শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০
The Daily Ittefaq

যশোর মাতালো টিম ‘অপারেশন সুন্দরবন’

আপডেট : ০২ অক্টোবর ২০২২, ২১:১৪

র‌্যাবের দুঃসাহসিক অভিযান নিয়ে নির্মিত ‘অপারেশন সুন্দরবন’ টিম মাতিয়ে গেল যশোর। ২৩ সেপ্টেম্বর দেশের প্রেক্ষাগৃহে মুক্তি পাবার পর বর্তমানে দ্বিতীয় সপ্তাহে প্রদর্শিত হচ্ছে সিনেমাটি। এমন সময়ে এসেও প্রচারণায় ব্যস্ত সময় পার করছে ‘অপারেশন সুন্দরবন’ টিম। এরই অংশ হিসেবে রবিবার সিনেমাটির প্রচারে যশোরে আসে ‘অপারেশন সুন্দরবন’ টিম।

এদিন দুপুরে শহরের লালদীঘি হরিসভা মন্দিরে দর্শকের প্রাণোচ্ছল উচ্ছ্বাসে মুগ্ধ হয়েছেন এই সিনেমার সদস্যরা। সিনেমাটির নায়িকা নুসরাত ফারিয়া, নায়ক সিয়াম আহমেদ ও রোশানকে পেয়ে মেতেছে দর্শকরাও। তাদের দেওয়া হয়েছে সংবর্ধনা। সংবর্ধনার আয়োজন করে সাংস্কৃতিক সংগঠন তির্যক যশোর।

সংবর্ধনা শেষে চিত্রনায়ক সিয়াম বলেন, বাংলা সিনেমার জাগরণ শুরু হয়েছে। এই জাগরণের প্রয়োজন ছিল। দর্শক আবার নতুন করে সিনেমা হলে আসতে শুরু করেছে। নিঃসন্দেহে বাংলা সিনেমার জন্য এটা সুখবর। অপারেশন সুন্দরবন দর্শকদের কি বার্তা দিলো, সেটা উল্লেখযোগ্য বিষয় না। আমরা সিনেমাটি বানিয়েছি সুন্দরবনের ইতিহাস জানাতে। বিশ্বের সর্ববৃহৎ ম্যানগ্রোভ বন সুন্দরবনকে কিভাবে দস্যু মুক্ত করা হয়েছে, এখানকার প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর বসবাস কেমন, সেটা জানানোর জন্যই এই সিনেমা। আশাকরি দর্শক এই সিনেমাটি দেখে মুগ্ধ হবে।

ছবি: সংগৃহীত

‘অপারেশন সুন্দরবন’-এর কয়েকটি দৃশ্যের স্মৃতিচারণ করে এই অভিনেতা বলেন, দীর্ঘ চার বছর এই সিনেমার কলাকুশলীরা সময় শ্রম দিয়েছে। চারটা বছর একটা ছবির সাথে থাকাটা অনেক বড় বিষয়। প্রায় ১৫শ’ শিল্পী কলাকুশলী এই সিনেমার জন্য কাজ করেছে, যাতে দর্শকদের সেরাটা দিতে পারি। এত কষ্ট করেও যদি আপনারা হলে না আসেন, তাহলে কষ্টটা বৃথা যাবে। একইসাথে বাংলা সিনেমাকে আগের জায়গায় আনার জন্য আমরা নতুন প্রজন্মের এ অভিনেতারা যুদ্ধ করছি সেটা বৃথা যাবে। তাই দর্শকরা হলে আসেন, হলকে ভালোবাসেন। অনেক ভালো ভালো সিনেমা মুক্তি পাচ্ছে, আরও কিছু সিনেমাও অপেক্ষায় রয়েছে। আবার দর্শকদের হলমুখী করতে ভালো ভালো সিনেমাও নির্মাণ হচ্ছে। আপনারা হলে আসলে দেখবেন বাংলা সিনেমা আবার আগের জায়গায় চলে এসেছে।

