সুষ্ঠু নির্বাচনের স্বার্থে দেড়শ আসনে ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিন (ইভিএম) না কিনে সিসি ক্যামেরা কেনা ভালো বলে মন্তব্য করেছেন সাবেক নির্বাচন কমিশনার (ইসি) ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) এম সাখাওয়াত হোসেন। বুধবার (১৯ অক্টোবর) রাজধানীর আগারগাঁওয়ে নির্বাচন ভবনে বর্তমান কমিশনের সঙ্গে মতবিনিময় সভা শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এ মন্তব্য করেন।
ইভিএম নিয়ে অনেক বিতর্ক আছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ভালো হোক মন্দ হোক। দেড়শ আসনে ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিন (ইভিএম) না কিনে যতখানি পারেন বেটার (ভালো) সিসি ক্যামেরা কেনেন। এটা শুধু কেন্দ্র থেকে নয়, ভাগ করে দেন, পাঁচজন কমিশনার আছেন। এগুলো রেকর্ডেড থাকবে।
এ সময় ভোটের অনিয়ম এড়াতে গাইবান্ধা-৫ (ফুলছড়ি-সাঘাটা) আসনের উপ-নির্বাচন বন্ধ করে দেওয়ায় কাজী হাবিবুল আউয়ালের নেতৃত্বাধীন বর্তমান কমিশনকে স্বাগত জানিয়েছেন সাবেক ইসি সাখাওয়াত হোসেন। তিনি বলেন, ওনারা গাইবান্ধা-৫ সংসদীয় আসনে যে অ্যাকশন নিয়েছেন, এর জন্য আমি তাদের স্বাগত জানিয়েছি। এ পর্যন্ত ঠিক আছে। এর পরের ধাপগুলো যাতে আপনারা স্লিপ না করেন। যদি করেন তাহলে জাতির কাছে অন্যরকম একটা মেসেজ (বার্তা) যাবে। যে আপনারা এটুকু দেখানোর জন্য করলেন। বাকিগুলো করলেন না।
তিনি বলেন, নির্বাচন কমিশন যদি মনে করে ‘অ্যাটমোস্ফিয়ার’ ঠিক সেই তাহলে ইলেকশন বন্ধ করতে পারেন। বন্ধ রাখতে পারেন। যতক্ষণ পর্যন্ত আপনি মনে করবেন যে পরিবেশ ঠিক হয়নি ততক্ষণ পর্যন্ত বন্ধ রাখতে পারবেন। কোথাও কোনো বাধা নেই। এ সময় ডিসি-এসপিদের সঙ্গে ইসি আনিছুরের বাকবিতণ্ডার প্রসঙ্গ টেনে তিনি বলেন, ‘যেটা হয়নি কখনো। এখানে ওনাদের কনফিডেন্স আনতে হবে যে আপনারা প্রটেকশন দিচ্ছেন নির্বাচনে।’
এদিকে গাইবান্ধা উপনির্বাচন বন্ধে নির্বাচন কমিশন সঠিক সিদ্ধান্ত নিয়েছে বলে প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী হাবিবুল আউয়ালকে আশ্বস্ত করেছে সাবেক তিন সিইসি। ভোটে অনিয়মে জড়িতদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দিয়ে আগামী জাতীয় নির্বাচনে কঠোর বার্তা দেওয়ারও পরামর্শ দিয়েছেন কাজী রকিব উদ্দিন, বিচারপতি আবদুর রউফ ও কেএম নুরুল হুদা।
এ বিষয়ে প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী হাবিবুল আউয়াল বলেছেন, গাইবান্ধা নির্বাচন বন্ধের ঘটনায় সবাই সমর্থন জানিয়েছেন। প্রথমবারের মতো নির্বাচন কমিশন এত বড় পদক্ষেপ নিয়েছে। এটা আইন অনুযায়ী করা হয়েছিল। সাবেক প্রধান নির্বাচন কমিশনার ও অন্যান্য কমিশনারদের থেকে দিক নির্দেশনামূলক পরামর্শ পেয়েছি।
গাইবান্ধার ঘটনা ফলোআপ না করা হলে নির্বাচন কমিশনের পদক্ষেপ প্রশ্নবিদ্ধ হবে সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে কাজী হাবিবুল আউয়াল বলেন, এই ঘটনা সব মহলে যথেষ্ট উত্তেজনা তৈরি করেছে। তদন্ত প্রতিবেদন আসুক, তারপর আপনারা দেখেন আমরা কি করি।
বুধবার বেলা ১১টায় রাজধানীর আগারগাঁওয়ে নির্বাচন ভবনের সম্মেলনকক্ষে এ বৈঠক শুরু হয়েছিল। বৈঠকে সাবেক সিইসি আব্দুর রউফ, কে এম নূরুল হুদা, কাজী রকিব উদ্দীন আহমদ, সাবেক নির্বাচন কমিশনার এম সাখাওয়াত হোসেন, রফিকুল ইসলাম, কবিতা খানম, শাহ নেওয়াজ, সাবেক ইসি সচিব মোহাম্মাদ সাদিক, মোহাম্মাদ আবদুল্লাহ, সিরাজুল ইসলাম, হেলাল উদ্দীন আহমেদ এবং ইসির সাবেক অতিরিক্ত সচিব জেসমিন টুলী ও মোখলেছুর রহমান অংশ নিয়েছিলেন।