টেকসই উন্নয়ন অর্জনের জন্য নারী-পুরুষভেদে সবাইকে পরিবেশ বিপর্যয় সম্পর্কে জনসচেতনতা তৈরি এবং জেন্ডার সমতাকে মূলধারায় সম্পৃক্ত করার আহ্বান জানিয়েছে সংশ্লিষ্টরা। তারা বলেছেন, ‘বৈশ্বিক জলবায়ু পরিবর্তন আমাদের আর্থসামাজিক ব্যবস্থায় নেতিবাচক প্রভাব ফেলছে। জলবায়ু পরিবর্তনের এই প্রভাব বাংলাদেশি নারীদের খাদ্য, পানি এবং আয়ের উেসর ওপর সরাসরি প্রভাব ফেলছে। তাদের সামাজিক ও অর্থনৈতিকভাবে দুর্বল করছে।
সামাজিক প্রথা এবং ঐতিহ্যগত কারণেও জলবায়ুর পরিবর্তনে প্রাকৃতিক বিপর্যয়ে দেশের নারীরা পুরুষদের তুলনায় বেশি ক্ষতির সম্মুখীন। গতকাল বৃহস্পতিবার রাজধানীর বনানীতে ‘বাংলাদেশে লিঙ্গ সমতা এবং জলবায়ু পরিবর্তনের বর্তমান পরিস্থিতি’ শীর্ষক আলোচনাসভায় বক্তারা এসব কথা বলেন। লিঙ্গ সমতা এবং জলবায়ু পরিবর্তনের মধ্যে আন্তঃসম্পর্কের ওপর জাতীয় পর্যায়ে প্রভাব মূল্যায়নের ফলাফল প্রকাশ করা হয়। বাংলাদেশের চারটি সেক্টর যথা কৃষি, পানি সম্পদ, জ্বালানি, এবং বনায়নের ক্ষেত্রে জলবায়ু পরিবর্তন এবং দুর্যোগ ঝুঁকি হ্রাস সম্পর্কিত জেন্ডার সমন্বয়ের দুর্বল দিকগুলো চিহ্নিত করার লক্ষ্যে ইউএন উইমেন, ইউনাইটেড নেশনস এনভায়রনমেন্ট প্রোগ্রাম (ইউএনইপি) এবং ইন্টারন্যাশনাল ইউনিয়ন ফর কনজারভেশন অফ নেচার (আইইউসিএন) যৌথ সমন্বয়ে এই মূল্যায়ন কার্যক্রমটি পরিচালনা করা হয়।
অনুষ্ঠানে জানানো হয়, বাংলাদেশে দুর্যোগ সংক্রান্ত জেন্ডার-সংবেদনশীল স্ট্যান্ডিং অর্ডার অন ডিজাস্টার (এসওডি), জাতীয় দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা পরিকল্পনা, মুজিব জলবায়ু সমৃদ্ধি পরিকল্পনা, ডেলটা প্ল্যান এবং অষ্টম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনা রয়েছে। এই নীতিগুলো বাস্তবায়ন এবং পরিকল্পনাগুলোর অগ্রগতি পর্যবেক্ষণ করার জন্য একটি পদ্ধতিগত কাঠামো প্রয়োজন।
সুইডেন দূতাবাসের পরিবেশ ও জলবায়ু পরিবর্তন বিষয়ক প্রথম সচিব নায়োকা মার্টিনেজ ব্যাকস্ট্রোম বলেছেন, জলবায়ু পরিবর্তন এবং লিঙ্গ সমতার বিষয়ে বাংলাদেশের দৃঢ় নীতি রয়েছে। এই নীতিগুলো বাস্তবায়নে আমরা সবাই একসঙ্গে কাজ করতে পারি।
ইউএন উইমেন-এর ডেপুটি কান্ট্রি রিপ্রেজেন্টেটিভ দিয়া নন্দা বলেন, বাংলাদেশে টেকসই জেন্ডার-সংবেদনশীল জলবায়ু কার্যক্রম নিশ্চিত করতে জলবায়ু পরিবর্তন এবং জেন্ডার সমতা সম্পর্কিত বিভিন্ন মন্ত্রণালয় এবং বিভাগের মধ্যে মজবুত সহযোগিতা এবং সমন্বয় তৈরি করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের সচিব ড. ফারহিনা আহমেদ বলেন, জেন্ডার সংবেদনশীল নীতি এবং পরিকল্পনা বাস্তবায়নে প্রতিবন্ধকতা কমাতে সক্ষমতা বাড়াতে কাজ করতে হবে।
অনুষ্ঠানে আরো বক্তব্য রাখেন জাতিসংঘের পরিবেশ কর্মসূচি (ইউএনইপি) জলবায়ু পরিবর্তন কর্মসূচির আঞ্চলিক সমন্বয়কারী মোজাহারুল আলম, ইন্টারন্যাশনাল ইউনিয়ন ফর কনজারভেশন অব নেচার (আইইউসিএন) কান্ট্রি রিপ্রেজেন্টেটিভ রকিবুল আমিন, জেন্ডার রেসপন্সিভ কোস্টাল অ্যাডাপ্টেশন প্রজেক্টের প্রকল্প পরিচালক মো. ইকবাল হুসাইন প্রমুখ।