ইউরোপের সাধারণ মানুষ ও ছোট-বড় প্রতিষ্ঠানগুলোর কর্মকর্তাদের মনে আপাতত সবচেয়ে বড় দুশ্চিন্তা হচ্ছে বেড়ে চলা বিদ্যুতের মাসুল। মাসের শেষে সেই বিল পরিশোধ করতে না পারলে পথে বসার ভয় পাচ্ছেন অনেক মানুষ। জাতীয় স্তরে সরকার নানা পদক্ষেপের মাধ্যমে এমন বিপর্যয় এড়ানোর চেষ্টা করছে কিন্তু ইউরোপীয় পর্যায়ে বিদ্যুতের বাজারে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা না নিলে এমন সংকট সামাল দেওয়া কঠিন। খবর ডয়চে ভেলের।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এমন অবস্থায় ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ) সক্রিয় হয়ে উঠছে। ইইউ কমিশনের প্রেসিডেন্ট উরসুলা ফন ডেয়ার লাইয়েন বুধবার (১৪ সেপ্টেম্বর) ইউরোপীয় পার্লামেন্টে তাঁর ‘স্টেট অফ দ্য ইউনিয়ন' ভাষণে এমনই পরিকল্পনার রূপরেখা তুলে ধরেন।
বর্তমানে ইউক্রেন যুদ্ধের জের ধরে প্রাকৃতিক গ্যাসের অস্বাভাবিক দাম বাড়ার কারণে বিদ্যুতের দামও প্রতিনিয়ত বেড়ে চলেছে। গ্যাস চালিত বিদ্যুৎ কেন্দ্রগুলি এভাবে টিকে থাকলেও বাকি বিদ্যুৎ কেন্দ্রগুলি সেই সুযোগে মোটা মুনাফার মুখ দেখছে। ইইউ সেই সব কোম্পানির অপ্রত্যাশিত মুনাফার উপর ‘উইন্ডফল' কর চাপিয়ে সেই অর্থ দিয়ে ভোক্তাদের ভার লাঘব করার উদ্যোগ নিচ্ছে।
তবে এই মর্মে এক বহুমুখী আইন অনুমোদন করাতে হলে সদস্য দেশগুলোর অনুমোদনের প্রয়োজন পড়বে। এর আওতায় একগুচ্ছ পদক্ষেপের মাধ্যমে আসন্ন শীতের মাসগুলোতে ইউরোপে বিদ্যুতের মূল্য সামর্থ্যের মধ্যে রাখার চেষ্টা করা হবে।
ইইউ এর ভাইস প্রেসিডেন্ট ফ্রান্স টিমারমান্স ও জ্বালানি বিষয়ক কমিশনার কাড্রি সিমসন গোটা পরিকল্পনা আরও বিস্তারিতভাবে ব্যাখ্যা করেন।
প্রথমত যে সব বিদ্যুৎ কেন্দ্র কম ব্যয়ে বিদ্যুৎ উৎপাদন করছে, সেগুলোর আয়ের ঊর্ধ্বসীমা স্থির করে দেওয়া হবে। দ্বিতীয়ত, জীবাশ্ম ভিত্তিক জ্বালানি কোম্পানিগুলোকে বর্তমান সংকট মোচনে অবদান রাখতে মাসুল দিতে হবে। তৃতীয়ত বিদ্যুতের ব্যবহার কমাতে নির্দিষ্ট লক্ষ্যমাত্রা বাধ্যতামূলক করা হবে।
সিমসন বলেন, সেই বাড়তি রাজস্ব কাজে লাগিয়ে ইইউ সদস্য দেশগুলো এই কঠিন সময়ে সংকটে পড়া মানুষের সহায়তা করতে পারবে। দুই ধরনের নতুন কর আরোপ করে প্রায় ১৪ হাজার কোটি ইউরোরও বেশি অর্থ আদায় করা যাবে বলে অনুমান করা হচ্ছে।