শনিবার, ০১ এপ্রিল ২০২৩, ১৮ চৈত্র ১৪২৯
দৈনিক ইত্তেফাক

কৃচ্ছ্রসাধনে সরকারের ব্যাংক ঋণ কমেছে

আপডেট : ১২ সেপ্টেম্বর ২০২২, ০৪:০২

নতুন অর্থবছরের শুরুতে সরকারের ব্যাংক ঋণ বেশি থাকলেও এখন সেটি কমতে দেখা যাচ্ছে। ব্যাংক থেকে সরকার যে পরিমাণ ঋণ নিচ্ছে, আগের নেওয়া ঋণের পরিশোধ হচ্ছে তার চেয়ে বেশি। চলতি অর্থবছরের গত ৩০ আগস্ট পর্যন্ত দুই মাসে ব্যাংক থেকে সরকারের নিট ঋণ ৩ হাজার ১৩৪ কোটি টাকা কমে দাঁড়িয়েছে ২ লাখ ৬৭ হাজার ৫২ কোটি টাকায়। গত জুন শেষে স্থিতি ছিল ২ লাখ ৭০ হাজার ১৮৬ কোটি টাকা। 

সংশ্লিষ্টরা বলছেন, সরকারের কৃচ্ছ্রসাধনের প্রভাব ব্যাংক ঋণেও পড়েছে। কম গুরুত্বপূর্ণ প্রকল্পে অর্থছাড় স্থগিত থাকায় ব্যয়ের চাপ আগের চেয়ে কম। তাছাড়া বিদেশ ভ্রমণ ও যানবাহন ক্রয়ে লাগাম টানা হয়েছে। স্টেশনারি কেনার খরচও কমানোর নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। সব প্রতিষ্ঠানের বিদ্যুৎ খরচ ২০ শতাংশ এবং জ্বালানি খরচ ২৫ শতাংশ কমানোর নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। অনেক ধরনের পণ্য আমদানি নিয়ন্ত্রণ করা হচ্ছে। আর এসব প্রভাবে সরকারের ব্যয়ের চাহিদাও কমে এসেছে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা। 

বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, চলতি অর্থবছরের শুরুতে সরকারের ব্যাংক ঋণ বাড়ছিল। গত ২ আগস্ট পর্যন্ত ব্যাংক ব্যবস্থায় সরকারের নিট ঋণ ৫ হাজার ৮২০ কোটি টাকা বেড়ে স্থিতি দাঁড়ায় ২ লাখ ৭৬ হাজার ৫ কোটি টাকা। রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের প্রভাবে খাদ্য ও জ্বালানি বাজারের অস্থিরতাসহ নানা কারণে জুলাইয়ের শেষ দিক থেকে সরকার ব্যয় সংকোচনের দিকে বেশি মনযোগী হয়। এদিকে অর্থবছরের প্রথম মাসে রাজস্ব আয়েও ভালো প্রবৃদ্ধি হয়েছে। অর্থবছরের শুরুতে প্রথম মাসেই প্রায় ১৫ শতাংশ বেশি রাজস্ব আদায় হয়েছে। এর প্রভাবে সরকার ব্যাংক থেকে ঋণ কম নিচ্ছে।

উল্লেখ্য, চলতি ২০২২-২৩ অর্থবছরে সরকার মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে সবচেয়ে বেশি জোর দিচ্ছে। এর মধ্যে বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচির প্রকল্পগুলোকে গুরুত্ব বিবেচনায় এ, বি ও সি ক্যাটাগরিতে ভাগ করে অপেক্ষাকৃত কম গুরুত্বপূর্ণ ‘সি’ ক্যাটাগরির প্রকল্পের বাস্তবায়ন স্থগিত করা হয়েছে। ‘বি’ ক্যাটাগরির প্রকল্পে বরাদ্দের ৭৫ শতাংশ ছাড় করা হচ্ছে। চলতি অর্থবছরের বাজেটে ব্যাংক ব্যবস্থা থেকে সরকার ১ লাখ ৬ হাজার ৩৩৪ কোটি টাকা ঋণ নেওয়ার লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করে। গত অর্থবছরের মূল বাজেটে ৭৬ হাজার ৪৪২ কোটি টাকা লক্ষ্যমাত্রার বিপরীতে সরকার নেয় ৭২ হাজার ৭৫০ কোটি টাকা। চলতি অর্থবছরে সঞ্চয়পত্র থেকে ৩৫ হাজার কোটি টাকা ঋণ নেওয়ার লক্ষ্যমাত্রা ঠিক করেছে। তবে প্রথম মাসে মাত্র ২৯৩ কোটি টাকার ঋণ এসেছে এ খাত থেকে।

 

ইত্তেফাক/ইআ