বৃহস্পতিবার, ০৮ জুন ২০২৩, ২৫ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩০
দৈনিক ইত্তেফাক

ঠিকাদারের গাফিলতি: চরম দুর্ভোগে ৩ উপজেলার মানুষ

আপডেট : ০৮ ডিসেম্বর ২০২২, ১৭:৩০

এমপির নির্দেশের পরও ঠিকাদারের গাফিলতিতে টাঙ্গাইলের মির্জাপুরের বহুরিয়া ইউনিয়নের উত্তর গেরামারা খালের উপর সেতুর কাজ শুরু হয়নি। ফলে যাতায়াতে চরম দুর্ভোগে পড়েছেন ৩ উপজেলার হাজারো মানুষ। 

বুধবার (৭ ডিসেম্বর) ভূমি মন্ত্রণালয়সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য খান আহমেদ শুভ এমপি এলাকা পরিদর্শন করেছেন। এ সময় উপজেলা প্রকৌশলী মো. আরিফুর রহমান, স্থানীয় চেয়ারম্যান মো. আবু সাইদ মিয়া ছাদু, সাবেক চেয়ারম্যান আবুল কাশেম খোকন, এমপির একান্ত ব্যক্তিগত সহকারী মীর আসিফ অনিক, উপজেলা আওয়ামী লীগের সংগঠনিক সম্পাদক আমিনুর রহমান আকন্দ উপস্থিত ছিলেন। 

এলাকাবাসীর চলাচলের দুর্ভোগ দেখে এমপি দ্রুত সময়ের মধ্যে খালের উপর সেতু নির্মাণের কাজ শুরু করার জন্য উপজেলা প্রকৌশলী ও ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানকে নির্দেশনা দিয়েছেন। 

উপজেলা প্রকৌশল অফিস ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে বলেছেন, গেরামারা গ্রামের খালের উপর ৪০ মিটার একটি ব্রিজ বা সেতু নির্মাণের জন্য প্রায় ৪ কোটি টাকার দরপত্র আবহান করা হয়েছিলো। একটি ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান কাজ পেয়েছেন। আশা করা হচ্ছে অল্প দিনের মধ্য্যে কাজ শুরু করে হবে।

বৃহস্পতিবার (৮ ডিসেম্বর) দেওহাটা-গেরামারা-ধামরাই রোডে সরেজমিন দেখা গেছে যোগাযোগের ক্ষেত্রে এলাকাবাসীর দুর্ভোগের চিত্র। ওই খালের উপর সেতু নির্মাণ না হওয়ায় কৃষিনির্ভর এলাকাবাসী উৎপাদিত ফসলের ন্যায্য মূল্য থেকেও বঞ্চিত হচ্ছে দীর্ঘদিন। 

গেরামারা সবুজ সেনা উচ্চ বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি ও নিউটোন গ্রুপের চেয়ারম্যান শিল্পপতি মো. রেজাউল করিম বাবুল ও হংকং শাখার আওয়ামী লীগের সভাপতি এবং মির্জাপুর উপজেলা আওয়ামী লীগের সহ সভাপতি শিল্পপতি আবুল কালাম আজাদ লিটন জানান, রাজধানী ঢাকা ও টাঙ্গাইল জেলা সদরের সঙ্গে যোগাযোগের সহজ রাস্তা হচ্ছে দেওহাটা-গেরামারা-ধামরাই রোড। গুরুত্বপূর্ণ এই সড়কের আশেপাশে বহু শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, ইউনিয়ন পরিষদ, স্বাস্থ্য উপকেন্দ্র, কমিউনিটি ক্লিনিক, হাট বাজারসহ বিভিন্ন স্থাপনা রয়েছে। মির্জাপুর, ধামরাই ও সাটুরিয়া উপজেলার হাজার হাজার লোকজন এই রাস্তা দিয়ে চলাচল করে আসছে। মির্জাপুর উপজেলার বহুরিয়া ইউনিয়নের উত্তর গেরামারা গ্রামের খালের উপর একটি সেতু নির্মাণের দাবি এলাকাবাসীর দীর্ঘদিনের। স্বাধীনতার ৫০ বছরেও সেতু নির্মাণ না হওয়ায় তিন উপজেলাবাসী সরাসরি যোগাযোগ থেকে বিচ্ছিন্ন। এলাকাবাসীর চাঁদার টাকা নড়বড়ে বাঁশের সাঁকো দিয়ে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করতে হচ্ছে। একটি সেতু বা ব্রিজ নির্মাণের জন্য এমপি, উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও এলজিইডির কর্মকর্তাদের সঙ্গে যোগাযোগ করে যাচ্ছেন।

এলাকাবাসীর পক্ষে সাবেক ছাত্রনেতা মো. মামুনুর রশিদ ও সুজন মিয়া দ্রুত সময়ের মধ্যে সেখানে একটি সেতু বা ব্রিজ নির্মাণের জন্য জোর দাবি জানিয়েছেন।

ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান জয়েন্টভেঞ্চার এন্টার প্রাইজ (জেএনপি) কর্মকর্তা সোহেল আহমেদ বলেন, নির্মাণ সামগ্রীর দাম দফায় দফায় বৃদ্ধি এবং দীর্ঘস্থায়ী বন্যার পানির কারণে সেতু বা ব্রিজ নির্মাণে বিলম্ব হচ্ছে। আশা করা হচ্ছে কিছু কিছুর মধ্যে কাজ শুরু করা যাবে।

মির্জাপুর উপজেলা স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর (এলজিইডি) প্রকৌশলী মো. আরিফুর রহমান বলেন, এলাকাবাসীর দাবির প্রেক্ষিতে প্রশাসনের পক্ষ থেকে উত্তর গেরামারা খালের উপর নির্মিত বাঁশের সাঁকো পরিদর্শন করা হয়েছে। প্রায় চার কোটি টাকা ব্যয়ে ব্রিজ বা সেতু নির্মাণের প্রকল্প তৈরি করা হয়েছে। ঠিকাদার কাজ পেয়েছেন। আশা করা হচ্ছে ব্রিজ নির্মাণ দ্রুত শুরু হবে।

ইত্তেফাক/পিও