যশোর ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালের ৮ কোটি টাকার টেন্ডারে (দরপত্র) অংশ নিতে গিয়ে হামলার শিকার হয়েছে মাগুরার দুটি সরবরাহকারী ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের কর্মীরা। দুর্বৃত্তরা তাদের মারধর করে শিডিউল ছিনতাই করে নিয়ে গেছে। গতকাল সোমবার (১২ সেপ্টেম্বর) সকাল সাড়ে ৯টার দিকে হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়কের কার্যালয়ে ঘটনাটি ঘটে।
ভুক্তভোগীদের অভিযোগ, দুর্বৃত্তরা র্যাব, পুলিশের সামনে হামলা করে তাদের শিডিউল ছিনিয়ে নিয়ে গেছে। কিন্তু তারা কোনো ভূমিকাই রাখেনি। যদিও অভিযোগ অস্বীকার করে পুলিশ দাবি করেছে, তাদের সামনে কোনো ঘটনা ঘটেনি। হাসপাতালের নিচতলায় গোলযোগের খবর পেয়ে পুলিশ ছুটে গেলেও ঘটনাস্থলে কিছু পাওয়া যায়নি।
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, ২৫০ শয্যা যশোর জেনারেল হাসপাতালের ২০২২-২০২৩ অর্থবছরের ওষুধ ও চিকিৎসা সরঞ্জাম সরবরাহের জন্য ৮ কোটি ৯ লাখ টাকার দরপত্র দাখিলের নির্ধারিত দিন ছিল সোমবার। ১৮১টি দরপত্র জমা দেওয়ার সময়সীমা বেঁধে দেওয়া হয়েছিল সকাল ৯টা থেকে বেলা ১১টা পর্যন্ত। এদিন সকাল সাড়ে ৯টার দিকে মাগুরার দুটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান মামুন ড্রাগস ও অপরাজিতা ড্রাগসের প্রতিনিধিরা আহ্বানকৃত টেন্ডারের মধ্যে ওষুধ, গজ-ব্যান্ডেজ-তুলা, কেমিক্যাল, আসবাব ও ক্রোকারিজ সরবরাহের ৬ কোটি টাকার দরপত্র জমা দিতে যান। দরপত্রটি হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়কের কার্যালয়ের সামনে টেন্ডার বক্সে জমা দেওয়ার আগমুহূর্তে ১৫-২০ জন সন্ত্রাসী তাদের শিডিউল পেপার ছিনতাই করে নেয়। এ সময় হাসপাতাল চত্বরে সন্ত্রাসীদের মহড়া দিতে দেখা যায়।
ঘটনার পর হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীদের কাছে অভিযোগ দিলেও তারা কোনো ব্যবস্থা নেয়নি বলে অভিযোগ করেছেন ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানটির পরিচালক ঠিকাদার আজিজুল হক। তিনি টেন্ডার স্থগিত ও পুনরায় দরপত্র আহ্বানের দাবি জানিয়েছেন।
হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. আখতারুজ্জামান বলেন, অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা ঘটনার অভিযোগ পেয়েছি। বিষয়টি নিয়ে যশোরের জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপারকে অবহিত করেছি। আগামী ১৫ সেপ্টেম্বর টেন্ডারের মূল্যায়ন হবে। টেন্ডার স্থগিত ও পুনরায় দরপত্র শিডিউল সরবরাহ করার কোনো সুযোগ নেই। এ ব্যাপারে যশোরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক সার্কেল) বেলাল হুসাইন বলেন, হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়কের কার্যালয়ের সামনে পুলিশ ছিল। সেখানে কোনো ঘটনা ঘটেনি। নিচতলায় গোলযোগের খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে ছুটে যায়। কিন্তু সেখানে গিয়ে কিছু পাওয়া যায়নি। তবে তিনি উল্লেখ করেন, এ ব্যাপারে অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
এ ব্যাপারে র্যাব-৬ যশোর ক্যাম্পের কোম্পানি কমান্ডার এম নাজিউর রহমান জানান, তাদের সামনে কোনো ঘটনা ঘটেনি। ভুক্তভোগী বা হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ কেউই টেন্ডার ছিনতাইয়ের অভিযোগ করেনি। অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।