মঙ্গলবার, ৩০ মে ২০২৩, ১৫ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩০
দৈনিক ইত্তেফাক

তারকাদের ব্যক্তি ইমেজই টিকিয়ে রাখে তাদের সেরা অবস্থান!

আপডেট : ১৫ অক্টোবর ২০২২, ১৮:১২

চলচ্চিত্রের নানা ধারাবদলে এখন অনেকেই বলছেন, নতুনভাবে চলচ্চিত্রের এক দারুণ সময় চলছে। তবে ব্যক্তি ইমেজের নানা জটিলতায় একজন তারকার ক্যারিয়ার যে সত্যিকার অর্থেই ক্ষতি করে তা বারবার প্রমাণ মিলেছে এর আগেও যেমন এখনও তেমন। সেদিক দিয়ে নিজের কাজের ব্যস্ততা ও ইমেজ ব্র্যান্ডিংয়ে দর্শকদের কাছে অনুপ্রেরণা দেয় এমন তারকার সংখ্যা কিন্তু খুব বেশি নেই আমাদের দেশে।

এর ভেতরে অনেকেই আছেন স্ট্রাগল করে যাচ্ছেন প্রতিনিয়ত। তবু নিজের ইমেজকে ‘তারকা ইমেজ’-এ নিয়ে যেতে পারছেন না। কারও কারও হয়তো মেধা আছে, কিন্তু ভাগ্যটা সাপোর্ট দিচ্ছে না কোনোভাবেই! আরেক দলের কেউ কেউ টিভি নাটকে সময় দেবেন, না পুরোদস্তুর সিনেমায় সময় দেবেন তা নিয়ে ভীষণ দ্বিধায় ভুগছেন। 

এর বাইরে ব্যক্তিজীবনের নানা স্ক্যান্ডালে নিজের ইমেজের ক্ষতি করে ফেলেছেন অনেকখানি। তবে নিজের ইমেজকে দারুণভাবে লালন করে কাজের প্রতি অধ্যাবসায় রেখে হাতেগোনা কয়েকজন তারকা রয়েছেন, যারা এ সময়ের চলচ্চিত্রের নায়িকা হিসেবে দারুণ এক জায়গা করে নিয়েছেন। এদের ভেতরে অন্যতম ৩ জন হলেন বিদ্যা সিনহা মীম, নুসরাত ফারিয়া ও আজমেরী হক বাঁধন। 

কমার্শিয়াল সাকসেসের দৌড়ে মীম এখন এই রেসে অনেকখানিই এগিয়েই আছে বলা যায়। ফিল্মি ক্যারিয়ারে দারুণ এক বৃহস্পতি যাচ্ছে এখন তার। বিশেষ করে একাধিক জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার পাওয়া এই অভিনেত্রীর ক্যারিয়ারে একটি ব্লকবাস্টার হিট ছবির যেন খুব প্রয়োজন ছিল। মীম প্রসঙ্গে দারুণ এক অবজারভেশন করেছিলেন মিশা সওদাগর। তিনি মীম প্রসঙ্গে বলতে গিয়ে বলেন, ‘আমার মনে হয় পরাণের সাকসেসটা মীমের ফিল্ম ক্যারিয়ারকে পরিপূর্ণ করলো। এখন ওর মূল দায়িত্ব হবে এই জায়গাটা দৃঢ়ভাবে ধরে রাখা।’

স্বভাববিনয়ী ও মেধাবী অভিনেত্রী হিসেবে মীম তার জাত চিনিয়েছেন রায়হান রাফির পরাণ ছবিতে। সামনে আসছে একই পরিচালকের ‘দামাল’ ছবিটি। এর বাইরে বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংস্থার শুভেচ্ছাদূত হিসেবে কাজ করছেন আর একাধিক নামিদামী ব্র্যান্ডের সাথে সংযুক্ত রয়েছেন দীর্ঘমেয়াদে।

একইসাথে নুসরাত ফারিয়ার ফিল্ম ক্যারিয়ার এই মেঘ এই রোদ্দুর হলেও তিনিও দুই বাংলার চলচ্চিত্রে দারুণভাবে নিজের সিগনেচার হিসেবে কাজ করে চলেছেন। প্রতিনিয়ত নিজেকে ভেঙে গড়ার চেষ্টা তার। তা ফিল্ম হোক, ইভেন্ট হোক, ব্র্যান্ড ইমেজে নুসরাত ফারিয়া এই জায়গায় যেন অনেকের অনুপ্রেরণা। সর্বাধিক কোম্পানির ব্র্যান্ড অ্যাম্বাসেডর হিসেবে কাজ করছেন এখন এই চিত্রনায়িকা। একইসাথে ‘বঙ্গবন্ধু’র বায়োপিকের অন্যতম চরিত্রে কাজ পাওয়াটা তার ক্যারিয়ারের দারুণ এক বসন্তের মতো কাজ করেছে।

পাশাপাশি কান ফেস্টিভ্যালে বাংলাদেশি চলচ্চিত্রের প্রতিনিধিত্ব করা এবং এখন অবধি আন্তর্জাতিকভাবে সেরা সাফল্যের প্রতিনিধিত্ব করা নায়িকার নাম বাঁধন। নিজের ক্যারিয়ার ও ফিল্ম নিয়ে আগে যতটা সচেতন ছিলেন এই অভিনেত্রী এখন যেন তার থেকে ঢের নিজেকে ঢেলে সাজিয়েছেন তিনি। বলিউডের অনুরাগ কাশ্যপের ছবিতে কাজ করা, সৃজিতের সিরিজের পাশাপাশি দেশে বিদেশে নিজের ফিল্মি ক্যারিয়ারে চলচ্চিত্রের গল্পে নিজের প্রাধান্য রেখেই নতুন নতুন কাজে হাত দিচ্ছেন।

একটা বিষয় খুবই স্পষ্ট তা হলো দেশের এই তিন শীর্ষ নায়িকার ব্যাক্তিজীবনের স্ক্যান্ডাল বা ইমেজের ক্ষেত্রে যথেষ্ঠ সচেতন থেকেছেন। আর থেকেছেন বলেই চলচ্চিত্রে বিনিয়োগকারী থেকে শুরু করে একাধিক ব্র্র্যান্ড এই সকল তারকার প্রতিই আগ্রহ বাড়িয়েছে। এখন দেখার বিষয় চলচ্চিত্রের এই দারুণ সুবাতাসের সময়ে তারা নিজেদের এই ব্র্র্যান্ড ইমেজ, মেধা, পরিশ্রম আর অধ্যাবসায় দিয়ে আমাদের চলচ্চিত্রকে কতদূর নিয়ে যেতে পারেন।

ইত্তেফাক/বিএএফ