শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০
The Daily Ittefaq

শেরপুরে আলো ছড়াচ্ছে 'মাটির আলো'

আপডেট : ২৫ আগস্ট ২০২২, ২২:০৯

বগুড়া জেলার শেরপুর উপজেলার বিখ্যাত গোসাই মহারাজের গোসাই কাচারি একপ্রকার পরিত্যক্তই ছিল। কালের সাক্ষী হয়ে ঘরটি দাঁড়িয়ে থাকলেও প্রশাসন কিংবা এলাকাবাসী কারোরই তদারকি ছিল না। ধীরে ধীরে এটি পরিণত হয় মাদকের আখড়ায়। তবে কয়েকদিন আগেও যা ছিল মাদকের আড্ডাখানা, সেখানে এখন বইপ্রেমীদের আনাগোনা। গড়ে উঠেছে ভূমিবিষয়ক পাঠাগার।

শেরপুর উপজেলার সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট সাবরিনা শারমিনের হাত ধরে সাধন হয়েছে এমন অসাধ্য। গোসাই কাচারি পরিণত হয়েছে 'মাটির আলো'-নামক পাঠাগারে। সেখানে রয়েছে মুক্তিযুদ্ধ ও ইতিহাসভিত্তিক বই, গল্প, উপন্যাস। আছে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জীবন ও কর্ম বিষয়ক 'বঙ্গবন্ধু কর্ণার।' তবে পাঠাগারে প্রাধান্য দেওয়া হয়েছে ভূমি সংক্রান্ত বইয়ে। এছাড়া জমিজমা সম্পর্কে জানতে বিনামূল্যে সংগ্রহের জন্য আছে বিভিন্ন সেবা সংক্রান্ত লিফলেট ও আবেদন ফরম। রাখা হয়েছে পত্রিকা, সাময়িকী।

মাটির আলো নামের এই পাঠাগার গড়ে তোলা হয়েছে বগুড়ার শেরপুরে

মাটির আলোর ভাবনা কোথা থেকে এলো জানতে চাইলে সহকারী কমিশনার (ভূমি) সাবরিনা শারমিন বলেন, 'আমার মনে হতো, ভূমি নিয়ে সাধারণ মানুষ অনেক সময় প্রাথমিক বিষয়গুলোও বুঝতে পারে না, এতে দুর্ভোগে পড়তে  হয়। শেরপুরে ভূমি অফিসের আঙিনায় গোসাই মহারাজের কাচারি ঘরটি পরিত্যক্ত ছিল। এটি শেরপুরের মানুষের আবেগের জায়গা। জায়গাটি যেনো বেদখল না হয়, ইতিহাসও অটুট থাকে, সেই ভাবনা থেকেই কাজ শুরু করি।'

আলোকিত সমাজ গঠনে প্রয়োজন আলোকিত মানুষ। মানুষ তৈরি করতে হলে সমৃদ্ধ পাঠাগার প্রয়োজন। আগামী প্রজন্মকে যোগ্য করে গড়ে তুলতে বই এর বিকল্প নেই। মাটির আলো তৈরির ক্ষেত্রে যেটি বড়ো প্রভাবক ছিল, বললেন সাবরিনা শারমিন। সাথে যোগ করেন, 'সুন্দর পরিবেশে ভালো একটি পাঠাগার করা গেলে নতুন প্রজন্ম জ্ঞানের আলোয় উদ্ভাসিত হবে। পাবে সুস্থ বিনোদন। এতে খারাপ কাজে আসক্তিও কমে আসবে।'

মাটির আলো পাঠাগারের অন্দর ও নামফলক

শেরপুরে এটিই প্রথম পাঠাগার। শূন্য থেকে শৃঙ্গে পৌঁছাবার আগে প্রয়োজন শুরু করা। সাবরিনা শারমিন শুরু করার গুরুদায়িত্ব পালন করে দিয়েছেন। এবার তা ধরে রাখার পালা। অবসর যদি কাটে মাটির আলোয়, যদি বাড়ে জ্ঞানের পরিধি তবেই সার্থকতা। মাটির আলোর মাধ্যমে প্রজ্জ্বলিত হলো ইচ্ছাশক্তির আরও একটি অনিন্দ্য মশাল। সেই মশাল বাহক হিসেবে সাবরিনা শারমিন বেঁচে থাকবেন মাটি ও মানুষের হৃদয়ে।

ইত্তেফাক/এসটিএম

এ সম্পর্কিত আরও পড়ুন