শুক্রবার, ২৯ সেপ্টেম্বর ২০২৩, ১৪ আশ্বিন ১৪৩০
দৈনিক ইত্তেফাক

ইউক্রেনের জন্য আরও সহায়তার লক্ষ্যে প্যারিসে সম্মেলন

আপডেট : ১৩ ডিসেম্বর ২০২২, ১৫:৫৯

যুদ্ধ বিধ্বস্ত ইউক্রেনের বেসামরিক অবকাঠামো চালু রাখতে অবিলম্বে সহায়তার সমন্বয় করতে প্যারিসে এক সম্মেলন অনুষ্ঠিত হচ্ছে। ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট জেলেনস্কি গ্যাস ও অস্ত্রের অনুরোধ করেছেন।

একদিকে রাশিয়ার লাগাতার হামলার কারণে জ্বালানি অবকাঠামোর বেহাল অবস্থা, অন্যদিকে শীতের থাবা ইউক্রেনের মানুষের জীবন দূর্বিসহ করে তুলেছে। তা সত্ত্বেও পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে সে দেশের প্রেসিডেন্ট ভলোদোমির জেলেনস্কি বিদেশ থেকে বাড়তি গ্যাস ও অস্ত্র সরবরাহের ডাক দিয়েছেন। 

সোমবার (১২ ডিসেম্বর) জি-সেভেন গোষ্ঠীর শীর্ষ নেতাদের সঙ্গে ভিডিও কনফারেন্সে তিনি জানান, চলতি শীতকালে জ্বালানির ঘাটতি মেটাতে ইউক্রেনের বাড়তি প্রায় ২০০ কোটি কিউবিক মিটার গ্যাসের প্রয়োজন হবে। সেইসঙ্গে রুশ বাহিনীর মোকাবিলা করতে তিনি আধুনিক ট্যাংক, রকেট আর্টিলারি ও আরও দূরপাল্লার ক্ষেপণাস্ত্র পাঠানোর অনুরোধ জানিয়েছেন।

ইউক্রেনের উপর লাগাতার হামলা চালিয়ে রাশিয়ার সেনাবাহিনীর গোলাবারুদ ফুরিয়ে আসছে বলে আমেরিকা ও ব্রিটেনের গোয়েন্দা সংস্থা মনে করছে। ফলে সে দেশ পুরানো ও কম নির্ভরযোগ্য গোলাবারুদ ব্যবহার করতে বাধ্য হচ্ছে। 

তবে জেলেনস্কি মনে করেন, অভাব সত্ত্বেও বর্তমানে আর্টিলারি ও ক্ষেপণাস্ত্রের ক্ষেত্রে রাশিয়ার বাড়তি সুবিধা রয়েছে। জি-সেভেন নেতাদের তিনি জানান, দখলদারী বাহিনীর সেই ক্ষমতার ভিত্তিতেই ক্রেমলিন দাম্ভিক মনোভাব দেখিয়ে চলেছে।

রাশিয়ার হামলার ফলে ইউক্রেনের জ্বালানি অবকাঠামোর মারাত্মক ক্ষতির মাত্রা ধীরে ধীরে আরও স্পষ্ট হয়ে উঠছে। সরকারি সূত্র অনুযায়ী, জরুরি জ্বালানি অবকাঠামোর প্রায় ৪০ শতাংশ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। উৎপাদন কেন্দ্রের পাশাপাশি হাইভোল্টেজ পাওয়ার লাইনেরও ক্ষতি হয়েছে। স্বাভাবিকভাবে তেল ও গ্যাস সরবরাহও সব ক্ষেত্রে সম্ভব হচ্ছে না। 

জেলেনস্কি জানান, এমন পরিস্থিতিতে ঘাটতি মেটাতে বাড়তি গ্যাস ব্যবহার করতে হচ্ছে। মঙ্গলবার (১৩ ডিসেম্বর) প্যারিসে ইউক্রেনের যুদ্ধ পরবর্তী পুনর্গঠন সংক্রান্ত এক সম্মেলনে সে দেশের জন্য আরও সহায়তার বিষয়ে আলোচনা হচ্ছে। প্রায় ৭০টি রাষ্ট্র, কোম্পানি ও সহায়তা সংগঠন সেই সম্মেলনে ইউক্রেনের বেসামরিক অবকাঠামো চালু রাখতে অবিলম্বে সহায়তার পথ খোঁজা হচ্ছে।

জ্বালানি, পরিবহণ, কৃষি, পানি সরবরাহ ও স্বাস্থ্য পরিষেবা সংক্রান্ত সহায়তার ক্ষেত্রে সমন্বয় করতে চায় দাতা দেশ ও সংগঠন। ইউরোপীয় ইউনিয়নও রাষ্ট্রজোট হিসেবে সেই সম্মেলনে অংশ নিচ্ছে।

জি-সেভেন নেতারাও ইউক্রেনের জন্য আর্থিক সহায়তার মধ্যে সমন্বয় করতে এক সাধারণ প্ল্যাটফর্ম গড়ে তুলতে ঐকমত্যে পৌঁছেছেন। জেলেনস্কি সেই সঙ্গে এক বিশেষ শীর্ষ সম্মেলন আয়োজনের প্রস্তাব দিয়েছেন। 

'গ্লোবাল পিস ফর্মুলা সামিট' নামের সেই সম্মেলনে তিনি ইউক্রেনের নিরাপত্তা ও ভৌগোলিক অখণ্ডতা হাসিলের লক্ষ্যে ফর্মুলা বাস্তবায়ন নিয়ে আলোচনা চাইছেন। জি-সেভেন ও অন্যান্য বিবেকবান দেশগুলোর নেতাদের নেতৃত্ব দেখানোর আহ্বান জানিয়েছেন তিনি। 

জেলেনস্কি রাশিয়ার উদ্দেশ্যেও কূটনৈতিক সমাধান সূত্রের লক্ষ্যে স্পষ্ট পদক্ষেপের আহ্বান জানান। তিনি খ্রিস্ট মাসের আগেই দখলদারি শক্তি হিসেবে রাশিয়াকে ইউক্রেনের ভূখণ্ড ত্যাগ করার ডাক দিয়েছেন।

ইত্তেফাক/ডিএস