বিক্রি হচ্ছে।

খুচরা ব্যবসায়ীরা বলেছেন, সর্বশেষ গত বৃহস্পতিবার কোম্পানিগুলো যে বোতলজাত তেল সরবরাহ করেছে তাতেও দাম কমানোর আগের দরই লেখা আছে। অথচ এর আগে দাম বাড়ালে তারা দ্রুতই বাড়তি দর লেখা তেল সরবরাহ করত। কিন্তু এবার দাম কমানোর ঘোষণার এক সপ্তাহ পার হলেও এখনো সব বাজারে নতুন দরের তেল সরবরাহ করা হয়নি। এদিকে সংশ্লিষ্ট একটি সূত্র জানিয়েছে, পূর্বের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী ভেজাল কমাতে আগামী ৩১ জুলাই থেকে খোলা সয়াবিন তেল বিক্রি বন্ধ হচ্ছে। খোলা পাম অয়েল বিক্রি বন্ধ হবে ৩১ ডিসেম্বর থেকে। এ ব্যাপারে কঠোর অবস্থানে শিল্প ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয়। ফলে বোতলজাত সয়াবিন তেলের চাহিদা বাড়বে। সূত্রটি বলেছে, খোলা তেল বিক্রি বন্ধ হয়ে গেলে প্যাকেটজাত তেলের দাম ২ থেকে ৪ শতাংশ পর্যন্ত বাড়তে পারে। তাই একটি অসাধু চক্র নতুন দরের বোতলজাত সয়াবিন তেল সরবরাহে গড়িমশি করছে।

উল্লেখ্য, বিশ্ববাজারে ভোজ্য তেলের দাম কমায় গত ১৭ জুলাই বাণিজ্য মন্ত্রণালয় আমদানিকারক ও মিল মালিকদের সঙ্গে আলোচনা করে প্রতি লিটার বোতলজাত সয়াবিন তেলের দাম ১৪ টাকা কমিয়ে ১৮৫ টাকা ও ৫ লিটারের বোতল ৯৮০ টাকা থেকে কমিয়ে ৯১০ টাকা নির্ধারণ করে। পরের দিন ১৮ জুলাই থেকেই নতুন দর কার্যকর হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু ভোজ্য তেল পরিশোধন ও বাজারজাতকারী প্রতিষ্ঠানগুলোর মালিকদের সংগঠন বাংলাদেশ ভেজিটেবল অয়েল রিফাইনার্স অ্যান্ড বনস্পতি ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যাসোসিয়েশন তা তিন দিন পর কার্যকরের ঘোষণা দেয়। এ হিসেবে গত বৃহস্পতিবার থেকে নতুন দরে বোতলজাত সয়াবিন তেল পাওয়ার কথা। কিন্তু তা পুরোপুরি বাস্তবায়ন হয়নি।

গতকাল শুক্রবার রাজধানীর শান্তিগর ও তুরাগ এলাকার নতুন বাজারসহ কয়েকটি বাজারে খোঁজ নিয়ে এ তথ্য জানা যায়। তুরাগ এলাকার একটি ডিপার্টমেন্টাল স্টোরের বিক্রেতা সাদ্দাম হোসেন বলেন, দাম কমার পর নতুন দরের বোতলজাত সয়াবিন তেল আমরা এখনো পাইনি। তবে কোম্পানিগুলো থেকে জানানো হয়েছে, খুব শিগগির নতুন দরের তেল সরবরাহ করা হবে। বর্তমানে বাজারে প্রতি লিটার বোতলজাত সয়াবিন ১৯০ থেকে ১৯৫ টাকা ও পাঁচ লিটারের বোতলজাত সয়াবিন ৯৫০ থেকে ৯৬০ টাকায় বিক্রি করা হচ্ছে। শান্তিনগর বাজারের নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন বিক্রেতা বলেন, এখনো নতুন দরের তেল সরবরাহ করা হয়নি। তেল না পেলে আমরা কীভাবে কম দামে বিক্রি করব। কম দামের তেল সরবরাহ করা হলে আমরা সেই দরেই তেল বিক্রি করব।

এদিকে নতুন দর অনুযায়ী খুচরা বাজারে প্রতি লিটার খোলা সয়াবিন সর্বোচ্চ ১৬৬ টাকায় বিক্রি হওয়ার কথা। কিন্তু এ দরে খোলা সয়াবিন পাওয়া যাচ্ছে না। সরকারের বিপণন সংস্থা ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশ (টিসিবি) তাদের প্রতিবেদনে বলেছে, গতকাল খুচরা বাজারে প্রতি লিটার খোলা সয়াবিন ১৬৬ থেকে ১৭৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

এ প্রসঙ্গে জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক এ এইচ এম সফিকুজ্জামান গতকাল ইত্তেফাককে বলেন, দেশের ব্যবসায়ীরা দাম বাড়াতে যতটা তত্পর থাকেন, দাম কমাতে ততটা নয়। তবে আমরা সয়াবিনের দাম কমার পরে নতুন দরে মিলগুলো থেকে তেল সরবরাহ করা হচ্ছে কি না, তা মনিটর করছি। তবে এখনো অনেক বাজারে নতুন দরের বোতলজাত তেল সরবরাহ করা হয়নি, এটা হয়তো আরো দুই-এক দিন সময় লাগবে। এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ভোক্তারা এখন আগের চেয়ে অনেক বেশি সচেতন। আগের চেয়ে অনেক বেশি অভিযোগ তাদের কাছ থেকে আমরা পাই। তাদের এই সচেতনতাই তাদের অধিকার নিশ্চিত করবে।

ইত্তেফাক/এএইচপি