রোববার, ০২ এপ্রিল ২০২৩, ১৯ চৈত্র ১৪২৯
দৈনিক ইত্তেফাক

আমরাও প্রতিরোধ করতে জানি : রিজভী

আপডেট : ১৮ সেপ্টেম্বর ২০২২, ০০:৫৪

বিএনপির শীর্ষপর্যায়ের নেতাকর্মীদের উপর হামলার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়ে দলটির সিনিয়র যুগ্ম-মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী বলেছেন, সরকার বিএনপির বিরুদ্ধে, গণতন্ত্রকামি প্রতিবাদী মানুষের বিরুদ্ধে তাদের বাহিনী লেলিয়ে দিয়েছে। সরকার ভেবেছে তাদের নেতা কর্মীরা হামলা করে আমাদের রক্তাক্ত করবে আর বিএনপি চুপ করে বসে থাকবে এটা মনে করার কোন কারণ নেই। আমরা প্রতিটি রক্ত কণার উপযুক্ত জবাব দিব।

শনিবার (১৭ সেপ্টেম্বর) রাত ৮টায় নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আয়োজিত জরুরি সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।  

রিজভী বলেন, আমাদের কোন র‍্যাব নেই, পুলিশ নেই সন্ত্রাসী বাহিনী নেই। কিন্তু আমাদের আছে অজস্র নিরস্র প্রতিবাদী জনগন। আমরা যেমন গুলির সামনে বুক পেতে দিতে পারি। তেমনি চরম প্রতিরোধের দিকেও এগিয়ে যেতে পারি। তিনি বলেন,আমাদের আজকে অনেক রক্ত ঝড়েছে। ১৪ বছরে ক্রমাগত অনেক প্রান কেড়ে নিয়েছেন। অনেককেই পঙ্গু করেছেন। 

রুহুল কবির রিজভী বলেন, এই ২২ আগষ্ট থেকে আজ পর্যন্ত আপনারা বহুনেতাকর্মী যুবদল, ছাত্রদল, স্বেচ্ছাসেবক দলের অনেক নেতাকর্মীকে গুলী করে অন্ধ করেছে আপনার আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। আমরা শান্তিপূর্ণ কর্মসূচির মাধ্যেমে আমরা আমাদের দাবি আদায়ের জন্য লড়াই করছিলাম কিন্তু আমরা গান্ধীবাদে বিশ্বাস করি না, আমরাও প্রতিরোধ করতে জানি। দলের চার শীর্ষ নেতা বরকত উল্লাহ বুলু, সেলিমা রহমান, তাবিথ আউয়াল, মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, শ্যামা ওবায়েদসহ নেতাদের ওপর হামলার প্রতিবাদে শনিবার তাৎক্ষনিক নয়া পল্টনে বিক্ষোভ মিছিল করেন রিজভী।

রিজভী বলেন, ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপির পূর্ব ঘোষিত কর্মসূচি ছিল বনানীতে। সেই কর্মসূচি ও আওয়ামী লীগের সহ্য হয়নি। সেখানেও বর্বর হামলা চালিয়েছে তারা। বিএনপি'র স্থায়ী কমিটির সদস্য যিনি সরকার চালিয়েছেন সেলিমা রহমান তিনিও হামলা থেকে রেহাই পাননি। বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান বরকতউল্লা বুলু কুমিল্লা থেকে আসার সময় তার ওপর আওয়ামী লীগের সশস্ত্র বাহিনী হামলা করেছে। তার মাথাসহ গোটা শরীর থেঁতলে দিয়েছে। তার মাথা পুরোটাই ব্যান্ডেজ করা। তাবিথ আউয়াল,আলাল,শ্যামাওবায়েদ সহ অসংখ্য নেতা কর্মী আহত হয়েছে। কর্মসূচি শেষ হওয়ার সাথে সাথে আওয়ামী লীগের পেটোয়াবাহিনী ইট পাটকেল মারা শুরু করে। তাবিথ আওয়াল এক পর্যায়ে একটি বাড়িতে ঢুকে পড়ে সেখানে ঢুকেও তার ওপর হামলা করে। সে এখন জীবন মৃত্যুর সন্ধিক্ষণে। সেখানে শ্যামা ওবায়েদ আহত হয়েছে ছাত্রদল যুবদলের অনেক নেতাকর্মী আহত হয়েছে প্রায় শতাধিক নেতাকর্মী আহত হয়েছে।তিনি বলেন, এই সরকারকে রক্ষা করার জন্য একদিকে যেমন পুলিশ সাজিয়েছে এবং ছাত্রলীগ যুবলীগের অপকর্ম ঢাকার জন্য তাদের পাহারাদার হিসেবেও বানিয়েছে। সেজন্য তারা দেশের শহর বন্দর গ্রামগঞ্জে উপজেলা ইউনিয়নে বিএনপির রক্তে রঞ্জিত হচ্ছে তাদের ক্ষমতাকে টিকিয়ে রাখার জন্য। সংবাদ সম্মেলনে বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক আব্দুস সালাম আজাদ,নির্বাহী কমিটির সদস্য আব্দুস সাত্তার পাটোয়ারী,তারিকুল ইসলাম তেনজিং প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

