শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি বলেছেন, বাংলাদেশ অসাম্প্রদায়িক গণতন্ত্রের দেশ। এ দেশে কোনো সাম্প্রদায়িক উসকানি সহ্য করা হবে না। পরীক্ষার প্রশ্নপত্রে সাম্প্রদায়িক উসকানির মতো কিছু থাকবে, তা খুবই দুঃখজনক ও একেবারেই গ্রহণযোগ্য নয়।
সোমবার (৬ নভেম্বর) রাজধানীর আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ইনস্টিটিউটে এইচএসসির বাংলা প্রথমপত্রের প্রশ্নে সাম্প্রদায়িক উসকানি নিয়ে এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এসব কথা বলেন।
মন্ত্রী বলেন, আমাদের সুস্পষ্ট নির্দেশিকা দেওয়া থাকে, প্রশ্ন তৈরির ক্ষেত্রে অবশ্যই যেন কোনো ধরনের সাম্প্রদায়িকতার কোনো কিছু না থাকে। খুবই দুঃখজনক, কোনো একজন প্রশ্নকর্তা হয়তো এই প্রশ্নটি করেছেন। যিনি মডারেট করেছেন, তার দৃষ্টিও হয়তো কোনো কারণে এড়িয়ে গেছে। তিনিও হয়ত স্বাভাবিকভাবে বিষয়টি নিয়েছে।
তিনি বলেন, আমরা চিহ্নিত করছি এই প্রশ্নটি কোন সেটার (প্রশ্নপত্র সেটিং করা ব্যক্তি) করেছেন এবং কে মডারেটর করেছেন। আমরা তাদের খুঁজে বের করে সে অনুযায়ী ব্যবস্থা নেব।
শিক্ষামন্ত্রী আরও বলেন, প্রশ্ন সেটিং বা মোডারেটিং এমনভাবে হয়, যিনি প্রশ্ন সেট করে যান তিনি আর সেটি দেখতে পারেন না। যিনি মডারেট করে যান তিনিও আর পুনরায় তা দেখতে পারেন না। একইসঙ্গে মডারেটরের বাইরে ওই প্রশ্নের একটি অক্ষরও কারও দেখার সুযোগ থাকে না। আমাদের একদম সুস্পষ্ট নির্দেশিকা দেওয়া থাকে, কী কী বিষয় মাথায় রেখে এ প্রশ্নগুলো তারা করবেন।
‘প্রমিত বাংলা ব্রেইল নির্দেশিকার প্রয়োজনীয়তা ও আমাদের করণীয়’ শীর্ষক মতবিনিময় সভায় মন্ত্রী বলেন, দৃষ্টি প্রতিবন্ধীদের জন্য জাতীয় পাঠ্যক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ডে একটা ব্রেইল সেন্টার স্থাপনের উদ্যোগ নেওয়া হবে। আমাদের ব্রেইল পদ্ধতিতে অংক ও বিজ্ঞান শিক্ষায় এখনো কিছু সমস্যা রয়ে গেছে। সরকার এ সমস্যা সমাধানের চেষ্টা করবে।
তিনি আরও বলেন, নতুন শিক্ষাক্রম অনুযায়ী নবম ও দশম শ্রেণিতে গ্রুপভিত্তিক বিভাজন থাকবে না। সে ক্ষেত্রে দৃষ্টি প্রতিবন্ধীদের অবশ্যই অংক ও বিজ্ঞান পড়তে হবে।
প্রসঙ্গত, প্রশ্নপত্রে উল্লেখিত সাম্প্রদায়িকতার উসকানির অংশ: নেপাল ও গোপাল দুই ভাই। দীর্ঘদিন জমি নিয়ে বিরোধ তাদের। অনেক বিচার করেও কেউ তাদের বিরোধ মেটাতে পারেনি। কেউ কাউকে ছাড় দিতে নারাজ। এখন জমির ভাগ বণ্টন নিয়ে মামলা চলছে আদালতে। ছোট ভাই নেপাল বড় ভাইকে শায়েস্তা করতে আব্দুল নামে এক মুসলমানের কাছে ভিটের জমির এক অংশ বিক্রি করে। আব্দুল সেখানে বাড়ি বানিয়ে স্থায়ীভাবে বসবাস শুরু করে। কোরবানির ঈদে তিনি নেপালের বাড়ির সামনে গরু কোরবানি দেয়। এ ঘটনায় নেপালের মন ভেঙে যায়। কিছুদিন পর কাউকে কিছু না বলে জমি-জায়গা ফেলে সপরিবারে ভারতে চলে যায়।