এক হাজার টাকা ভাড়ায় সিফাতকে হত্যার কথা স্বীকার করে আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন অভিযুক্ত মেহেতাব ও আবু তালেব সিদ্দিকী তালে। শুক্রবার (২ সেপ্টেম্বর) দুপুরে টাঙ্গাইল সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মো. শামসুল আলমের আমলী আদালতে তারা স্বীকারোক্তি দেন। এদিকে, হত্যার সঙ্গে আরও ৫ জন জড়িত বলে মেহেতাব জানান।
এসময় বিচারক তাদের জেলহাজতে পাঠানোর নির্দেশ দেন। আসামি আবু তালেব সিদ্দিকী তালেকে ৭ দিনের রিমাণ্ড চেয়ে আবেদন করা হয়েছে বলে তদন্ত কর্মকর্তা আবু সাইদ জানিয়েছেন।
পুলিশ জানায়, সিফাতের বাবার নাম মো. শহিদুর রহমান। গ্রামের বাড়ি মির্জাপুর উপজেলার ভাতগ্রাম ইউনিয়নের গোড়াইল গ্রামে। সিফাত মির্জাপুর উপজেলা সদরের আফাজ উদ্দিন দারুল উফুম সিনিয়র দাখিল মাদ্রাসার সপ্তম শ্রেণীর ছাত্র।
পুলিশ সূত্রে জানা যায়, গত ১৮ আগস্ট সিফাত বংশাই নদীতে গোসল করতে গিয়ে বখাটে হিরনের সঙ্গে কথা কাটাকাটি হয়। এই ঘটনায় বখাটে হিরন ও তার কয়েকজন বন্ধু মিলে সিফাতকে মারধর করে তার একটি হাত ভেঙে দিলে সে অসুস্থ্য হয়ে পড়ে। পরে তাকে মির্জাপুর সরকারি স্বাস্থ্যকমপ্লেক্সে চিকিৎসার জন্য ভর্তি করা হয়। এই ঘটনায় গ্রাম্য সালিসে হিরনকে স্থানীয় মাতাব্বররা শাসন করে জুতাপেটা করে।
আরও জানা যায়, গত সোমবার (২৯ আগস্ট) বিকালে ফুচকা খাওয়ার জন্য সিফাত মির্জাপুর বাইপাস রেল স্টেশনে আসে। শালিসে জুতাপেটার অপমানের প্রতিশোধ নিতে হিরন ও তার সহযোগীরা সিফাতকে ধরে নিয়ে নির্যাতনের পর হত্যা করে লাশ মির্জাপুর রেল লাইনের পাশে ক্ষেতে ফেলে রাখে। অনেক খোঁজাখুঁজির পর পুলিশ ক্ষতবিক্ষত অবস্থায় সিফাতের লাশ উদ্ধার করে।
এব্যাপারে সিফাতের বাবা শহিদুর রহমান বাদী হয়ে গত ৩০ আগস্ট মির্জাপুর থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। পুলিশ তথ্য প্রযুক্তি ব্যবহার করে অভিযুক্ত মেহেতাব মিয়া ও আবু তালেব সিদ্দিকী তালেকে গ্রেফতার করেছে। মূল হোতা হিরন ও তার সহযোগীদের গ্রেফতারে মাঠে নেমেছে পুলিশ। সিফাত হত্যাকারীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানিয়েছে তার পরিবার, এলাকাবাসী এবং শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা।
মির্জাপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা শেখ আবু সালেহ মাসুদ করিম বলেন, ‘সিফাত হত্যার মূল রহস্য উদঘাটন হয়েছে। দুইজনকে গ্রেফতারের পর জেলহাজতে পাঠানো হয়েছে। হত্যার সঙ্গে জড়িত অপর আসামিদের গ্রেফতারে মাঠে নেমেছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী।’