শনিবার, ১৫ মার্চ ২০২৫, ১ চৈত্র ১৪৩১
The Daily Ittefaq

ঘরের তালা খুললেও ভাগ্যের তালা খুলতে পারেননি মকবুল

আপডেট : ৩০ নভেম্বর ২০২২, ২০:৪৯

মকবুল মণ্ডলের বয়স ৭১ বছর। মানুষের ঘরের তালা খোলার ব্যবস্থা করলেও নিজের ভাগ্যের তালা খুলতে পারেনি তিনি। জেলা শহরের তৃপ্তির মোড়ে এক নম্বর স্টেশন রোডে ডা. মোহাম্মদ আলীর চেম্বারের পাশে বসেই কাজ করেন দীর্ঘ ৩০ বছর। তালা মেরামত ও নতুন চাবি তৈরি করেই কোনো মতে চলছে সংসার।

বয়স্ক ভাতার জন্য কয়েকবার পৌরসভা ও সমাজসেবা অফিসে ন্যাশনাল আইডি জমা নিলেও এখনও তার ভাগ্যে জোটেনি সেই সোনার হরিণ। অফিসের লোকজন বলেছে এখনও বয়স হয়নি। জাতীয় পরিচয়পত্রে দেখা যায়, ১৯৫১ সালের ২৫ সেপ্টেম্বর মকবুল মণ্ডলের জন্ম। আর কত বয়স হলে জুটবে বয়স্ক ভাতা প্রশ্ন মকবুলের? 

এক সময় জমিজমাসহ অনেক কিছু থাকলেও এখন শুধু মাথা গোঁজার তিন শতাংশ জমি ছাড়া আর কিছুই নেই। বয়সের ভারে নুয়ে পড়া মকবুল মণ্ডল এখন আর ভারি কাজ করতে পারে না। না পারেন মানুষের কাছে হাত পাততে। তালা মেরামত ও নতুন চাবি তৈরি করে যা আয় হয় তা দিয়ে চালাতে হচ্ছে সংসার।

তার দুই ছেলে দুই মেয়ে। এক ছেলে সোহেল মেসি। সে গাড়ি চালায়। আবার কখনও টিনের কাজসহ দিনমজুরের কাজ করে। অপর ছেলে সজল ভাড়ায় অটোরিকশা চালায়। স্ত্রী হাছনা বানু প্রায় অসুস্থ থাকে। সীমিত আয়ে সংসার চালাতে হিমশিম খেতে হয়। সেখানে স্ত্রীর চিকিৎসা  অসম্ভব হয়ে ওঠে। 

মকবুল মণ্ডল বলেন, একটি তালা মেরামত করলে বা নতুন চাবি তৈরি করে দিলে মাত্র ২০ টাকা পাওয়া যায়। এতে প্রতিদিন ৫০ কখন ৬০ টাকা পাওয়া যায়। আবার অনেকদিন এক টাকাও হয় না। এ বাজারে কীভাবে চলি?। সরকারের সহায়তা হিসেবে একটি বয়স্ক ভাতার কার্ড পেলে এই বৃদ্ধ বয়সে পরিবার নিয়ে চলতে পারতেন বলেও জানান তিনি। 

ডা. মোহাম্মদ আলী বলেন, আমার চেম্বারের সামনেই দীর্ঘদিন ধরে তালা মেরামতের কাজ করে জীবিকা নির্বাহ করে থাকেন। কোথাও তাদের বসার জায়গা নেই। চেম্বারের সামনে বারান্দায় বসে ঝড় বৃষ্টি মাথায় নিয়ে কাজ করা অনেক কষ্টের বলেও মন্তব্য করেন তিনি।

ইত্তেফাক/জেএ/পিও
 
unib