বৃহস্পতিবার, ২৮ সেপ্টেম্বর ২০২৩, ১৩ আশ্বিন ১৪৩০
দৈনিক ইত্তেফাক

বিএনপি না থাকলেও সংসদে থেকে যাচ্ছেন ‘ধানের শীষ’ ও ‘জাতীয় ঐক্যফ্রণ্ট’-এর এমপি

আপডেট : ১৩ ডিসেম্বর ২০২২, ০৭:০৩

বিএনপি না থাকলেও চলতি একাদশ জাতীয় সংসদে থেকে যাচ্ছেন দলটির নির্বাচনি প্রতীক ‘ধানের শীষ’-এ মৌলভীবাজার-২ আসনে নির্বাচন করে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হওয়া সুলতান মোহাম্মদ মনসুর। একসময় যিনি ছিলেন ডাকসুর ভিপি ও আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক। একইসঙ্গে সংসদে থাকছেন একাদশ সংসদ নির্বাচনের সময় বিএনপির নেতৃত্বে গড়ে ওঠা (বর্তমানে বিলুপ্ত) ‘জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট’-এর সমর্থনে সিলেট-২ আসন থেকে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হওয়া মোকাব্বির খানও।

সুলতান মনসুর ও মোকাব্বির দু’জনই ২০১৮ সালের ৩০ ডিসেম্বরের নির্বাচনে ড. কামাল হোসেনের গণফোরামের মনোনীত প্রার্থী হিসেবে এবং জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের সমর্থনে এমপি নির্বাচিত হন। অবশ্য, মোকাব্বির খান নির্বাচন করেছিলেন গণফোরামের নির্বাচনি প্রতীক ‘উদীয়মান সূর্য’ নিয়ে।

২০১৮ সালের ৩০ ডিসেম্বরের নির্বাচনে অংশ নিয়ে মাত্র ছয়টি আসনে জয় পায় বিএনপি। আর গণফোরামের দুটি (সুলতান মনসুর ও মোকাব্বির) মিলিয়ে ঐক্যফ্রন্ট পায় মোট আটটি আসন। নানা অনিয়মের অভিযোগে নির্বাচনের ফলাফল প্রত্যাখ্যান করেছিল বিএনপিসহ জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট। তখন বিএনপি ও ঐক্যফ্রন্টের পক্ষ থেকে প্রথমে বলা হয়েছিল- নির্বাচিত আটজন শপথ নেবেন না। এনিয়ে নানা নাটকীয়তাও হয়। দলীয় সিদ্ধান্ত উপেক্ষা করে ২০১৯ সালের ৭ মার্চ এমপি হিসেবে শপথ নেন সুলতান মনসুর, আর একই বছরের ২ এপ্রিল শপথ নেন মোকাব্বির খান। শপথ নেওয়ায় গণফোরাম থেকে বহিষ্কারও হয়েছিলেন সুলতান মনসুর।

শপথ নেওয়া না নেওয়া নিয়ে নাটকীয়তা হয় বিএনপিতেও। দলটি থেকে নির্বাচিত  জাহিদুর রহমান (ঠাকুরগাঁও-৩) দলীয় সিদ্ধান্ত উপেক্ষা করে আগেই শপথ নিয়ে নেন। অবশ্য দলীয় সিদ্ধান্তে পরে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর ছাড়া বাকি চারজনও এমপি হিসেবে শপথ নিয়েছিলেন। মির্জা ফখরুল শপথ না নেওয়ায় তার আসনটি (বগুড়া-৬) শূন্য হলে সেখানে উপ-নির্বাচনে জয়ী হন বিএনপির জিএম সিরাজ। সংরক্ষিত আসনের ব্যারিস্টার রুমিন ফারহানাসহ বিএনপির ছয়জন রবিবার সংসদ সদস্য পদ থেকে পদত্যাগ করেছেন। আর (চাঁপাইনবাবগঞ্জ-৩) আসন থেকে নির্বাচিত বিএনপির অপর এমপি হারুনুর রশীদ বর্তমানে বিদেশে, তিনি স্পিকারের কাছে পদত্যাগপত্র পাঠিয়েছেন ই-মেইলে। সই স্ক্যান করে বসানোর কারণে হারুনের পদত্যাগপত্র গৃহীত হয়নি। জানা গেছে, আগামী সপ্তাহে দেশে ফিরে তিনি নতুন করে পদত্যাগপত্র দেবেন। হারুন পদত্যাগ করলে বর্তমান সংসদে বিএনপি দলীয় আর কোনো এমপি থাকছেন না।

জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট গঠিত হওয়ার পর জোটের শীর্ষ নীতিনির্ধারণী ফোরাম স্টিয়ারিং কমিটিরও সদস্য ছিলেন সুলতান মনসুর। নির্বাচনের আগে তিনি গণফোরামের প্রাথমিক সদস্যপদ গ্রহণ করে দল মনোনীত প্রার্থী হিসেবে ঐক্যফ্রন্টের সমর্থন পান এবং বিএনপির ‘ধানের শীষ’ প্রতীকে নির্বাচন করেন। যদিও সুলতান মনসুর সেসময় বলেছিলেন, আওয়ামী লীগ ছাড়ার পর তিনি অন্য কোনো দলে যোগ দেননি। কিন্তু গণফোরামের পক্ষ থেকে তার প্রাথমিক সদস্যপদ গ্রহণের আবেদন সরবরাহ করা হয়েছিল গণমাধ্যমের কাছে। অন্যদিকে, প্রাথমিকভাবে ঐক্যফ্রন্টের মনোনয়ন না পেলেও শেষ মুহূর্তে সিলেট-২ আসনে বিএনপি মনোনীত প্রার্থীর প্রার্থিতা বাতিল হলে ফ্রন্টের সমর্থন পেয়েছিলেন মোকাব্বির।

 

ইত্তেফাক/ইআ