শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০
The Daily Ittefaq

ঘরে বাবার লাশ রেখে কাঁদতে কাঁদতে পরীক্ষা দিলো নিলুফা

আপডেট : ০৮ নভেম্বর ২০২২, ১৪:০৪

কক্সবাজারের টেকনাফে বাবার মরদেহ ঘরে রেখে চোখে কাঁদতে কাঁদতে হলে গিয়ে পরীক্ষা দিয়েছে নিলুফা ইয়াছমিন নামের এক শিক্ষার্থী। মঙ্গলবার (৮ নভেম্বর) ভোর ৫টায় নিলুফার বাবা পেঠান আলী (৬০) বাড়িতে মারা যান।

নিলুফা টেকনাফের হ্নীলা রঙ্গিখালীর মঈন উদ্দিন মেমোরিয়াল কলেজ থেকে হ্নীলা বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় কেন্দ্রে বাংলা দ্বিতীয় পত্র বিষয়ে পরীক্ষায় অংশ নেয়। তার বাড়ি রঙ্গিখালী মাদ্রাসাপাড়া এলাকায়।

হ্নীলা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান রাশেদ মাহমুদ আলী বলেন, মঙ্গলবার ভোররাতে নিলুফার বাবা রঙ্গিখালী মাদ্রাসা ক্যাম্পাসে রাস্তায় স্ট্রোক করে আকস্মিকভাবে মারা গেছেন। তিনি রাতে ক্যাম্পাসে সুপারি বাগান দেখভাল করতেন। বাবার মৃত্যুতে নিলুফা ইয়াছমিন মানসিকভাবে ভেঙে পড়ে। সে সকাল থেকেই কাঁদছিল। তাকে সান্তনা দিয়ে সহপাঠী ও স্বজনরা পরীক্ষা দিতে উৎসাহিত করে।

চেয়ারম্যান আরও বলেন, বাবার মরদেহ ঘরে রেখে মেয়েটি সকালে কাঁদতে কাঁদতে পরীক্ষাকেন্দ্রে গেছে। স্বজনরা সাহস দিলেও বাবার আকস্মিক মৃত্যু সহজে মেনে নেওয়া কোমলমতি শিক্ষার্থীটির জন্য কঠিনই ছিলো।

নিলুফার বড় ভাই শাখাওয়াত হোছাইন বলেন, বাবার মৃত্যুর পর নিলুফা পরীক্ষা দিতে অনীহা প্রকাশ করেছিল। যেহেতু বোর্ড পরীক্ষা, তাই তাকে অনেক বুঝিয়ে সাহস ও সান্তনা দিয়ে পরীক্ষাকেন্দ্রে নিয়ে যায়। সে দেড় ঘণ্টা লিখে বাড়িতে চলে আসে।

পরীক্ষাকেন্দ্রে দায়িত্বরত ছিদ্দিক আহমদ ও কলেজের প্রতিনিধি ইব্রাহিম খলিল বলেন, বেলা ১১টায় পরীক্ষায় অংশ নেয় নিলুফা ইয়াছমিন। সে সাড়ে ১২টায় খাতা জমা দিয়ে হল থেকে বের হয়ে যায়। তার বাবার মৃত্যুর সংবাদ জেনে শিক্ষকরাও তাকে মানসিক সাহস জোগাতে সহযোগিতা করেছি।

টেকনাফ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ভারপ্রাপ্ত (ইউএনও) এরফানুল হক চৌধুরী বলেন, এক পরীক্ষার্থীর বাবার মৃত্যুর খবর পেয়েছি। শোকাহত ওই শিক্ষার্থীকে পরীক্ষাকেন্দ্রে মানসিক সাহস জোগাতে হলের দায়িত্বরতদের বলা হয়েছিল।

ইত্তেফাক/এসকে