প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সদ্য ভারত সফরকে ফলপ্রসূ ও সফল বলে মন্তব্য করেছেন বাংলাদেশে ভারতের সাবেক হাইকমিশনার বীণা সিক্রি। গতকাল শনিবার সন্ধ্যায় টেলিফোনে দৈনিক ইত্তেফাকের সঙ্গে আলাপকালে তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি এখন পর্যন্ত ১৩-১৪ বার বৈঠক করেছেন এবং সাক্ষাৎ হয়েছে। তাদের মধ্যে যে চমৎকার বোঝাপড়া রয়েছে তা এই সফরে আরও পরিষ্কার হয়েছে। তারা গুরুত্ব দিয়েছেন বিভিন্ন সময়ে গৃহীত সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নের ওপর। নতুন নতুন সহযোগিতার ক্ষেত্র নিয়ে দুই নেতা আলোচনা করেছেন। যা দুই দেশের জনগণের জন্য আশাব্যঞ্জক। আমি নিবিড়ভাবে দেখেছি এই সফরটি কিছু বার্তা দিয়েছে। আন্তরিকতা ও ভালো বোঝাপড়া থাকলে যে কোনো সমস্যা সহজেই সমাধান করা যায়। প্রতিনিধিদলের বৈঠক এবং দুই নেতার একান্ত বৈঠকে অনেক ইতিবাচক দিক রয়েছে বলে মনে করি।
বীণা সিক্রি আরও বলেন, প্রতিরক্ষা, জ্বালানি, আইসিটি, সাইবার সিকিউরিটি, মহাকাশ ও মানবসম্পদ উন্নয়নে সহযোগিতা এই সফরের কিছু নতুন উপাদান। এসব নতুন সহযোগিতা দুই দেশের স্বার্থের অনুকূল হবে। এই সফরে দীর্ঘদিন ধরে ঝুলে থাকা তিস্তার পানিবণ্টন চুক্তির ব্যাপারে কোনো সুরাহা হয়নি। যদিও আগে থেকেই ধারণা ছিল। কারণ পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী এ বিষয়ে এখনো সিদ্ধান্ত দেননি। তবে কুশিয়ারার পানি প্রত্যাহারের ব্যাপারে চুক্তি হয়েছে। আশার কথা হলো—১২ বছর পর যৌথ নদী কমিশন কার্যকর হয়েছে। এখন এই কমিশন সামগ্রিক পানি ব্যবস্থাপনা নিয়ে কাজ করবে। তাহলে অভিন্ন নদীর পানিবণ্টনের কাজ দ্রুত অগ্রসর হবে।
বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে আত্মত্যাগকারী সেনাদের বংশধরদের মধ্যে শেখ হাসিনা যে বৃত্তি দিয়েছেন সে প্রসঙ্গে বীণা সিক্রি বলেন, এ উদ্যোগটা খুবই প্রশংসনীয়। তিনি আরও বলেন, এই সফরে প্রমাণ হয়েছে যে, দুই দেশের সম্পর্ক ক্রমশ শক্তিশালী, ইতিবাচক ও জোরদার হচ্ছে।
সমন্বিত অর্থনৈতিক অংশীদারিত্ব চুক্তি (সেপা) নিয়ে আলোচনা হয়েছে। ২০২৬ সালে বাংলাদেশ স্বল্পোন্নত দেশ থেকে মধ্যম আয়ের দেশে উন্নীত হলে সাফটার আওতায় বাংলাদেশ যে শুল্কমুক্ত সুবিধা পায় সেটা বন্ধ হয়ে যাবে। তখন প্রস্তাবিত সেপা চুক্তির মাধ্যমে বাংলাদেশ লাভবান হবে। দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য অনেক বেড়ে যাবে।
তিনি বলেন, কয়লাভিত্তিক রামপাল বিদ্যুৎকেন্দ্র, রূপসা রেল সেতু বাংলাদেশের দক্ষিণ-পশ্চিম অঞ্চলের সম্ভাবনা উন্মোচন করবে। মোংলা বন্দর আরও সচল হবে।