অপূর্ণ সকাল
শফিক ইমতিয়াজ
আজ এক আনন্দসন্ধ্যায়
কোনো এক নিমন্ত্রণে হঠাত্ তোমার সঙ্গে দেখা—
কতদিন পর!
বাতাসে কোথাও রাঙাধুলো
কুয়াশার ঘের ভেঙে কার যেন উঁকি, বুঝি বা অসুখ
এত দ্রুত সরালে দুচোখ, লুকোলে কি কিছু?
অথবা বিস্মরণের মাছ, বেদনাবিহীন!
হেঁটে আসে সুরভিসকাল
প্রবালপ্রাচীরে ঢেউ, বিজন সৈকতে।
শাসক রং
মোজাম্মেল হক নিয়োগী
সারা রাত ক্যানভাসে রং চড়াই
মাইল্ড পার্পল, পিংক আর ব্লু
ধূসর কালোর রেখা আঁকাবাঁকা
নদীর প্রবাহ
ব্রাস, ছেনি আর রোলার দিয়ে রং মিশাই
উষ্ণ ভালোবাসায়।
ভোরে বিস্ময়ে চোখ রাখি ক্যানভাসে
দেখি শাসন করে তীব্র ব্লু।
নগরের সুবিখ্যাত শিল্পী একদিন বললেন,
সিসিফাস—তোমার বুকের গভীরে
কষ্টের নদীটির জল নীল।
বর্ষা ও নারী
সাইফুদ্দিন সাইফুল
নারীও বর্ষার মতন
বর্ষাও নারীর মতোই
নারী ও বর্ষার ভিন্নতা কালোমেঘে ঢাকা
সময়ের ভাবনা বর্ষা-নারীতে মিশে
শ্রাবণের উথালপাথাল ঢেউ আছড়ে পড়ে
যাপিত জীবনের চাওয়া-পাওয়া রঙিন সাজে
নাগরিক স্বপ্নগুলো বর্ষার কাছে হয় আত্মসমর্পণ
নারীর বুকফাটা আবেগ এলোমেলো করে দেয়
বর্ষাতে ভালোবাসার ছোট ছোট সুখের বাসনা
এমনই এ বেলায় অচেনা ক্লান্ত পথিক
বড্ডো খেই হারিয়ে ফেলে বর্ষার নীলজলে ভিজে
[ঝিকরগাছা বাজার, যশোর]
অশ্রুশিশির-বিন্দু
তিথি বালা
ভালোবাসা-ফুল দিতে গিয়ে আমি অপমান শুধু পেয়েছি
অন্তর-জ্বালা নীরবে সয়েছি, তুমুল আগুনে নেয়েছি।
কী দিয়েছি আর কতটা পেয়েছি, হিসেব তো মেলাইনি
ভেবেছি এ-আমি তোমারই রয়েছি, আর কিছু আমি চাইনি।
সংকোচে বলি তাই জেনে রেখ যতদূরে যাও তুমি
দখিনা বাতাস হূদয়ে বইছে—নিঃসীম মরুভূমি।
জীবন-মরুর ঊষর-উঠোনে তুমি হয়ে এলে বরষা
যেন প্রশান্ত হিল্লোল আনে বাঁচার মোহন ভরসা
তুমি আছ মিশে গভীর আঁধারে—অশ্রুশিশির-বিন্দু
খুঁজে ফিরি আমি এই হূদয়ের গোপন নিকষ সিন্ধ
স্বপ্ন
আজাদুর রহমান
আপনি হয়তো স্বপ্নের ভিতরে
জেগে আছেন, আর চারপাশে
যা কিছু ঘটছে তা সব আসলে
বানানো গল্প, আপনি বুঝতে পারছেন না,
কখনওবা ক্ষীণ সন্দেহে
স্বপ্নের ভিতরেই
আপনি গায়ে চিমটি কাটছেন,
ব্যথাও পাচ্ছেন, নিশ্চিত হয়ে
ফের স্বপ্নের ভিতরেই দিব্যি একটা জীবন পার করে দিচ্ছেন...।
...তারপর
একদিন আচমকা ঘুম ভেঙে গেলে দেখবেন—
আপনি কবরে শুয়ে আছেন!