পাইকগাছায় বেড়িবাঁধ ভেঙে বিস্তীর্ণ এলাকা প্লাবিত হয়েছে। সোমবার (১৫ আগস্ট) প্রবল জোয়ারে উপজেলার সোলাদানা ইউনিয়নের পানি উন্নয়ন বোর্ডের ২৩ নম্বর পোল্ডারের বয়ারঝাঁপা এলাকায় ভাঙ্গাহাড়িয়া নামক স্থানে বাঁধের প্রায় ৩০ ফুট ভেঙে লোকালয়ে পানি প্রবেশ করেছে। ফলে বিস্তীর্ণ এলাকা প্লাবিত হয়েছে। ভেসে গেছে কয়েকশ ছোটবড় মাছের ঘের। অনেক বাড়ির উঠানে পানি ঢুকে পড়েছে। বঙ্গোপসাগরে লঘুচাপ এর প্রভাবে পাইকগাছায় মাঝারি থেকে ভারী বৃষ্টিপাত অব্যাহত রয়েছে। গত কয়েক দিনের জোয়ারের পানির চাইতে শনি ও রবিবারের জোয়ারের পানির উচ্চতা ছিল অনেক বেশি।
সোলাদানা ইউনিয়ন পরিষদের ৮ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য আব্দুল্লাহ আল মামুন বলেন, দুপুরে জোয়ারে শিবসা নদীর পানি স্বাভাবিকের চেয়ে বৃদ্ধি পেয়ে বাঁধ ভেঙে লোকালয়ে পানি প্রবেশ করছে। আমরা এলাকাবাসী বাঁধের পাশে অপেক্ষা করছি, ভাটার সময়ে বাঁধ নির্মাণের কাজে নেমে পড়ব। তিনি আরো বলেন, বাঁধ নির্মাণ সম্ভব না হলে রাতের জোয়ারে এ ইউনিয়নের প্রায় পাঁচ গ্রাম পানিতে তলিয়ে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। ইউপি চেয়ারম্যান আব্দুল মান্নান গাজী জানান, ইউনিয়নের শিবসা নদীর তীরবর্তী বয়ারঝাঁপা এলাকায় ভাঙ্গাহাড়িয়া নামক স্থানে ওয়াপদার বাঁধটি ভেঙে গিয়ে প্লাবিত হয়েছে।
অপরদিকে কপোতাক্ষের জোয়ারের পানিতে প্লাবিত হয়েছে উপজেলার মাহমুদকাটি, রাড়ুলী জেলেপাড়া, কাটিপাড়া জেলেপল্লি, বোয়ালিয়া জেলেপাড়া, সোলাদানা, বাইশারাবাদ গুচ্ছগ্রাম। তাছাড়া পাইকগাছা শহর রক্ষা বাঁধ উপচে প্লাবিত হয়েছে পৌর বাজার। কপোতাক্ষ নদের তীরবর্তী গ্রামগুলো ভাঙনের মুখে পড়েছে।
৭ নম্বর ওয়ার্ড ইউপি সদস্য শংকর বিশ্বাস জানান, রবিবার জোয়ারের পানিতে মাহমুদ কাটির জেলেপল্লিসহ রামনাথপুর এলাকার ঘরবাড়ি তলিয়ে যাওয়ার অবস্থা। বসতবাড়ির উঠানে হাঁটুপানি। স্বাভাবিকের চেয়ে অন্তত তিন ফুটের বেশি পানি বেড়েছে, বেড়িবাঁধ উপচে পানি ঢুকে পড়েছে। তলিয়ে গেছে বসতবাড়ি, রাস্তাঘাট, মাছের ঘের, পুকুর, ফসলি জমি। নদীতে প্রবল স্রোত থাকায় তীব্র ঢেউয়ের ধাক্কায় বেড়িবাঁধে ভাঙন দেখা দিয়েছে।
পাইকগাছা পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপ-সহকারী প্রকৌশলী মো. রাজু হাওলাদার জানান, বাঁধ ভেঙে যাওয়ার খবর পেয়ে প্লাবিত এলাকা ঘুরে দেখেছি। পাইকগাছায় প্রায় ৩০ কিলোমিটার বেড়িবাঁধ ঝুঁকিপূর্ণ রয়েছে।
পাইকগাছা উপজেলা নির্বাহী অফিসার মমতাজ বেগম বলেন, প্রবাল জোয়ারে পানি উন্নয়ন বোর্ডের ঝুঁকিপূর্ণ ওয়াপদার বেড়িবাঁধ ভেঙে পানি প্রবেশ করেছে। ভাটার সময় বাঁধের কাজ শুরু করা হবে। বাঁধ নির্মাণের জন্য প্রয়োজনীয় জিনিস পাঠানো হয়েছে।