ইন্তেখাব দিনার। চলচ্চিত্র-ওয়েব সিরিজ নিয়ে দারুণ ব্যস্ত সময় পার করছেন। সম্প্রতি মুক্তি পাওয়া ‘কারাগার’ ওয়েব সিরিজে তার অভিনয় মুগ্ধ করেছে দর্শকদের। সিরিজটির পাশাপাশি নতুন চলচ্চিত্র, ওটিটির কাজ, অভিনয় ভাবনাসহ ইন্ডাস্ট্রির নানা দিক নিয়ে তিনি কথা বললেন ইত্তেফাকের সঙ্গে। সাক্ষাৎকার নিয়েছেন এ এম রুবেল।
‘কারাগার’ ওয়েব সিরিজে আপনার অভিনয় দারুণ প্রশংসিত হচ্ছে। সিরিজটিতে যুক্ত হওয়ার গল্প কেমন ছিল? কখনও কী মনে হয়েছিল এত প্রশংসিত হবেন?
একদিন শাওকী কল করে বললো যে, একটি ওয়েব সিরিজ করতে চায়। এরপর দু-তিন ঘণ্টা আমার বাসায় আলোচনা চলে গল্পটি নিয়ে। তখন বেশ উচ্ছ্বসিত ছিলাম এমন একটি সুন্দর গল্প শুনে। শুটিংয়ের অভিজ্ঞতাও দারুণ ছিল। কারণ শাওকী অনেক গুছিয়ে কাজ করেন। এছাড়া আফজাল ভাই, চঞ্চল, ফারিণ, নাঈমের মতো গুণী শিল্পীদের সঙ্গে আনন্দ নিয়ে কাজটি করেছিলাম। আর সিরিজটি নিয়ে প্রত্যাশা ছিল, কিন্তু এতটা ছিল না। মুক্তির পর যেমন প্রশংসা পাচ্ছি সেটাকে এক কথায়, অপ্রত্যাশিত বলা চলে।
এর বাইরে কোন কাজগুলো নিয়ে ব্যস্ত আছেন?
সম্প্রতি ‘শ্যামা কাব্য’ ছবিটির শুটিং শেষ করলাম। সামনের মাসে মুক্তি পাচ্ছে ‘বীরত্ব’ ছবিটি। পাশাপাশি দুটি ওয়েব সিরিজও মুক্তি পাবে আসছে মাসে। এছাড়া মুক্তির অপেক্ষায় আছে ‘দামাল’, ‘ওরা ৭ জন’ ছবিগুলো।
‘বীরত্ব’ সিনেমায় বিশেষ কী থাকছে। যা দর্শকদের হলে আসতে আগ্রহী করবে?
পুরো কমার্শিয়াল ছবি ‘বীরত্ব’। একটি চলচ্চিত্রে যে উপাদানগুলো দর্শকরা চায়, তার সবই রয়েছে। আরেকটি বিশেষ কথা বলবো, ছবিটিতে একেবারে ভিন্ন অবতারে সবাই আমাকে দেখতে পাবেন। প্রথমবার প্রধান ভিলেন হিসেবে নিজেকে উপস্থাপন করেছি।
প্রায় প্রতিটি সিনেমা-ওয়েব সিরিজেই নিজেকে ভিন্নভাবে এক্সপ্রেরিমেন্ট করছেন। এই চর্চা ক্যারিয়ারের জন্য ঝুঁকিপূর্ণ মনে হয় কি-না?
একজন অভিনেতা হিসেবে ঝুঁকি তো নিতেই হবে। একই ধরনের চরিত্রে অভিনয় না করে ভিন্ন ভিন্ন চরিত্রে চ্যালেঞ্জ নিয়ে কাজ করতে হবে। যদি সেই কাজটি দর্শকরা গ্রহণ না করেন, তবে সেটা আমার ব্যর্থতা।
আপনি চলচ্চিত্রের পাশাপাশি ওয়েব সিরিজেও সমান ব্যস্ত রয়েছেন। ওটিটি চলচ্চিত্র সংকটে কতটা ভূমিকা রাখতে পারবে মনে করছেন?
দেখুন, করোনার সময় কিন্তু আমরা হলে গিয়ে ছবি দেখতে পারিনি। তখন ওটিটি আমাদের ভরসা ছিল। তবে আমি দর্শক হিসেবে বলবো, সিনেমা হলে মুক্তি পাওয়াই উচিত।
ওটিটির কাজগুলো প্রশংসিত হওয়ায় অনেকেই বলছেন টিভি নাটকে নেতিবাচক প্রভাব পড়ছে। আপনি কী মন্তব্য করবেন?
টিভি নাটকের সর্বনাশ তো টিভি নাটকই করেছে। সেখানে মানসম্পন্ন কাজ হচ্ছিল না বলেই তো দর্শক ওটিটির দিকে ঝুঁকছে। ফ্রি নাটক বাদ দিয়ে টাকা দিয়ে ওয়েব সিরিজ দেখছে। কারণ কন্টেন্টের মান!
চলচ্চিত্রের বর্তমান অবস্থা কেমন দেখছেন?
ভালো গল্প হলে দর্শকরা দেখবেন, এই বিশ্বাস ফিরে পেয়েছি। সেটা শেষ মুক্তি পাওয়া ছবিগুলো প্রমাণ করেছে। সেই জায়গা থেকে আমি দারুণ আশাবাদী।
ইদানিং নাটক, চলচ্চিত্রের ওপর ‘মামলা’ নতুন আলোচনা তৈরি করেছে। এতে আপনাদের স্বাধীনতা খর্ব হওয়ার শঙ্কা থাকছে কি-না?
হ্যাঁ, অবশ্যই স্বাধীনতা খর্ব হচ্ছে। আইসিউতে মৃতপ্রায় একটি চলচ্চিত্র শিল্পে যে মুহূর্তে একটু অক্সিজেন দেখতে পাচ্ছিলাম সেই সময় এ ধরনের বৈরি মনোভাব চলচ্চিত্রকে আবার ধ্বংসের মুখে ঠেলে দেবে। পাশাপাশি ওটিটির কাজগুলোকে কিন্তু প্রাপ্ত বয়স্করাই দেখেন। কাজ ভালো না হলে তারাই ছুঁড়ে ফেলবেন। এখানে এ ধরনের প্রতিবন্ধকতা তৈরা ঠিক হচ্ছে না। কারণ এতে নির্মাতা-শিল্পীদের কাজের আগেই ভাবতে হচ্ছে বিপদে পড়ব কি-না! এভাবে তো শিল্প সৃষ্টি হয় না। আমি তীব্র প্রতিবাদ জানাই।
অভিনয় নিয়ে দিনারের ভবিষ্যৎ ভাবনা কী?
আমি আসলে শুরু থেকেই পরিকল্পনা করে অভিনয় করি না। সময়ের সঙ্গে তাল মিলিয়ে ভালো কাজ করার চেষ্টা করেছি সবসময়। এভাবেই কাজ করে যেতে চাই।