 হাসপাতালে সিনিয়র নেতৃবৃন্দ: এদিকে রাতে চিকিৎসাধীন আহত তাবিথ আউয়ালের শারীরিক খোঁজ নেওয়ার জন্য ইউনাইটেড হাসপাতালে যান বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর,জেএসডি সভাপতি আ স ম রব, বিএনপি স্থায়ী কমিটি সদস্য আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী,বিএনপি সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী আহমেদ, বিএনপি প্রচার সম্পাদক শহীদ উদ্দীন চৌধুরী এ্যানি, মহানগর উত্তর বিএনপি সাধারণ সম্পাদক আমিনুল হক, কৃষক দলের সাধারণ সম্পাদক শহিদুল ইসলাম বাবলু ও ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপি এক নম্বর সদস্য প্রকৌশলী ইশরাক হোসেন প্রমুখ নেতারা।

 পরে সেখানে উপস্থিত সাংবাদিকদের কাছে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, আমাদের ঢাকা মহানগরে অত্যন্ত শান্তিপূর্ন কর্মসূচি ছিল- মোমবাতি প্রজ্জ্বলন করে আওয়ামী সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে অবস্থান নেওয়া। ঢাকা দক্ষিনে শান্তিপূর্ণভাবে এই কর্মসূচি হয়েছে। কিন্তু ঢাকা উত্তরে যখন কর্মসূচি প্রায় শেষ পর্যায়ে হঠাৎ করে আওয়ামী লীগ সন্ত্রাসীরা এসে আমাদের সিনিয়র নেতাদের ওপর আক্রমন করে। স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন, সেলিমা রহমান, যুগ্ম মহাসচিব সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, সাংগঠনিক সম্পাদক শামা ওবায়েদ, আমাদের উত্তরের মেয়রপ্রার্থী ছিলেন তাবিথ আউয়াল সেখানে ছিলেন। এই হাসপাতালে ছয়-সাতজন মহিলা কর্মী ভর্তি হয়েছেন। তাবিথ আউয়াল মাথায় আঘাতপ্রাপ্ত হয়েছেন। অন্যান্য সকলেই তারা গুরুতরভাবে আহত। এখানে তাদের চিকিৎসা চলছে।একইভাবে দেখেছেন ঢাকায় আসার পথে আমাদের ভাইস চেয়ারম্যান বরকতউল্লাহ বুলুর ওপর আক্রমন হয়েছে। তিনিও রক্তাক্ত হয়েছেন। বিএনপি মহাসচিব বলেন, আমরা যে কথাগুলি সব সময় বলছি, এখানে আওয়ামী লীগ ইচ্ছাকৃতভাবে উদ্দেশ্যমূলকভাবে নিয়মতান্ত্রিক আন্দোলনকে নস্যাৎ করার জন্য তাদের সন্ত্রাসী বাহিনীকে লেলিয়ে দিয়েছে। সমগ্র দেশে তারা ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করেছে। তারা যখন নির্বাচনের কথা বলে সেটা একটা প্রহসন ছাড়া আর কিছু নয়। এদিকে গুরুতর আহত বরকতুল্লাহ বুলুকে কুমিল্লা থেকে ঢাকায় এনে বসুন্ধরার এভারকেয়ার হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।



ইত্তেফাক/এনএ/ইআ