মঙ্গলবার, ০৩ অক্টোবর ২০২৩, ১৭ আশ্বিন ১৪৩০
দৈনিক ইত্তেফাক

স্বপ্নাদের অর্জনে আনন্দের ঢেউ উঠেছে রংপুরে

আপডেট : ২০ সেপ্টেম্বর ২০২২, ১৫:০৬

হিমালয় জয় করে সাফের চ্যাম্পিয়ন হয়েছে বাংলাদেশ। অধরা স্বপ্নকে হাতের মুঠোয় এনেছেন বাংলার মেয়েরা। বাংলার বাঘিনীদের ইতিহাস তৈরির অন্যতম কারিগর সিরাত জাহান স্বপ্না। সেই স্বপ্নার সাফল্যে পুরো দেশের সঙ্গে আনন্দের ঢেউ বইছে তার নিজ গ্রাম রংপুরের সদর উপজেলার সদ্যপুস্কুরিনীতেও। 

সোমবার (১৯ সেপ্টেম্বর) নেপালকে ৩-১ গোলে হারিয়ে সাফ নারী চ্যাম্পিয়নশিপের শিরোপা জিতেছে বাংলাদেশ।সদ্যপুস্কুরিনীর স্বপ্না টুর্নামেন্টে করেছে ৪ গোল। তার অবদানে বাংলাদেশ চ্যাম্পিয়ন হওয়ায় পুরো রংপুর জেলায় বইছে আনন্দের ঢেউ।

খেলা শেষ হওয়ার পরপরই এলাকায় মিষ্টি বিতরণ করা হয়েছে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে স্বপ্নার ছবি দিয়ে পোস্ট দিয়ে শুভেচ্ছা জানিয়েছে রংপুরের ফুটবলপ্রেমীরা। ভারতের ম্যাচে স্বপ্না দুটি গোল করেছিল।দারিদ্র জয় করা রংপুরের পালিচড়ার এই মেয়ে আজ সাফ ফুটবলের চ্যাম্পিয়নশিপের মুকুটটা অর্জনে ভূমিকা রেখেছে সামনে থেকেই।স্বপ্নার বাবা একজন বর্গাচাষী। একসময় তাদের মাথা গোঁজার ঠাঁই ছিল না। সেই ভাঙ্গাঘরে যেন এখন চাঁদের আলো।

সিরাত জাহান স্বপ্নার বাড়ি রংপুর সদরের সদ্যপুস্কুরিনী পালিচড়ার জয়রাম গ্রামে। স্বপ্নার পিতা মোকছার আলী আর মা লিপি বেগম। স্বপ্না সদ্যপুস্কুরিনী পালিচড়া ফুটবল দলের খেলোয়াড়। ২০১৩ সালে জাতীয় দলের ক্যাম্পে ডাক পায় স্বপ্না, সেই থেকে এখন পর্যন্ত জাতীয় দলে খেলছেন নিজের যোগ্যতা দিয়েই।

স্বপ্নার কোচ মিলন খান জানান, 'স্বপ্না অত্যন্ত মেধাবী খেলোয়াড়। সে দরিদ্র পরিবার থেকে উঠে এসেছে। এই সাফ নারী চ্যাম্পিয়নশিপে ৪ গোল করে দেশের জয়ে ভূমিকা রেখেছে সে। কোচ হিসেবে আমি গর্বিত এবং আনন্দিত।'

স্বপ্নার বাবা মোকছার আলী জানান, 'বিশ্বাস ছিল মেয়েরা ভালো কিছু করবে। আমি আমার মেয়ের জন্য সত্যি গর্বিত। আমাদের গ্রামসহ রংপুরবাসী খুশি। এটা আমাদের মতো গরিব পরিবারের জন্য বিরাট কিছু। আমার ভালো লাগছে আমার মেয়ে দেশের জন্য খেলছে, ভালো খেলে রংপুরের মুখ উজ্জ্বল করছে।'

কথা বলার সময় আবেগাপ্লুতও হয়ে যান স্বপ্নার বাবা। দেশবাসীর কাছে মেয়ের জন্য দোয়াও চেয়েছেন তিনি।

জেলা আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা মফিজার রহমান রাজু বলেন, 'আমার নিজ এলাকা রংপুরের পালিচড়ার একটি মেয়ে আজ সাফ ফুটবলের চ্যাম্পিয়নশিপ মুকুটটা এনে দিতে অবদান রাখলো। স্বপ্না ৪টি গোল করেছে পুরো  টুর্নামেন্টে।মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনার দেওয়া  মিনি স্টেডিয়াম আর সহায়তা আজ তাদের বিশ্বজয়ের স্পর্ধা দিয়েছে।'

রংপুর জেলা প্রশাসক আসিব আহসান বলেন, 'আমরা রংপুরবাসী সিরাত জাহান স্বপ্নার জন্য গর্ববোধ করছি। প্রধানমন্ত্রী তাদের জন্য সদ্যপুস্কুরিনী পালিচড়ায় একটা মিনি স্টেডিয়াম নির্মাণ করে দিয়েছে। নারী ফুটবলারের গ্রাম সদ্যপুস্কুরিনী আমাদের রংপুরকে আজ গর্বিত করেছে।'

ইত্তেফাক/এসএস