বৃহস্পতিবার, ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০
The Daily Ittefaq

বগুড়ায় রেলসড়কে অরক্ষিত ২৫ লেভেল ক্রসিং

আপডেট : ২৯ অক্টোবর ২০২২, ০৪:৩১

পশ্চিম বগুড়ার সান্তাহার থেকে পূর্বে সোনাতলা পর্যন্ত প্রায় ৭০ কিলোমিটার দীর্ঘ রেলসড়কে ২৫টি লেভেল ক্রসিং এখনো অরক্ষিত থাকায় দুর্ঘটনার ঝুঁকি বেড়েই চলেছে। এছাড়া শহরের সঙ্গে পূর্ব বগুড়ার যোগাযোগ রক্ষাকারী করতোয়া রেল সেতু দিয়ে অনেক মানুষ হেঁটে চলাচল করায় দুর্ঘটনার ঝুঁকি আরো বেড়েছে।

বগুড়া রেলওয়ের সূত্রে জানা গিয়েছে, পশ্চিম বগুড়ার সান্তাহার থেকে পূর্বে সোনাতলা পর্যন্ত প্রায় ৭০ কিলোমিটার দীর্ঘ রেল সড়কে বিভিন্ন ধরনের অনুমোদিত ৪৮টি লেভেল ক্রসিং রয়েছে। এর মধ্যে গেটম্যান ও ব্যারিয়ার রয়েছে ৩০টিতে। বাকি ১৮টিতে ব্যারিয়ার বা গেটম্যান নেই। এছাড়া অনুমোদন নেই এমন আরো ২৫ রেলগেটের সন্ধান মিলেছে। বগুড়া জেলায় ৭০ কিলোমিটার রেলপথে প্রতিদিন ১৪টি ট্রেন যাতায়াত করে।

বগুড়ার সোনাতলা থেকে সান্তাহার পর্যন্ত রেলওয়ের প্রকৌশল ও ট্রাফিক বিভাগের চারটি ক্যাটাগরিতে যে ৪৮টি স্থানে লেভেল ক্রসিং রয়েছে এর মধ্যে ‘স্পেশাল’ এবং ‘এ’ ক্যাটাগরির মাত্র আটটি ক্রসিং সুরক্ষিত। স্পেশাল ক্যাটাগরির ছয়টি ক্রসিংয়ে ২৪ ঘণ্টায় তিন জন করে গেটম্যান ও ‘এ’ ক্যাটাগরির দুটি ক্রসিংয়ে দুজন গেটম্যান দায়িত্ব পালন করেন। গাবতলী স্টেশন এবং সান্তাহার জংশনে প্রবেশের আগের ক্রসিংটি ‘এ’ ক্যাটাগরির। ‘সি’ ক্যাটাগরির ৩৮টি অরক্ষিত ক্রসিংয়ের মধ্যে ১০টি জনবহুল এলাকায়। ফলে এসব ক্রসিং ক্রমান্বয়ে ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে উঠেছে। কয়েকটি ঝুঁকিপূর্ণ ক্রসিং হলো বগুড়া শহরের চেলোপাড়া, কৈচড়, সাবগ্রাম, আকাশতারা, আদমদীঘি স্টেশনের পশ্চিমে, আলতাফনগর স্টেশনের পূর্বে এবং সৈয়দ আহমেদ কলেজ স্টেশনের পূর্বে, কাহালু উপজেলা স্টেশনের পূর্বের রেল ক্রসিং।

বগুড়া শহরের কামারগাড়ীতে বগুড়া রেল স্টেশনের উত্তর পাশে আন্তঃথানা বাস টার্মিনাল নির্মিত হওয়ায় যাত্রীরা অবাধে লাইনের ওপর দিয়ে চলাচল করে থাকেন। এখানে নিরাপত্তা রক্ষায় কোনো ক্রসিং নির্মাণ করা হয়নি। এছাড়া শহরের ১, ২ ও ৩ নম্বর লেভেল ক্রসিংয়ে দুর্ঘটনা লেগেই থাকে। মূল শহরের মধ্যে তিনটি লেভেল ক্রসিংয়ের পাশে বিভিন্ন ধরনের অবৈধ মার্কেট গড়ে ওঠায় লোকজনের যাতায়াত বেড়েছে।

এদিকে রেলপথের ওপর দিয়ে যত্রতত্র নির্মাণ করা হয়েছে চলাচলের রাস্তা। এসব রাস্তার কারণেই বগুড়া জেলার বিভিন্ন স্থানে রেলপথে সৃষ্টি হয়েছে অর্ধশতাধিক লেভেল ক্রসিং। রেলের অনুমোদিত অধিকাংশ ক্রসিংয়ে ব্যারিয়ারসহ গেটম্যান থাকলেও অনুমোদনহীন ক্রসিংগুলোয় নেই নিরাপত্তামূলক ব্যবস্থা। এতে অরক্ষিত লেভেল ক্রসিংগুলোয় প্রায়ই দুর্ঘটনায় হতাহতের ঘটনা ঘটছে।  চলতি বছরের ১ জুন শহরের আকাশতারা এলাকায় লেভেল ক্রসিংয়ে ট্রেনের ধাক্কায় মাইক্রোবাস উলটে রাস্তার পাশে গাছের সঙ্গে আটকে যায়। এতে ঘটনাস্থলেই ১৫ দিন বয়সি এক নবজাতকের মৃত্যু হয়। এ ঘটনায় ঐ শিশুর পিতাও গুরুতর আহত হন। এ লেভেল ক্রসিংয়ে সতর্কবাণীর সাইনবোর্ড থাকলেও ছিল না কোনো গেটম্যান।

বাংলাদেশ রেলওয়ে বগুড়ার সহকারী নির্বাহী প্রকৗশলী মো. সাইদুর রহমান জানান, বিভিন্ন সংস্থা রেললাইনের ওপর দিয়ে রাস্তা করছে, এর মধ্যে এলজিইডির সঙ্গে আন্তঃমন্ত্রণালয় বৈঠকে তাদের রাস্তা চিহ্নিত করা হয়েছে, পর্যায়ক্রমে সব গেট সুরক্ষিত করা হবে। বগুড়া শহরের যেসব স্থানে গেটম্যান নেই বা থাকা জরুরি সে বিষয়ে দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়া হবে।

 

ইত্তেফাক/ইআ