শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০
The Daily Ittefaq

পাকশীতে আওয়ামীলীগের দু’গ্রুপের গোলাগুলি, আহত ৪ জন

আপডেট : ০৪ ডিসেম্বর ২০২২, ০২:১৯

ঈশ্বরদীর পাকশীতে বালু মহালের আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে গোলাগুলির ঘটনা ঘটেছে। শনিবার (৩ নভেম্বর) সন্ধ্যা সাড়ে পাঁচটার দিকে হার্ডিঞ্জ ব্রিজ ও লালনশাহ সেতুর মাঝামাঝি কফি হাউজের সামনে পুলিশের উপস্থিতিতে এঘটনা ঘটে। এসময় সম্রাট (৩৪), মাসুম (৩৫), সুইট (৩২) এবং মিরাজ (৩০) আহত হয়েছে। এরা যুবলীগের কর্মী বলে জানা গেছে। সন্ধ্যা সাড়ে সাতটার দিকে উপজেলা যুবলীগ শহরে প্রতিবাদ মিছিল বের করে তাদের কর্মী গুলিবিদ্ধ হয়েছে বলে দাবী করেছে।

স্থানীয়রা জানান, উপজেলা আওয়ামীলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক পাকশী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান সাইফুজ্জামান পিন্টুর সাথে ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের নেতাদের বালু ব্যবসা নিয়ে মতবিরোধ চলছিল। চেয়ারম্যান সাইফুজ্জামান পিন্টুর বিআইডাবিওটিএ এর নিকট হতে ক্রয়কৃত বালুর আধিপত্য নিয়ে বিরোধের সূত্রপাত। প্রায় তিন মাস পিন্টুর বালু পরিবহন বন্ধ ছিলো। শনিবার পিন্টুর নেতৃত্বধীন একটি গ্রুপ এবং উপজেলা আওয়ামীলীগের সাংগাঠনিক সম্পাদক জহুরুল ইসলাম মালিথার লোকজন পাশাপাশি খাওয়া-দাওয়ার আয়োজন করে। পিন্টু শনিবার থেকে বালুর স্তুপ থেকে পরিবহণ শুরু করার জন্য খাওয়া-দাওয়ার আয়োজন করে লোকজন জড়ো করে বলে জানা যায়। সন্ধ্যার দিকে ভেকু নামিয়ে বালু পরিবহণের জন্য রাস্তা তৈরি করতে গেলে হঠাৎ করেই উভয়পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ শুরু হয়। এসময় পাকশী পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ শহিদুল ইসলামসহ ফাঁড়ির পুলিশ উপস্থিত ছিলেন। হামলায় ১টি জীপ ও ৫টি মোটর সাইকেল ভাংচুর ছাড়াও ৪ জন যুবলীগ কর্মী আহত হয়।

পাকশী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান সাইফুজ্জামান পিন্টু জানান, পদ্মা নদী ড্রেজিং করে উত্তোলিত বালু তিনি বিআইডাব্লিওটিএ এর নিকট হতে টেন্ডারে ক্রয় করেন। স্থানীয় প্রভাবশালী একটি মহল প্রায় তিন মাস ধরে তার কেনা বালু বিক্রি ও পরিবহনে বাধাগ্রস্ত করে। পুলিশ এবং নেতাদের সাথে কথা বলে শনিবার থেকে এই বালু বিক্রি শুরু করার কথা ছিলো। কিন্তু হঠাৎ করেই অপরপক্ষ হামলা চালায়।

এবিষয়ে জহুরুল ইসলাম মালিথা বলেন, বিআইডাব্লিউটিএ এর নিকট হতে পিন্টুর কেনা বালু অনেক আগেই তুলে বিক্রি করেছে। যে বালু ছিলো সেগুলো পাকশী ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের। সেগুলো পিন্টু ভোগ করার জন্য লোকজন জমায়েত করে।  ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সভাপতি হবিবুল ইসলাম হব্বুল, সাধারণ সম্পাদক সাইফুল ইসলাম বাবু মন্ডল, উপজেলা কমিটির সহ-সভাপতি মোহাম্মদ রশীদুল্লাহসহ অনেকেই ছিলেন। আমিসহ নেতারা চলে আসার পর পিন্টুর নেতৃত্বাধীন উপজেলা যুবলীগের নেতারা হামলা চালায় বলে তিনি অভিযোগ করেন। 

পাকশী ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সভাপতি হবিবুল ইসলাম হব্বুল জানান, থানার ওসি আসার পর দুপুরের দিকে আমাদের ডেকে নিয়ে যাওয়া হয়। তখন দেখি দু’গ্রুপ আলাদা-আলাদা রান্না করছে। এসময় ওসি ও আমরা উভয়কেই বলি স্থানীয় এমপি বালুর বিষয়ে সুরাহা করবেন। কেউ যেন গোলযোগে জড়িয়ে না পড়ে এই নির্দেশনা দিয়ে আমরা চলে আসি।  
    
ঈশ্বরদী থানার অফিসার ইনচার্জ অরবিন্দ সরকার বলেন, বালুর আধিপত্য নিয়ে চেয়ারম্যান পিন্টুর সাথে ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের নেতাদের বিরোধ ছিলো। সবার সাথে আলোচনা হয়ে বিষয়টির সুরাহা হয়। এরপরও কেন যে মারামারি ঘটনা ঘটলো বুঝতে পারছি না।  জীপ ও মোটরসাইকেল ভাংচুর হয়েছে বলে জানান তিনি।

এঘটনার প্রতিবাদ জানিয়ে সন্ধ্যা সাড়ে সাতটার দিকে উপজেলা যুবলীগ শহরে একটি বিক্ষোভ মিছিল বের করে। মিছিল শেষে রেলগেট ট্রাফিক মোড়ে পথসভায় যুবলীগ সভাপতি শিরহান শরীফ তমাল যুবলীগ কর্মীদের গুলিবিদ্ধ হওয়ার ঘটনার প্রতিবাদ জানান।

ইত্তেফাক/ইআ