শনিবার, ৩০ সেপ্টেম্বর ২০২৩, ১৪ আশ্বিন ১৪৩০
দৈনিক ইত্তেফাক

জলাবদ্ধতায় নাকাল ডিএনডিবাসী

আপডেট : ১৮ সেপ্টেম্বর ২০২২, ০৩:০৫

এবারের বর্ষা মৌসুমে বৃষ্টি কম হওয়ায় কিছুটা খুশি হয়েছিলেন ডিএনডির বাসিন্দারা। কারণ প্রতি বর্ষায় জলাবদ্ধতার কারণে নাকানি চুবানি খেতে হয় বাসিন্দাদের। জলাবদ্ধতা আর দুর্ভোগ যেন ডিএনডিবাসীর নিয়তি। বছরের পর বছর এ নিয়ে প্রশাসনের দৃষ্টি আকর্ষণ, সমস্যা উপস্থাপন আর সমাধানের আশ্বাস পেলেও বছর ঘুরতেই সেই একই চিত্র পরিলক্ষিত হয়। বর্ষা মৌসুম শেষে শরতে বৃষ্টি হতেই নতুন করে আবার দেখা দিয়েছে জলাবদ্ধতা। 

নিন্মচাপের প্রভাবে গত কয়েকদিনের বর্ষণে আবার জলমগ্ন হয়ে পড়ে ডিএনডির ভেতরে থাকা এলাকাগুলো। বিশেষ করে ফতুল্লার সস্তাপুর, কায়েমপুর, ইসদাইর, গাবতলী, তল্লা, কুতুবআইল, কাঠেরপুর, শিয়াচর, তক্কারমাঠ, কোতালের বাগ, স্টেশন রোড, নয়াআটি, লামাপাড়া, নন্দলালপুর, পিলকুনি, পাগলা, দেলপাড়া, আলীগঞ্জ, দাপা, ভুঁইঘর, এলাকার রাস্তাঘাটে দেখা দিয়েছে জলাবদ্ধতা। প্রতিবছর বর্ষায় এসব রাস্তা ডুবলেও এবার দুই মাস পিছিয়ে সেই একই ভাবে জলাবদ্ধতার শিকার হয়েছে এলাকাগুলো। 

শিয়াচর এলাকার গৃহিণী হালিমা বেগম বলেন, সারারাত বর্ষণ শেষে সকালে উঠে দেখি ঘরে পানি উঠেছে। একদিকে গ্যাস নেই, অন্যদিকে ঘরে পানি। রান্না কিভাবে করবো? মাটির চুলাতেও তো রান্না করা সম্ভব হচ্ছে না। স্টেশন রোড এলাকার দোকানি আমানুল্লাহ বলেন, রাস্তায় পানি হাটু সমান। দোকানে কেনাবেচা কমে গেছে। সবদিক থেকে আমরা কষ্টের শিকার। দোকানে বেচাকেনা না থাকলে চলবো কিভাবে? মেম্বার চেয়ারম্যানরা এসে আমাদের দুর্দশা দেখে না। নির্বাচন এলেই তাঁরা শুধু ভোট চাইতে আসে। 

ডিএনডি প্রকল্প সূত্রে জানা যায়, ডিএনডি এলাকায় পানি নিষ্কাশনের জন্য ৯টি সেচ খাল, ৯টি ডিটিও খাল, ২১০টি আউটলেট খাল, ৮৫টি চকবন্দি খাল ছিলো। যেগুলোর অনেকগুলো ভরাট এবং অনেকগুলো উদ্ধার করা হয়েছে। কিন্তু প্রতিবারই সেগুলো ময়লা-আবর্জনায় পূর্ণ হয়ে যায়। এসব বিষয়ে বার বার স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা আশ্বাস দিলেও কোন স্থায়ী সমাধান হয়নি। 

কুতুবপুর ইউনিয়ন পরিষদের এক সদস্য নাম গোপন রাখার শর্তে বলেন, আমি ব্যক্তিগত ভাবে ড্রেন সব পরিস্কার করে রেখেছিলাম। কিন্তু পানি যদি সরতে না পারে তাহলে কি করার আছে? অনেকেই জলাবদ্ধতার শিকার হয়ে বাড়িঘর ছেড়ে অন্যত্র চলে যাচ্ছে। তবে কেউ না খেয়ে আছে এমন অভিযোগ শোনা যায়নি। ফতুল্লার দাপা এলাকার মনসুর বলেন, ড্রেনের ময়লা পানিতে পায়ে ঘা হয়েছে। এর সাথে ডাইংয়ের কেমিক্যালযুক্ত পানি যুক্ত হয়ে অবস্থা আরও খারাপ। ময়লা পানি আর দুর্গন্ধ সহ্য করেই টিকে আছি। সিটি করপোরেশনের অন্তর্ভুক্ত হলে যদি এই সমস্যার সমাধান হয়। এছাড়া আর কোন পথ দেখছি না।

ইত্তেফাক/ইআ