নায়িকা নুসরাত ফারিয়া বলেন, যশোরবাসী ঘরে ঘরে সংস্কৃতি চর্চা করে বলেই এই শহরেই এসেছি সিনেমার প্রচারের জন্য। এখানকার মানুষেরা সংস্কৃতিপ্রেমী বলেই এখানে অর্ধশতাধিক সাংস্কৃতিক সংগঠন রয়েছে। সিনেমা প্রদর্শনের জন্য এশিয়ার সর্ববৃহৎ সিনেমা হল মণিহার রয়েছে এই শহরে। পূজার সময় নতুন কোনো সিনেমা মুক্তি পেলে আমার খুব ভালো লাগে। অপারেশন সুন্দরবন অনেক দুঃসাহসিক সিনেমা। সুন্দরবনের অনেক দুর্লভ জায়গায় এই সিনেমাটি দৃশ্যধারণ হয়েছে। আমার ক্যারিয়ারের নতুন কিছু শিখেছি এই সিনেমার মাধ্যমে। দর্শকরা সিনেমাটি দেখলে পয়সা উসুল হবে।

সিনেমার পরিচালক দীপংকর দীপন সাংবাদিকদের বলেন, বাংলাদেশের দর্শক সিনেমা দেখতে হলে যাচ্ছে। সেটার সঙ্গে নতুন এক জোয়ার যুক্ত করবে ‘অপারেশন সুন্দরবন’। হলে একের পর এক দর্শকদের জোয়ার দেখে বোঝা যাচ্ছে দর্শকরা হলমুখী হয়েছে। এর একটাই কারণ আবারও দর্শক ভালো সিনেমা পাচ্ছে। বাংলা সিনেমার এক নবযাত্রা শুরু হয়েছে; এই যাত্রা আর থামবে না।

তিনি আরও বলেন, যশোরের সংস্কৃতির সাথে আমার আত্মার টান। এসে খুব ভালো লাগছে। সিনেমাটি সবাইকে নিয়ে দেখবেন। একবারে মন না ভরলে কয়েকবার দেখবেন। ‘অপারেশন সুন্দরবন’-এ খুব কষ্ট করে কাজ করেছে অভিনেতা-অভিনেত্রীসহ সকল কলাকুশলী। যেখানে কেউ যায়না, ওখানে গিয়েও আমরা ছবিটির দৃশ্য ফুটিয়ে তোলার জন্য অনেক রিস্ক নিয়ে দৃশ্য ধারণ করেছি আপনাদের জন্য। এখানে যেভাবে আমাদের দেখতে এসেছেন, আমরা চাই হলেও আপনারা সিনেমাটি দেখতে এভাবেই ভীড় করবেন।

তির্যক যশোরের সংবর্ধনা শেষে অপারেশন সুন্দরবন’ টিম যোগ দেন যশোর পূজা পরিষদের সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে। কয়েকটি পূজামন্দির দর্শন শেষে তারা বিকেলে মণিহার সিনেমা হলে দর্শকদের সাথে অপারেশন সুন্দরবনটি উপভোগ করেন।

জেলা পূজা উদযাপন পরিষদের সভাপতি দীপংকর দাস রতন জানান, র‌্যাবের দুঃসাহসিক অভিযান নিয়ে নির্মিত চলচ্চিত্র ‘অপারেশন সুন্দরবন’ পরিচালক যশোরের সাংস্কৃতিক অঙ্গনের সাথে জড়িত। তিনি তির্যক যশোরের সদস্য। তার দ্বিতীয় সিনেমা অপারেশন সুন্দরবন টিমের অভিনেত্রী অভিনেতারা অনেক সুন্দর অভিনয় করেছেন। যে কারণে আমরা তাদের সংবর্ধনা দিয়েছি। আশা করছি এ সিনেমাটি দর্শকদের মুগ্ধ করবে। একইসাথে দর্শকের হলমুখীতা অব্যহত থাকবে।

 

 

ইত্তেফাক/বিএএফ

এ সম্পর্কিত আরও পড়ুন

এ সম্পর্কিত আরও পড়ুন