জাতীয় পার্টি (জাপা) চেয়ারম্যান জি এম কাদের বলেছেন, অব্যবস্থাপনায় বাংলাদেশ বিশ্বচ্যাম্পিয়ন। বিশ্বব্যাপী জরিপ করা হলে অব্যবস্থাপনায় বাংলাদেশের কাছাকাছি কোনো দেশ নেই। দেশে গণতন্ত্র নেই, গণতন্ত্রের নামে একনায়কতন্ত্র চলছে। খাদ্যের অভাবে কখনো দুর্ভিক্ষ হয় না। দেশ পরাধীন হলে অথবা একনায়কতন্ত্র চললে সেদেশে দুর্ভিক্ষ হবেই। উপজেলা দিবস উপলক্ষ্যে গতকাল রবিবার জাপা চেয়ারম্যানের বনানী কার্যালয় মিলনায়তনে আয়োজিত আলোচনাসভায় সভাপতির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।
জি এম কাদের বলেন, দেশে গণতন্ত্র না থাকলে বৈষম্য সৃষ্টি হয়। বৈষম্য থেকেই দেখা দেয় দুর্ভিক্ষ। জাতিসংঘের খাদ্যবিষয়ক একটি প্রতিষ্ঠানের উদ্ধৃতি দিয়ে তিনি বলেন, বিশ্বের ৪৫টি দেশে খাদ্যসংকট হবে। এর মধ্যে এশিয়ার ৯টি আর দক্ষিণ এশিয়ার তিনটি দেশের মধ্যে বাংলাদেশের নাম আছে।
তিনি বলেন, সরকারের উচ্চ পর্যায় থেকেও বলা হচ্ছে খাদ্যসংকট হবে। দিনদিন ডলারের দাম বেড়ে যাচ্ছে, অধিক দামে খাবারও কিনতে পারবে না বাংলাদেশ। তাই দুর্ভিক্ষ ঠেকাতেও দেশে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করতে হবে। গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা হলেই সুশাসন এবং সামাজিক ন্যায়বিচার নিশ্চিত হবে। তিনি বলেন, দিনদিন রিজার্ভ কমে যাচ্ছে। আবার আগামী বছর থেকে সুদ ও আসলসহ ২২ বিলিয়ন ডলার শোধ করতে হবে। তখন মারাত্মক অর্থনৈতিক সংকটে পড়তে পারে দেশ। যখন মেগা প্রকল্পের নামে হাজার-হাজার কোটি টাকা ব্যয় করা হচ্ছে, তখন শুধু সুইস ব্যাংকেই পাচার হয়েছে ৪ লাখ কোটি টাকা। মেগা প্রকল্পের নামে একটি শ্রেণির দেশে টাকা রাখার জায়গা নেই। তারা বিদেশে হাজার-হাজার কোটি টাকা পাচার করছে। আর বেশির ভাগ মানুষই খাবার কিনতে পারে না। রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের আগেই দেশের রিজার্ভ কমে গেছে। দুর্নীতি ও অব্যবস্থাপনার কারণে দেশের অর্থনীতিতে সংকট সৃষ্টি হয়েছে।
এতে অন্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন জাপার প্রেসিডিয়াম সদস্য সাহিদুর রহমান টেপা, মীর আব্দুস সবুর আসুদ, অ্যাডভোকেট রেজাউল ইসলাম ভূঁইয়া, আলমগীর সিকদার লোটন, জহিরুল ইসলাম জহির, মোস্তফা আল মাহমুদ, আতিকুর রহমান আতিক প্রমুখ।
জি এম কাদের উপনেতা থাকবেন না : রাঙ্গা
এদিকে, উপজেলা দিবস উপলক্ষ্যে গতকাল জাতীয় প্রেসক্লাবে পৃথক আলোচনাসভার আয়োজন করেন রওশন এরশাদের অনুসারীরা। এতে সংসদের বিরোধীদলীয় চিফ হুইপ মসিউর রহমান রাঙ্গা বলেছেন, সংসদের আসন্ন অধিবেশনে জি এম কাদেরের উপনেতার আসনটি সরে যাবে। রওশন এরশাদের চেয়ারের পাশে তিনি আর বসতে পারবেন না। ঐ চেয়ারে বসবেন অন্য কেউ। সে ব্যবস্থা করা হয়েছে। শুধু তাই না, জাপার বনানী ও কাকরাইল অফিস থেকেও জি এম কাদেরকে তাড়ানো হবে। তিনি বলেন, আগামী ২৬ নভেম্বর কাউন্সিলের মাধ্যমে জাপার নেতৃত্বে পরিবর্তন হবে। সেখান থেকে বিদায় নেবেন জি এম কাদের। জি এম কাদেরের সঙ্গে তিন জন এমপি ছাড়া আর কেউ নেই।