বৃহস্পতিবার, ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০
The Daily Ittefaq

ক্যারিবিয়ানদের উড়িয়ে ফের চমক দেখালো স্কটল্যান্ড

আপডেট : ১৭ অক্টোবর ২০২২, ১৫:১৪

গত টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে বাংলাদেশকে হারিয়ে চমক দেখিয়েছিলো স্কটল্যান্ড। এবার অস্ট্রেলিয়ার মাটিতেও স্কটিশরা শুরু করলো আরো এক চমক দিয়ে। বিশ্বকাপের প্রথম পর্বে নিজেদের প্রথম ম্যাচে দুইবারের বিশ্বচ্যাম্পিয়নে ওয়েস্ট ইন্ডিজকে ৪২ রানে গুড়িয়ে দিয়ে বিশ্বকাপে আবারো অঘটনের জন্ম দিয়েছে স্কটল্যান্ড।

হোবার্টের বেলেরিভ ওভালে বিশ্বকাপে নিজেদের প্রথম ক্য্যারিবিয়ানদের মুখোমুখি হয় স্কটিশরা। টস জিতে স্কটল্যান্ডকে ব্যাটিংয়ে আমন্ত্রণ জানায় ক্যারিবিয়ান অধিনায়ক নিকোলাস পুরান। ওপেনার জরর মুনসের দৃঢ় ফিফটিতে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে নির্ধারিত ২০ ওভারে ৫ উইকেটে ১৬০ রান সংগ্রহ করে স্কটল্যান্ড।

১৬১ রানের লক্ষ্যে ব্যাট করতে নেমে ইনিংসের ৯ বল বাকি থাকতে ১১৮ রানেই অলআউট হয়ে যায় উইন্ডিজরা। ৪২ রানের বড় ব্যবধানে উইন্ডিজ বধ করে সুপার টুয়েলভে যাওয়ার রাস্তাও অনেকখানি পরিষ্কার করে রাখলো স্কটল্যান্ড।

টস হেরে ব্যাটিংয়ে নেমে শুরু থেকেই ওয়েস্ট ইন্ডিজের বোলারদের উপর চড়াও হন দুই স্কটিশ ওপেনার জর্জ মুনসে আর মাইকেল জোনস। প্রথম ৫ ওভারে বিনা উইকেটেই দলীয় ৫০ রান পূর্ণ করেন এই দুজন। 

৬ষ্ঠ ওভারের তৃতীয় বলে হঠাৎই বৃষ্টি বাঁধা। মাথ ছেড়ে উঠে যেতে হয় দুই দলের ক্রিকেটারদেরই। অবশ্য বৃষ্টি তেমন কিছুই করতে পারেনি। ৪৫ মিনিট পরই আবার মাঠে নামে দুদল। খেলার দৈর্ঘ্যও থাকে নির্ধারিত ২০ ওভারই। পাওয়ার প্লের ৬ ওভার শেষে বিনা উইকেটে ৫৪ রান তোলে স্কটল্যান্ড।

বৃষ্টিতে ম্যাচের দৈর্ঘ্যে প্রভাব না ফেললেও স্কটল্যান্ডের ধারাবাহিকতায় হয়তো ফেলেছিলো। বৃষ্টির পরেই ছন্দ হারায় স্কটিশরা। ইনিংসের ৭ম ওভারে জেসন হোল্ডারের বলে আউট হয়ে যান জোনস। ১৭ বলে ২০ রান করে দলীয় ৫৭ রানের মাথায় সাজঘরে ফেরেন এই ওপেনার। 

এরপর থেকেই রান তোলার গতি ধীর হয়ে যায় স্কটিশদের। তিন নম্বরে নামা ম্যাথু ক্রস ৩ রানেই আউট হয়ে গেলে ১০ ওভার শেষে তাদের সংগ্রহ দাঁড়ায় ২ উইকেটে ৭২ রান। অধিনায়ক রিচি বেরিংটোনও আউট হয়ে ১৪ বলে ১৬ রান করেই। ১২তম ওভারে আলজারি জোসেফের বলে দলীয় ৮৬ রানে তৃতীয় উইকেট হারায় স্কটল্যান্ড।

