রাজশাহীর-৩ (পবা-মোহনপুর) আসনের সংসদ সদস্য ও জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আয়েন উদ্দিনের বিরুদ্ধে মোহনপুর থানায় লিখিত অভিযোগ (মামলার আবেদন) করেছেন এক কৃষলীগ নেত্রী। মোহনপুর থানায় দায়ের করা অভিযোগে এমপি ছাড়াও তার ভগ্নিপতি এবং উপজেলা চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি অ্যাডভোকেট আব্দুস সালামসহ ১৫ জনকে অভিযুক্ত করা হয়েছে।
শনিবার (২৭ নভেম্বর) দিবাগত রাতে মোহনপুর উপজেলার ঘাসিগ্রাম ইউনিয়নের সাবেক ইউপি সদস্য ও উপজেলা কৃষকলীগের মহিলা সম্পাদিকা মোসা. শেখ হাবিবা (৩০) থানায় এই অভিযোগ দায়ের করেন।
মোহনপুর থানার ওসি সেলিম বাদশা লিখিত অভিযোগ প্রাপ্তির সত্যতা নিশ্চিত করে জানান, শেখ হাবিবা নামের একজন নারী থানায় লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন। অভিযোগ তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
অভিযোগের (মামলার আবেদন) অপর আসামিরা হলেন, মোহনপুর উপজেলা যুবলীগের সহসভাপতি ও এমপির চাচাতো ভাই একরামুল হক বিজয়, উপজেলা মহিলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ডলি আক্তার, ঘাসিগ্রাম ইউনিয়ন মহিলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ডলি বেগম, এমপির গাড়ির ড্রাইভার সাজ্জাদ হোসেন, উপজেলা সেচ্ছাসেবক লীগের সম্মেলন প্রস্তুতি কমিটির আহ্বায়ক হুমায়ূন কবির, জুয়েল রানা। বাকিদের অজ্ঞাত আসামি করা হয়েছে।
এ বিষয়ে এমপি আয়েন উদ্দিন বলেন, ‘ওই নারী কিছু ব্যক্তির দ্বারা প্রভাবিত হয়ে আমার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করছে। এর অংশ হিসেবে আমি ও আমার পরিবারের সদস্য এবং নেতা-নেত্রীর বিরুদ্ধে অভিযোগ দিয়েছে। আমার বিরুদ্ধে বিভিন্নভাবে অপপ্রচারের অভিযোগে গত ২৪ নভেম্বর আমি ওই নারীর বিরুদ্ধে মোহনপুর থানায় একটি জিডি (সাধারণ ডায়েরি) করেছি।’
শেখ হাবিবা অভিযোগে উল্লেখ করেন, আমি এমপি আয়েন উদ্দিনের বিভিন্ন অনিয়ম গণমাধ্যমে প্রকাশ করি। এর জের ধরে গত ২৩ নভেম্বর দুপুরে রাজনৈতিক কারণে পূর্ব শত্রুতার জের ধরে আসামিরা আমাকে পূর্বপরিকল্পিতভাবে হত্যার উদ্দেশ্যে মোহনপুর উপজেলা চত্বরে ঘিরে ধরেন। এ সময় তারা গালিগালাজ করতে থাকেন এবং এমপি আয়েন উদ্দিন ও আসামি আব্দুস সালাম মারতে হুকুম দিয়ে বলেন-মার (প্রকাশের অযোগ্য) মেরে জীবন শেষ করিয়া দে। তাদের হুকুম পেয়ে আসামি একরামুল হক বিজয় তার হাতে থাকা লোহার হাতুড়ি দিয়ে আমাকে হত্যার উদ্দেশ্যে মাথায় আঘাত করেন। আমি মাটিতে পড়ে গেলে ডলি বেগম আমার বুকে উঠে ওড়না দিয়ে গলা চেপে ধরে হত্যার চেষ্টা করেন। এছাড়া আসামি একরামুল হক বিজয় আমার শ্লীলতাহানি করেন। ডলি বেগম আমার কাছে থাকা ২০ হাজার টাকা ও ডলি আক্তার আমার মোবাইল ফোন এবং গলার এক ভরি স্বর্ণের চেইন চুরি করেন। অজ্ঞাতনামা আসামিসহ অন্যরা আমাকে শারীরিকভাবে নির্যাতন করেন।
এমপি আয়েন উদ্দিন আরও বলেন, ওই দিন উপজেলা সমন্বয় সভা ছিল। ওই সভায় আমি যোগ দেই। সভা চলাকালে ওই নারীর সঙ্গে মহিলা লীগ নেত্রী ডলি বেগমের কথা কাটাকাটি হয়। এক পর্যায়ে ওই নারী ডলি বেগমের ওপর হামলা করেন এবং তাকে মেরে জখম করেন। এ সময় একরামুলসহ অন্যেরা তাদের ছাড়াতে যায়। এ সময় ওই নারী একরামুলকে কামড়ে জখম করেন। এ নিয়ে ডলি বেগম তার বিরুদ্ধে থানায় মামলা করেছেন। সেই মামলা থেকে রক্ষা পেতে আমাদের বিরুদ্ধে মামলার অভিযোগ দিয়েছেন।