শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০
The Daily Ittefaq

অল-ইউরোপিয়ান নক-আউটে সুইজারল্যান্ডের সামনে পর্তুগাল

আপডেট : ০৬ ডিসেম্বর ২০২২, ১৫:৪৫

বিশ্বকাপে প্রথম দুই ম্যাচ জিতেই নক-আউট নিশ্চিত করে ফেলেছিলো পর্তুগাল। শেষ ম্যাচে দক্ষিণ কোরিয়ার কাছে ২-১ গোলের হারে বড় এক ধাক্কা খায় ক্রিশ্চিয়ানো রোনালদোর পর্তুগাল। কোরিয়ার কাছে হারের সেই ধাক্কা সামলে আজ নক-আউটের লড়াইয়ে ইউরোপের আরেক দল সুইজারল্যান্ডের মুখোমুখি হচ্ছে পর্তুগিজরা।

বাংলাদেশ সময় আজ দিবাগত রাত ১টায় নক-আউট পর্বের শেষ ম্যাচে লুসাইল আইকনিক স্টেডিয়ামে সুইশদের বিপক্ষে মাঠে নামবে পর্তুগাল। এবারের বিশ্বকাপে নক-আউট পর্বে এখন পর্যন্ত একটি মাত্র অল-ইউরোপিয়ান ম্যাচ অনুষ্ঠিত হয়েছে। দ্বিতীয় অল-ইউরোপিয়ান ম্যাচে আজ মুখোমুখি পর্তুগাল ও সুইজারল্যান্ড। উ

কাতার বিশ্বকাপের শুরুটা দারুণভাবে হওয়ায় নক-আউট পর্বে যেতে পর্তুগালের সামনে শেষ ম্যাচে মাত্র এক পয়েন্টের প্রয়োজন ছিল শীর্ষস্থান দখলের। প্রথম দুই ম্যাচে জয়ী হওয়ায় এক ম্যাচ হাতে রেখে পর্তুগালের পরের রাউন্ড নিশ্চিত হয়ে গিয়েছিল। ফার্নান্দো সান্তোসের দল দক্ষিণ কোরিয়ার বিরুদ্ধে পাঁচ মিনিটেই রিকায়ো হোর্টার গোলে এগিয়ে গিয়ে নিজেদের আধিপত্য ভালোই প্রমাণ করেছিল। কিন্তু ম্যাচের শেষের চিত্র ছিল ভিন্ন। বিরতির আগে এক গোল শোধ দিয়ে সমতায় ফেরার পর ৯১ মিনিটে দ্বিতীয় গোল করে নাটকীয় ভাবে জয় ছিনিয়ে নেয় উজ্জীবিত দক্ষিণ কোরিয়া। এই পরাজয় সত্ত্বেও ঘানার বিরুদ্ধে দিনের আরেক ম্যাচে উরুগুয়ে জয়ী হওয়ায় পর্তুগালের গ্রুপের শীর্ষস্থান নিশ্চিত হয়। 

২০০৬ সালের পর জার্মানি বিশ্বকাপে চতুর্থ হওয়া পর্তুগাল এবার ক্রিশ্চিয়ানো রোনলদোর জন্য অন্তত শেষ চেষ্টাটা করতে চায়। যদিও রোনালদোকে ছাপিয়ে এবার পর্তুগালের ব্রুনো ফার্নান্দেজকে নিয়ে বেশি আলোচনা হচ্ছে। উরুগুয়ের বিরুদ্ধে ২-০ গোলের জয়ের ম্যাচটিতেই দুটি গোলই করেছিলেন ফার্নান্দেস। ইউরো ২০১৬ বিজয়ী দলটি এবার বিশ্বকাপে নতুন কিছু করে দেখাতে চায়।

নক আউট পর্বে পরিচিত প্রতিদ্বন্দ্বীর বিরুদ্ধে কোন চাপ নিয়ে খেলতে চায়না সান্তোসের দল। সর্বশেষ এ বছরের শুরুতে উয়েফা ন্যাশনস লিগে সুইসদের মুখোমুখি হয়েছিলো পর্তুগাল। লিসবনের ম্যাচে দাপটের সঙ্গেই ৪-০ গোলে জয়ীও হয়েছিল পর্তুগিজরা। তবে জেনেভাতে ফিরতি ম্যাচে সুইসরা জয় পায় ১-০ গোলে। 

