জাতীয় পার্টি চেয়ারম্যান গোলাম মোহাম্মদ কাদের বলেছেন, জাতীয় পার্টি কোন জোটে নেই। গেলো নির্বাচনেও আওয়ামী লীগের সাথে জাতীয় পার্টির কোন জোট ছিল না। গেলো নির্বাচনে কিছু আসনে নির্বাচনি সমঝোতা হয়েছিলো। তখন আসন ভিত্তিক আমাদের নেতা-কর্মীরা আওয়ামীলীগ এর পক্ষে কাজ করেছেন আবার আওয়ামী লীগ এর নেতা-কর্মীরা জাতীয় পার্টির পক্ষে কাজ করেছে। এ কারণেই আওয়ামী লীগের সঙ্গে আমাদের একটা বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক আছে।
শুক্রবার (১৬ সেপ্টেম্বর) দুপুরে রাজধানীর মহানগর নাট্যমঞ্চে হিন্দু মহাজোটের প্রতিনিধি সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় জাতীয় পার্টি চেয়ারম্যান গোলাম মোহাম্মদ কাদের এ কথা বলেন।
তিনি বলেন, আমরা দেশ ও মানুষের পক্ষে কথা বলতে চাই। আমরা সব সময় সত্য কথা বলতে চাই। ভালো কাজ করলে আমরা আওয়ামী লীগের সঙ্গে থাকতে পারি। কিন্তু, আওয়ামী লীগ যদি গণমানুষের আস্থা হারিয়ে ফেলে তাহলে আগামীতে আমরা তাদের সঙ্গে নাও থাকতে পারি।
জাতীয় পার্টি চেয়ারম্যান বলেন, দেশের মানুষ নির্বাচনে ইভিএম চায় না। আমরা শুরু থেকেই ইভিএম এর বিপক্ষে। কারণ, ইভিএম হচ্ছে শান্তিপূর্ণ কারচুপির মেশিন। ইভিএম-এ নির্বাচন হলে যাকে খুশি বিজয়ী করতে পারবে। তিনি বলেন, আমরা নির্বাচন বর্জনের ঘোষণা দেইনি, নির্বাচন বর্জনের ঘোষণা অত্যন্ত কঠিন। আমরা বাস্তব অবস্থা পর্যবেক্ষণ করে সিদ্ধান্ত নেবো। আমরা দেশ ও সাধারণ মানুষের স্বার্থের কথা বিবেচনায় রেখে, দলীয় ফোরামে আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নেবো।
গোলাম মোহাম্মদ কাদের বলেন, দেশ ও মানুষের সেবার দায়িত্ব নিতেই আমরা রাজনীতি করছি। আগে যুদ্ধ-বিদ্রোহের মাধ্যমে ক্ষমতা দখল করা হতো। যুদ্ধে কেউ শৃঙ্খলা ভঙ্গ করলে তাকে কঠিন শাস্তি দেওয়া হতো, কখনো কখনো মৃত্যুদণ্ডও দেওয়া হতো। এখন শান্তিপূর্ণ রাজনীতি ও নির্বাচনের মাধ্যমে রাষ্ট্র ক্ষমতা গ্রহণ করতে হয়। শান্তিপূর্ণ আন্দোলনেও শৃঙ্খলা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। যদি কেউ দলীয় শৃঙ্খলা বিনষ্ট করতে চায় সে যত বড় নেতাই হোক, যত প্রভাবশালী হোক অথবা যত অর্থ বিত্তের মালিকই হোক, কাউকে ছেড়ে দেবো না। সকল ষড়যন্ত্র উড়িয়ে দিয়ে আমরা দেশ ও মানুষের স্বার্থ রক্ষায় কাজ করবো।
জি এম কাদের বলেন, দেশে মেগা প্রকল্প চলছে মেগা দুর্নীতির জন্য। প্রতিটি প্রকল্পের সম্ভাব্যতা যাচাই করা হয় কিন্তু নির্ধারিত সময়ে এবং নির্দিষ্ট বরাদ্দে কোন কাজ শেষ হয় না। প্রতিটি প্রকল্পে অতিরিক্ত সময় ও অর্থ ব্যয় হচ্ছে। এতে প্রমাণ হয় সম্ভাব্যতা যাচাই সঠিক ছিলো না। আবার অতিরিক্ত ব্যয়ের কারণে এই প্রকল্পগুলো কখনোই লাভজনক হবে না। একই সময়ে গেলো বছরে শুধু সুইস ব্যাংকেই ৪ লাখ কোটি টাকা পাচার হয়েছে। আর একারণেই গভীর ঝুঁকির দিকে এগোচ্ছে আমাদের অর্থনীতি। জাতীয় বাজেট হচ্ছে শতভাগ দেশী-বিদেশি ঋণ নির্ভর। দেশের পরিচালন ব্যায় নির্বাহ করতে হবে ট্যাক্স আদায়ের মাধ্যমে। মানুষের যদি আয় না থাকে অথবা কষ্টের মধ্যে জীবন যাপন করে তাহলে ট্যাক্স দিবে কিভাবে?