পাঁচ নম্বরে ব্যাটিংয়ে এসে ঝড়ের আভাস দিয়েছিলেন ক্যালাম ম্যাকলিওড। তবে ৪ চারে ১৪ বলএ ২৩ রান করেই ফেরেন তিনিও। ওডেন স্মিথের করা ইনিংসের ১৬তম ওভারের প্রথম বলেই ব্র্যান্ডন কিংয়ের হাতে ধরা পড়েন তিনি। এরপর ৬ বলে ৪ রান করেই পরের ওভারে ফিরে যান মাইকেল লিস্কও। ১২৫ রানে গিয়ে ৫ম উইকেট হারিয়ে ফেলে স্কটিশরা।

ক্রিজের অপর প্রান্তে তখনও অবিচল ওপেনিংয়ে নামা জর্জ মুনসে। লিস্ক আউট হয়ার আগের বলেই তুলে নিয়েছিলেন টি-টোয়েন্টিতে নিজের অষ্টম অর্ধ-শতক। শেষের তিন ওভারে মুনসেকে বেশ ভালোই সঙ্গ দিয়েছে সাত নম্বরে নামা ক্রিস গ্রেভস। ৬ষ্ঠ উইকেট জুটিতে এই দুজন মিলে যোগ করেন ৩৫ রান।

নির্ধারিত ২০ ওভার শেষে ৫ উইকেটে ১৬০ রান সংগ্রহ করে মাঠ ছাড়ে স্কটিশরা। ৫৩ বলে ৯ চারে ৬৬ রান করে অপরাজিত থাকেন মুনসে, আর গ্রেভসের ব্যাট থেকে আসে ১১ বলে হার না মানা ১৬ রান। ক্যারিবিয়ানদের হয়ে দুইটি করে উইকেট নেন আলজারি জোসেফ আর জেসন হোল্ডার। 

১৬১ রানের টার্গেটে ব্যাট করতে নেমে শুরুটা ভালোই করে ক্যারিবীয়রাও। তৃতীয় ওভারেই কাইল মায়ার্সের উইকেট হারালেও ৫ ওভারেই ৪৭ রান তুলে ফেলে উইন্ডিজরা। পাওয়ার প্লের শেষ ওভারে ১৩ বলে ১৪ রান করা এভিন লুইসকে ফিরিয়ে দিয়ে স্কটল্যান্ডকে লড়াইয়ে রাখেন ব্র্যাড হোয়েল। ২ উইকেটে ৫৩ রান নিয়ে পাওয়ার প্লে শেষ করে ওয়েস্ট ইন্ডিজ।

৫৩ রানে দ্বিতীয় উইকেট হারানোর পর থেকেই ধ্বস নামে উইন্ডিজ ব্যাটিং লাইনআপে। পরের ২৬ রান তুলতেই ক্যারিবীয়রা হারিয়ে ফেলে আরো ৬ উইকেট। ১৩ তম ওভারের প্রথম বলে ৭৯ রানে ৮ম উইকেট হারায় ওয়েস্ট ইন্ডিজ। ধ্বংসস্তুপে দাঁড়িয়ে এক প্রান্ত আঁকড়ে ধরে ছিলেন জেসন হোল্ডার। তবে তার ৩৩ বলে ৩৮ রানের ইনিংস শুধু পরাজয়ের ব্যবধানই কমিয়েছে। পরের ব্যাটাররাও আর সঙ্গ দিতে পারেননি তাকে।

১৯তম ওভারে শেষ ব্যাটার হিসেবে হোল্ডার যখন আউট হন ততক্ষনে ৪২ রানে হেরে গেছে টি-টোয়েন্টিতে দুইবারের বিশ্বচ্যাম্পিয়নরা। স্কটল্যান্ডের হয়ে ৪ ওভারে ১২ রান দিয়ে ৩ উইকেট নেন মার্ক ওয়াট। এছাড়া দুটি করে উইকেট নেন ব্র্যাড হোয়েল আর মাইকেল লিস্ক।

ইত্তেফাক/এসএস