পর্তুগালকে হারানোর পর স্পেন ও চেক প্রজাতন্ত্রকেও হারিয়েছে সুইশরা। এরপর বিশ্বকাপে গ্রুপ পর্বে তিন ম্যাচের দুটিতেই জয় তুলে নিয়েছে সুইজারল্যান্ড। ক্যামেরুনের  বিপক্ষে ১-০ গোলের জয় দিয়ে বিশ্বকাপ শুরু করা  সুইজারল্যান্ড এরপর ব্রাজিলের কাছে একই ব্যবধানে হারে। শেষ ম্যাচে এক পয়েন্ট হলেই সুইসদের পরের রাউন্ড নিশ্চিত হয়ে যেত। কিন্তু শেষ ম্যাচে ব্রাজিলকে হারিয়ে দিয়ে ক্যামেরুন পুরো গ্রুপের চেহারা পাল্টে দেয়। সার্বিয়ার বিরুদ্ধে তাই শেষ ম্যাচে ৩-২ গোলের কঠিন লড়াইয়ের পর জয় নিশ্চিত হলে সুইসরা নক আউটের টিকিট পায়।

এর আগে বিশ্বকাপের কোন আসরে সুইসরা তিন ম্যাচে জয়ী হতে পারেনি। সাতবারের প্রচেষ্টায় কখনই কোয়ার্টার ফাইনালে পৌঁছাতে পারেনি তারা। কিন্তু এবারের কোচ মুরাত ইয়াকিনের দলটি নিয়ে অনেকেই আরো কিছুদুর প্রত্যাশা করছেন।

১৯৫৪ সালে ঘরের মাঠের বিশ্বকাপে সুইজারল্যান্ড শেষ আটে পৌঁছেছিলো। কিন্তু সম্প্রতি বেশ কিছু সাফল্য তাদের নতুন করে স্বপ্ন দেখাচ্ছে।

আগেই নক আউট নিশ্চিত হওয়ায় পর্তুগাল সান্দোস শেষ ম্যাচে ছয়টি পরিবর্তন করেছিলেন। কিন্তু আজকের ম্যাচে আবারও মূল দলের সকলকে ফিরিয়ে আনা হবে বলেই জানিয়েছেন পর্তুগিজ কোচ। বেনফিকার ১৯ বছর বয়সী  ডিফেন্ডার এন্টোনিও সিলভার দক্ষিণ কোরিয়ার বিপক্ষে বিশ্বকাপে অভিষেক হয়েছে। তার থেকে ২০ বছরের বড় পেপের সঙ্গে তিনি রক্ষণভাগ সামলানোর দায়িত্বে ছিলেন সিলভা। সবচেয়ে কম বয়সী পর্তুগিজ খেলোয়াড় হিসেবে সিলভার বিশ্বকাপে খেলার রেকর্ড হলো। চার জনের রক্ষণভাগে রুবেন ডিয়াস ফিরছেন, সাথে ডিয়োগো ডালট তো থাকছেনই। 

এদিকে, অভিজ্ঞ গোলরক্ষক ইয়ান সোমারের পুনরায় মূল একাদশে ফেরার আশা করছে সুইজারল্যান্ড। অসুস্থতার কারণে শেষ ম্যাচটি তিনি খেলতে পারেননি। সুইসদের জার্সি গায়ে ৭৬ ম্যাচ খেলা সোমারের পরিবর্তে আগের ম্যাচে খেলেছেন বরুসিয়া ডর্টমুন্ডের গ্রিগর কোবেল। অপরিবর্তিত দল নিয়েই সুইসদের মাঠে নামার সম্ভাবনা বেশী। মধ্যমাঠে যথারীতি থাকবেন গ্রানিত ঝাকা ও রেমো ফ্রুলার। আক্রমণভাগে থাকবেন ব্রীল এম্বোলো। রুবেন ভারগাস ও জের্দান শাকিরি থাকবেন দুই উইংয়ে।

ইত্তেফাক/এসএস