শেরপুরের শ্রীবরদীতে ৬৭ বছর বয়সে এসএসসি পরীক্ষা দিয়ে পাস করলেন আবুল কালাম আজাদ। এবার এসএসসি পরীক্ষায় ২.৯৪ পেয়ে উত্তীর্ণ হওয়ায় এলাকায় তাকে নিয়ে চলছে আলোচনা। তিনি প্রমাণ করেছেন শিক্ষার কোনো বয়স নেই। এ ছাড়া তিনি একজন লেখকও বটে। তার লেখা অসংখ্য ছড়া, কবিতা, উপন্যাস ও গল্প রয়েছে । তিনি শ্রীবরদী উপজেলার খড়িয়াকাজীরচর ইউনিয়নের লংগড়পাড়া গ্রামের মৃত আব্দুল রশিদ মণ্ডলের ছেলে। তার এই উদ্যোগকে দৃষ্টান্ত বলে মন্তব্য করেছেন উপজেলা সচেতন মানুষরা।
আবুল কালাম আজাদ ১৯৭৫ সালে এসএসসি পরীক্ষার্থী ছিলেন। কিন্তু পরীক্ষা না দিয়ে চাকরি করতে সৌদি আরবে যান। সেখানে থাকেন দীর্ঘদিন। বাড়ি এসে সাংসারিক কাজের ফাঁকে লেখালেখি শুরু করেন। তার দাম্পত্য জীবনে তিন ছেলে। বড় ছেলে প্রফেসর। মেজো ছেলে কামিল পাস ও ছোট ছেলে প্রকৌশলী। পুত্রবধূরাও শিক্ষিত। তিনি লিখেছেন অসংখ্য, কবিতা, ছড়া, উপন্যাস ও গান। ইতোমধ্যে দেহদাহ ও দেশরত্ন নামে দুটি কবিতার বই প্রকাশ করেছেন। তিনি দীর্ঘদিন ধরে স্বপ্ন দেখছেন শিক্ষিত হবেন। এ কারণে ছেলেদের সহযোগিতায় শুরু করেন পড়ালেখা। এবার তিনি বাংলাদেশ উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে স্থানীয় একটি বিদ্যালয়ের মাধ্যমে এসএসসি পরীক্ষা দেন।
আবুল কালাম আজাদ বলেন, যেখানে যেতাম সেখানেই অনেকে উচ্চশিক্ষার পরিচয় দিতো। তখন নিজেকে খুব ছোট মনে হতো। সেই থেকে আমার ইচ্ছা আমিও পড়ালেখা করবো। এজন্য ছেলেদের সঙ্গে পরামর্শ করে নবম শ্রেণিতে ভর্তি হই। এবার আল্লার রহমতে পাস করেছি।
খড়িয়াকাজীরচর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. দুলাল মিয়া বলেন, তার খবর শুনে আমরাও খুশি। কারণ এ বয়সে তিনি পড়ালেখা করে পাস করেছেন।
উপজেলা একাডেমিক সুপারভাইজার মোশারফ হোসেন বলেন, আবুল কালাম আজাদ দেখিয়ে দিয়েছেন শিক্ষার কোনো বয়স নেই। তিনি শিক্ষা ক্ষেত্রে দৃষ্টান্ত হয়ে থাকবেন। আবুল কালাম আজাদের প্রশংসা ছড়িয়ে পড়ুক চারিদিকে। তাকে দেখে অনুপ্রাণিত হবেন আরও অনেকে।