বৃহস্পতিবার, ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০
The Daily Ittefaq

রাশিয়ার আগ্রাসনের মুখে একজোট নর্ডিক দেশগুলি

আপডেট : ১৬ আগস্ট ২০২২, ১৪:৫০

ইউক্রেন যুদ্ধের প্রেক্ষাপটে আরও নিবিড় সহযোগিতার পথে অগ্রসর হচ্ছে ইউরোপের নর্ডিক অঞ্চলের পাঁচটি দেশ৷ জার্মানিও নর্ডিক দেশগুলির সঙ্গে আরও নিবিড় সম্পর্ক গড়ে তুলতে আগ্রহী৷ ইউক্রেনের উপর রাশিয়ার হামলা ইউরোপের অনেক দেশকে নতুন করে নিরাপত্তা নিয়ে ভাবনাচিন্তা করতে বাধ্য করছে৷ উত্তরের নর্ডিক দেশগুলিও সেই প্রবণতায় ব্যতিক্রম নয়৷ ফিনল্যান্ড ও সুইডেন সামরিক জোট ন্যাটোয় যোগ দেবার পথে এগিয়ে চলেছে৷ 

এবার নরওয়ে, সুইডেন, ফিনল্যান্ড, ডেনমার্ক ও আইসল্যান্ড নিরাপত্তা ও প্রতিরক্ষার ক্ষেত্রে পারস্পরিক সহযোগিতা আরও বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নিলো৷ নরওয়ের রাজধানী অসলোয় পাঁচটি নর্ডিক দেশের শীর্ষ নেতারা সোমবার বাড়তি সহযোগিতার রূপরেখা তুলে ধরেন৷ সেই লক্ষ্যে পররাষ্ট্র ও প্রতিরক্ষা মন্ত্রী পর্যায়ে আরও সম্ভাবনা খতিয়ে দেখবে দেশগুলি৷ জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলা ও জ্বালানির ক্ষেত্রেও সহযোগিতা বাড়াতে চায় নর্ডিক দেশগুলি৷ 

নরওয়ের প্রধানমন্ত্রী ইয়োনাস গার স্ট্যোরে বলেন, নর্ডিক দেশগুলির সহযোগিতা বর্তমানে সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব পাচ্ছে৷ জার্মান চ্যান্সেলর ওলাফ শলৎসও নর্ডিক শীর্ষ বৈঠকে যোগ দেন৷ 

উল্লেখ্য, জার্মান সরকার গত কয়েক মাস ধরে নর্ডিক দেশগুলির সঙ্গে সহযোগিতা আরও বাড়ানোর উদ্যোগ নিয়ে চলেছে৷ রাশিয়া থেকে গ্যাস আমদানির উপর নির্ভরতা কমাতে বিশেষ করে নরওয়ে থেকে আরও গ্যাস কিনছে জার্মানি৷ জুন মাসের মাঝামাঝি সময় থেকে নরওয়েই জার্মানির সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ গ্যাস সরবরাহকারী হয়ে উঠেছে৷ 

শলৎস সে দেশের ভূমিকার প্রশংসা করে বলেন, জার্মানি তথা ইউরোপে জ্বালানি সরবরাহের ক্ষেত্রে নরওয়ে অত্যন্ত নিরাপদ, গণতান্ত্রিক ও নির্ভরযোগ্য সহযোগী৷ পুনর্ব্যবহারযোগ্য জ্বালানির ক্ষেত্রেও দুই দেশ নিবিড়ভাবে কাজ করতে চায় বলে জার্মান চ্যান্সেলর উল্লেখ করেন৷ রাশিয়ার আগ্রাসনের মোকাবিলা করতে ইউরোপীয় ইউনিয়ন, ন্যাটো এবং এখন নর্ডিক দেশগুলি আরও সংঘবদ্ধ হলেও কিছু বিষয়ে মতপার্থক্য থেকে যাচ্ছে৷ ইইউ দেশগুলিতে রাশিয়ার বিমানের উপর নিষেধাজ্ঞার কারণে আপাতত সে দেশ থেকে বেশি মানুষ ইউরোপে আসতে পারছেন না৷ 

কিন্তু দীর্ঘ স্থলসীমান্তের কারণে ফিনল্যান্ডে রুশ পর্যটকদের ঢল নেমেছে৷ ফিনল্যান্ড তাই রুশ নাগরিকদের শেঙেন ভিসা বাতিল করার দাবি জানাচ্ছে৷ সে দেশের প্রধানমন্ত্রী সানা মারিন বলেন, রুশ নাগরিকরা এই যুদ্ধ শুরু না করলেও যুদ্ধের প্রতি সমর্থন দেখাচ্ছেন৷ ফলে এস্টোনিয়ার মতো ফিনল্যান্ডও রুশ নাগরিকদের ইউরোপে প্রবেশ বন্ধ করতে চায়৷ মারিনের মতে, ইউক্রেনে যুদ্ধের মাঝে রুশ পর্যটকদের ইউরোপে প্রমোদ ভবন একেবারেই মেনে নেওয়া যায় না৷ 

জার্মান চ্যান্সেলর শলৎস অবশ্য রুশ নাগরিকদের উপর এমন ঢালাও নিষেধাজ্ঞার বিরোধিতা করে বলেন, রাশিয়ার অনেক মানুষ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুটিনের প্রশাসনের আওতা থেকে পালানোর চেষ্টা করছেন৷ তাদের জন্য ইউরোপের দরজা বন্ধ করা উচিত হবে না৷ শলৎসের মতে, এটা রুশ জনগণের যুদ্ধ নয়, শুধু পুটিনের যুদ্ধ৷

ইত্তেফাক/এএইচপি